—ফাইল চিত্র।
দলের সংগঠনের হাল ক্রমশই খারাপ হওয়ায় উত্তরবঙ্গ উন্নয়নমন্ত্রী রবীন্দ্রনাথ ঘোষকে মিটিংয়ের মধ্যেই ‘বকলেন’ দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
বৃহস্পতিবার কলকাতায় দলের বিধায়কদের নিয়ে বৈঠক করেন মমতা। তৃণমূল সূত্রের খবর, সেই বৈঠকে কোচবিহার প্রসঙ্গ উঠতেই রবীন্দ্রনাথকে ‘কাঠগড়ায়’ দাঁড় করান দলনেত্রী। এমনকি কোচবিহারে দলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের জন্যেও তাঁকে দোষারোপ করেন তিনি। তাঁর জন্যেই কোচবিহারে দল হেরেছে বলেও উল্লেখ করেন তিনি। এ দিনের বৈঠকে তুফানগঞ্জের বিধায়ক ফজল করিম মিয়াঁ উপস্থিত ছিলেন না। কেন ওই বিধায়ক নেই তা নিয়েও রবীন্দ্রনাথকে জিজ্ঞাসাবাদ করেন। তুফানগঞ্জে দলের হাল কেন খারাপ তা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন। রবীন্দ্রনাথ অবশ্য এ নিয়ে কিছু বলতে চাননি। তিনি বলেন, “এমন কোনও বিষয় নেই।” দলের কোচবিহার জেলা সভাপতি বিনয়কৃষ্ণ বর্মণ বলেন, “ওই বিষয়ে আমার কিছু জানা নেই।”
এ বারে লোকসভা নির্বাচনে কোচবিহারে তৃণমূল প্রার্থী পরেশ অধিকারীকে হারিয়ে বিজেপি প্রার্থী নিশীথ প্রামাণিক বিপুল ভোটে জয়ী হন। পরেশ রবীন্দ্রনাথের ঘনিষ্ঠ বলেই পরিচিত ছিলেন। এর পর থেকেই রবীন্দ্রনাথের উপর ক্ষুব্ধ হন দলনেত্রী। তাঁকে জেলা সভাপতির পদ থেকে সরিয়ে দায়িত্ব দেওয়া হয় বিনয়কৃষ্ণ বর্মণকে। সেই সঙ্গে কার্যকরী সভাপতির দায়িত্ব দেওয়া পার্থপ্রতিম রায়কে। হারের পর থেকে জেলায় দলের সংগঠনে কার্যত ধস নামে। একের পর এক গ্রাম পঞ্চায়েত হাতছাড়া হয়। পঞ্চায়েত সমিতিও হাতছাড়া হয়।
দল সূত্রে খবর, সবথেকে বেশি ক্ষতি হয় তুফানগঞ্জের। ওই মহকুমা রবীন্দ্রনাথের ‘গড়’ বলেই পরিচিত ছিল। ২০১৬ সালে রবীন্দ্রনাথের ঘনিষ্ঠ ফজল করিম মিয়াঁকে দল প্রার্থী করে। তিনি জিতে বিধায়ক হন। সেই তুফানগঞ্জে কিছুদিন আগে প্রসূন বন্দ্যোধ্যায়ের নেতৃত্বে তৃণমূলের এক প্রতিনিধি দল গিয়ে প্রবল বিক্ষোভের মুখে পড়েন। হাতে গোনা কয়েকজন তৃণমূল কর্মী তাঁদের সঙ্গে দেখা করেন। ৯ জুলাই তুফানগঞ্জেই কর্মিসভা করতে প্রবল বিক্ষোভের মুখে পড়েন তৃণমূলের রাজ্য সভাপতি সুব্রত বক্সী। তাঁর গাড়িতে লাঠি দিয়ে আঘাত করা হয়। চারদিকে পুলিশ পাহারায় ওই সভা হয়। ওই রিপোর্ট পেয়ে ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন মমতা। এ দিন তুফানগঞ্জের কেন এমন হাল তা রবীন্দ্রনাথের কাছে জানতে চান তিনি। দ্রুত ওই এলাকায় দলের সংগঠনে গতি আনার নির্দেশ দেন। ফজল করিম অসুস্থ শুনে তাঁকে ভাল চিকিৎসার বন্দোবস্ত করতেও বলেন।
তৃণমূলের কোচবিহার জেলার কার্যকরী সভাপতি পার্থপ্রতিম রায় বলেন, “বিধায়কদের বৈঠক হয়েছে এ দিন। আমি ওই বিষয়ে কিছু জানি না।”