গনিকে সামনে রেখেই মমতাকে তোপ অধীরের

মালদহের মাটিতে সেই গনি খানকে সামনে রেখেই তৃণমূলের বিরুদ্ধে লড়াই তীব্র করল কংগ্রেস। মাত্র কয়েক দিন আগেই তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় গনি খানকে সামনে রেখেই মালদহতেই বলে গিয়েছিলেন, ‘‘বরকতদা থাকলে কিছুতেই কংগ্রেসকে সিপিএমের সঙ্গে জোট করতে দিতেন না।’’ কংগ্রেস বিশ্বাসভঙ্গ করেছেন বলেও মমতা দাবি করেছিলেন।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

চাঁচল শেষ আপডেট: ০৯ এপ্রিল ২০১৬ ০২:৩৭
Share:

অধীরকে অভ্যর্থনা মৌসমের। ছবি: বাপি মজুমদার।

মালদহের মাটিতে সেই গনি খানকে সামনে রেখেই তৃণমূলের বিরুদ্ধে লড়াই তীব্র করল কংগ্রেস। মাত্র কয়েক দিন আগেই তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় গনি খানকে সামনে রেখেই মালদহতেই বলে গিয়েছিলেন, ‘‘বরকতদা থাকলে কিছুতেই কংগ্রেসকে সিপিএমের সঙ্গে জোট করতে দিতেন না।’’ কংগ্রেস বিশ্বাসভঙ্গ করেছেন বলেও মমতা দাবি করেছিলেন। এ দিন অধীর তারই জবাবে বললেন, ‘‘বরকতদা থাকলে কী দেখতেন? মুখ্যমন্ত্রী মা, মাটি, মানুষের বদলে চোর-বাটপারদের নেত্রী হয়েছেন। তিনি নেত্রী হয়েছেন আলিবাবা চল্লিশ চোরের।’’

Advertisement

শুক্রবার মালদহের মালতীপুরে নির্বাচনী জনসভায় অধীরবাবু দাবি করেন, মালদহে আসলে গনি খানের নাম করতেই হবে। কিন্তু সারদা থেকে নারদের ধাক্কায় কুপোকাত হয়ে মুখ্যমন্ত্রী গনি খানের নাম করে যে ভাবে ভোট চাইছেন, তা মালদহের মানুষ মেনে নেবেন না। অধীর বলেন, ‘‘কেননা শুধু মালদহ নয়। রাজ্যের মানুষ বুঝে গিয়েছেন যে, তিনি কাজের সময় কাজি আর কাজ ফুরলে পাজি। তাই মে মাসের ১৯ তারিখের পরে রাজ্যের মানুষ গান গাইবেন যে, ও তৃণমূল তোমার দেখা নাই রে, তোমার দেখা নাই।’’

এ দিন রতুয়ার চাতোর ফুটবল ময়দানে ওই জনসভার আয়োজন করা হয়। এলাকাটি রতুয়ায় হলেও তা মালতীপুর বিধানসভার মধ্যে। গনগনে রোদ উপেক্ষা করেই এদিনের ওই জনসভায় ভিড় ছিল নজরকাড়া। প্রকাশ্য সভায় আগাগোড়া বিজেপির পাশাপাশি মুখ্যমন্ত্রীও ছিলেন প্রদেশ সভাপতির আক্রমণের লক্ষ্য। বিজেপিকে সাম্প্রদায়িক দল আখ্যা দিয়ে তিনি বলেন, ‘‘বিজেপির কোনও অন্যায় কাজের প্রতিবাদ মুখ্যমন্ত্রী করেননি। এতেই বিজেপির সঙ্গে তৃণমূলের আঁতাত স্পষ্ট।’’ মালতীপুরের পর এ দিন মানিকচকেও জনসভা করেন অধীরবাবু। সেখানে মন্ত্রী সাবিত্রী মিত্রের চশমা কাণ্ডের প্রসঙ্গ তুলে তাকেও বিঁধতে ছাড়েননি অধীরবাবু। তিনি বলেন, ‘‘সরকারি কোষাগারের ৫৬ হাজার টাকায় তিনি চশমা কিনেছিলেন। এ বারের নির্বাচনে মানুষ তার জবাব দেবেন।’’

Advertisement

সবিস্তার পড়তে ক্লিক করুন।

যদিও মানিকচকের তৃণমূল প্রার্থী সাবিত্রীদেবী অধীরবাবুর কটাক্ষের কোনও জবাব দিতে চাননি। তিনি বলেন, ‘‘কে কোথায় কী প্রলাপ বকছেন, তার উত্তর আমি দেব না। নির্বাচনে মানুষই তার জবাব দেবেন।’’

অধীরবাবুর দাবি, সংখ্যালঘু, তফসিলি জাতি-উপজাতিদের জন্য কিছু করেননি মুখ্যমন্ত্রী। গরিবদের জন্য কিছু করেননি।

মালদহে হরিশ্চন্দ্রপুর আসনের পাশাপাশি মালতীপুরেও জোট হয়নি। সম্প্রতি হরিশ্চন্দ্রপুরে এসে কংগ্রেস প্রার্থীকে অধীরবাবু জোটের প্রার্থী বলে প্রকাশ্যে দাবি করায় বিতর্কের সৃষ্টি হয়। এদিন মালতীপুরের প্রার্থীর সমর্থনে ভোট চাইলেও তাঁকে অবশ্য জোটপ্রার্থী বলে দাবি করেননি তিনি। তবে মালতীপুরের কংগ্রেস প্রার্থী আলবেরুনি জুলকারনাইনকে পাশে বসিয়ে অধীরবাবু বলেন, ‘‘প্রয়াত প্রাক্তন সাংসদ গোলাম ইয়াজদানির ছেলে আলবেরুনি। শুধু তাই নয়। আপনারা জানেন, বলদ ভালো হলে জমিতে ভালো চাষ হয়। আপনারা আরএসপি, তৃণমূলের প্রার্থীদের দেখেছেন। আর আমাদের প্রার্থীকেও দেখুন। তারপর কাকে ভোট দেবেন, তা নিয়ে সিদ্ধান্ত নিন।’’

সব শেষে জনসভায় অধীরবাবুর আকুতি, ‘‘আপনারা আশীর্বাদ করুন। আমরা আপনাদের সঙ্গে কোনও অন্যায় করব না। এমন কিছু করব না যাতে আমাদের প্রতি যে ভালোবাসা রয়েছে তা ঘৃণায় পরিণত হয়।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement