কন্যাশ্রী ক্লাবগুলিকে সক্রিয় করে তোলার শপথ। বালুরঘাটে। নিজস্ব চিত্র
স্কুলছুট নাবালিকাদের বিয়ে ঠেকানো যায়নি। তার জেরে, দক্ষিণ দিনাজপুরে অপরিণত বয়সে গর্ভধারণ করা মহিলার সংখ্যা দুই বছরে পাঁচ হাজার ছাড়িয়েছে। এমন তথ্য সামনে আসতেই টনক নড়েছে প্রশাসনের। করোনা ও পরবর্তী সময়ে ২০২০ থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত এমন সমীক্ষায় উঠে এসেছে আরও তথ্য। বাল্যবিবাহ ঠেকাতে তাই কোমর বেঁধে নামছে প্রশাসন। প্রাথমিক ভাবে ‘কন্যাশ্রী ক্লাব’গুলির নিষ্ক্রিয় হয়ে পড়ার ঘটনাও জানা গিয়েছে। জেলাতে তৈরি হচ্ছে ‘প্রত্যয়ী’ মোবাইল অ্যাপও।
পরিচর্যার অভাবে দক্ষিণ দিনাজপুরে ‘কন্যাশ্রী ক্লাব’গুলি ধীরে ধীরে মুখ থুবড়ে পড়তে শুরু করেছে, এমনই ধারণা জেলা প্রশাসনের আধিকারিকদের। তাঁদের বক্তব্য, জেলার বিভিন্ন স্কুলে মেয়েদের এই ক্লাব ফের চাঙ্গা করতে হবে। স্কুলছুটের পরে, বাল্যবিবাহের বিরুদ্ধে লড়াটা জরুরি। তা না হলে, এই সামাজিক রোগ বে বাড়তেই থাকবে। তবে এই প্রথম নয়, জাতীয় পরিবার স্বাস্থ্য সমীক্ষায় এর আগেও এই রোগ ধরা পড়েছিল জেলায়।
মঙ্গলবার জেলায় এক সচেতনতা শিবিরে ডাকা হয় তিনটি ব্লকের ‘কন্যাশ্রী ক্লাব’-এর মেয়েদের। জেলাশাসক বিজিন কৃষ্ণও ছিলেন সেখানে। তাঁর কথায়, ‘‘জেলা প্রশাসন তৈরি। কিন্তু নাবালিকা বিয়ের খবর সে ভাবে সামনে আসছে না। কন্যাশ্রী ক্লাবগুলির মাধ্যমে এ ব্যাপারে চাইল্ডলাইনের নম্বরে ফোনও আসছে না। পুলিশ বা প্রশাসনের কাছে যতটুকু খবর আসছে, তেমনই পদক্ষেপ করতে হচ্ছে। অপরিণত গর্ভধারণের সংখ্যা দু’বছরে যা বেড়েছে, তার চেয়ে স্কুলছুটের হার আরও বেশি।’’ করোনার সময় দীর্ঘদিন স্কুল বন্ধ থাকা যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হওয়ার বড় একটা কারণ বলে মনে করছে প্রশাসন।
জেলা প্রশাসনের আর এক আধিকারিক জানান, পাঁচ হাজার অপরিণত গর্ভধারণ হয়ে থাকলে স্কুলছুট হয়ে বাল্যবিবাহের হার তার প্রায় দ্বিগুণ। তবে তার জন্য ব্যবস্থা নেওয়ার শুরু করেছেন আধিকারিকেরা। তাঁরা জানান, ওই দু’টি সমস্যা ঠেকাতে একটি ‘অ্যাপ’ তৈরির চেষ্টা চলছে। সেটা চালু হলে পড়ুয়া, স্কুল ছুট এবং বাল্য বিবাহের তথ্য মিলবে। বালুরঘাটের নালন্দা বিদ্যাপীঠের কন্যাশ্রীর ভারপ্রাপ্ত শিক্ষিকা স্বাতী সরকার অবশ্য বলেন, ‘‘আমাদের কন্যাশ্রী ক্লাব বেশ সক্রিয়। ১৬ জন ছাত্রী রয়েছে। তারা নিয়মিত এ সংক্রান্ত কাজকর্মের মধ্যেই থাকে।’’