মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
বিজেপির মিছিলকে টেক্কা দিতে শিলিগুড়ি শহরে প্রতিবাদ মিছিলের প্রস্তুতি পুরোদমে শুরু করে দিল তৃণমূল। তবে নির্ধারিত দিনের বদলে এই মিছিল ৩ জানুয়ারি দুপুরে হওয়ার সম্ভাবনা। তৃণমূল সূত্রে জানা গিয়েছে, নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তাঁর সফর পিছিয়ে দিয়েছেন। দল সূত্রে বলা হচ্ছে, ডিসেম্বরের শেষে রাচীতে কংগ্রেস-জেএমএম সরকারের শপথগ্রহণ অনুষ্ঠানে যাওয়ার কথা রয়েছে মমতার। সেখান থেকে ফিরে দক্ষিণবঙ্গের একটি জেলায় সফরে যাবেন। তার পরে জানুয়ারিতে শিলিগুড়ি আসবেন। দল সূত্রে আরও জানা গিয়েছে, নাগরিকপঞ্জি এবং নাগরিকত্ব আইনের প্রতিবাদে এই মিছিলে শিলিগুড়ি এবং লাগোয়া ডাবগ্রাম ফুলবাড়ির কর্মী-সমর্থকদের নিয়েই পথ নামার পরিকল্পনা করেছেন তৃণমূল নেত্রী।
জেলা তৃণমূল নেতৃত্বের দাবি, ‘‘বিজেপি মানুষকে ভুল বোঝাতে মিছিল, মিটিং করছে। চা বাগিচা এবং গ্রামের মানুষ বিভ্রান্ত করে মিছিলে আনা হয়েছে। কিন্তু নাগরিকপঞ্জি এবং নাগরিকত্ব আইন আসলে কী, তা মানুষকে জানিয়ে প্রতিবাদ জানানো হবে। সাত বা আট জেলা নয়, শিলিগুড়ি থেকে যত জন মানুষ মিছিলে যোগ দেবেন, তাঁদের নিয়েই মিছিল হবে।’’ দার্জিলিং জেলা তৃণমূল সভাপতি রঞ্জন সরকার বলেন, ‘‘উত্তরবঙ্গের প্রতিটি জেলায় দল কেন্দ্রীয় আইনের প্রতিবাদে রোজ নামছে। শিলিগুড়িতেও মিটিং, মিছিল চলছে। এবার আগামী ৩ জানুয়ারি মুখ্যমন্ত্রীর নেতৃত্বে মহামিছিল হবে।’’
দল সূত্রের খবর, প্রতিবাদ মিছিলের কয়েকটি রুটও বাছাই করা হয়েছে। এনজেপি স্টেশন যাওয়ার তিনবাতি মোড় থেকে বর্ধমান রোড ধরে জলপাইমোড়, ঝংকার মোড়, জংশন হয়ে দার্জিলিং মোড় অবধি যেতে পারে মিছিল। অথবা তিনবাতি মোড় হয়ে একই রুটে এসে মহানন্দা সেতু লাগোয়া মোড় থেকে ঘুরে হিলকার্ট রোড ধরে হাসমিচকে শেষ হতে পারে এই মিছিল। এই রুটের একটি রাস্তার বেশ কিছুটা অংশে উড়ালপুলের কাজ চলছে। সেই জায়গায় তাই দার্জিলিং মোড় থেকে বাঘাযতীন পার্ক অবধি বা উল্টো রুটও ভেবে রাখা হয়েছে। আগামী ১-২ দিনের মধ্যে শিলিগুড়ি পুলিশ এবং মুখ্যমন্ত্রীর নিরাপত্তার দায়িত্ব থাকা অফিসারেরা রুটগুলি দেখে সবুজ সংকেত দিলেই পদযাত্রার পথ চূড়ান্ত হয়ে যাবে।
তৃণমূল নেতৃত্ব ঠিক করেছেন, শিলিগুড়ি শহরের ৪৭টি ওয়ার্ড ছাড়াও ডাবগ্রাম-ফুলবাড়ি বিধানসভা, শিলিগুড়ি মহকুমার মাটিগাড়া, নকশালবাড়ি, খড়িবাড়ি এবং ফাঁসিদেওয়া ব্লক থেকে দলীয় নেতা-কর্মীদের মিছিলে যোগ দিতে ডাকা হবে। পাহাড়ের অংশগ্রহণ করা নিয়ে আলোচনা শুরু হয়েছে। এ ছাড়াও নাগরিকত্ব আইনের প্রতিবাদ জানিয়ে কোনও সংগঠন, সংস্থা মিছিলে অংশগ্রহণ করলে তাঁদেরও স্বাগত জানানো হবে বলে প্রাথমিকভাবে ঠিক হয়েছে। দলের নেতারা জানিয়েছেন, আগামী মে মাসের পরেই পুরসভা এবং শিলিগুড়ি মহকুমা পরিষদের ভোট হওয়ার কথা। নতুন বছর থেকেই পরপর শিলিগুড়িতে কর্মসূচির কথা ঠিক হচ্ছে। সেই জায়গায় নাগরিকত্ব আইনের বিরুদ্ধে ডাকা এই মিছিল দলকে বাড়তি অক্সিজেন দেবে।