শিলিগুড়ি থেকে গজলডোবা ও ডুয়ার্সের পথে দু’টি সেতু খারাপ তাই বন্ধ নতুন উড়ালপুলটিও। নিজস্ব চিত্র।
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের স্বপ্নের প্রকল্প ‘ভোরের আলো’ ‘মেগা টুরিজ়ম হাব’-এ শিলিগুড়ি থেকে গাজলডোবা যাওয়ার সোজাসুজি রাস্তা চালুর সম্ভাবনা দেখা দিল। প্রায় দেড় বছরের মতো বন্ধ দু’টি সেতুর সংস্কারের জন্য দরপত্র (টেন্ডার) চাওয়া হল। সেতু দুটির সংস্কারের কাজ শেষ হলে, আবার চালু হবে নতুন উড়ালপুলটিও।
প্রশাসন সূত্রের খবর, গত বছর দেড়েক ধরে প্রশাসনিক প্রক্রিয়া এবং টানাটানির পরে সম্প্রতি প্রায় ১৪ কোটি টাকার টেন্ডার করেছে পূর্ত দফতর। এ মাসের শেষে টেন্ডার প্রক্রিয়া সম্পন্ন হলে, মার্চ থেকে কাজ শুরুর সম্ভাবনা রয়েছে। তাতে আগামী পাঁচ থেকে ছয় মাসের মধ্যে ক্ষতিগ্রস্ত দু’টি সেতুর উপরের বড় অংশ (ডেক ও গার্ডার) নতুন করে তৈরির সিদ্ধান্ত হয়েছে। এতদিন ধরে সেতু বন্ধ থাকায় সাধারণ যাত্রী থেকে পর্যটকদের ভোগান্তি চূড়ান্ত পর্যায়ে পড়েছে।
আপাতত প্রায় ১১ কিলোমিটার ঘুরপথে গজলডোবা যেতে হচ্ছে। সেখান থেকে ডুয়ার্সে যেতেও সময় বেশি লাগছে। ঘুরপথের প্রায় আট কিলোমিটার রাস্তা খানাখন্দে ভরে গিয়েছে। সেটির কাজ শুরু হলেও ধূলো এবং গর্তের জেরে নিয়মিত গাড়ি, ট্রাক খারাপ হচ্ছে। আমবাড়ি রেলগেটে সারাদিন দফায় দফায় গাড়ি আটকে থাকছে। এতে বাসিন্দা, যাত্রী, চালক থেকে পর্যটকদের মধ্যে ক্ষোভ বেড়েছে। এলাকাবাসীর অনেকেই বলছেন, ‘‘বালাসনের মতো সেতু পূর্ত দফতর ছয় মাসে ঠিক করে ফেলেছে। এ ক্ষেত্রে এত দেরি হল কেন!
যদিও বাসিন্দাদের আশ্বস্ত করেছেন পূর্ত দফতরের জলপাইগুড়ি হাইওয়ে ডিভিশনের সুপারিন্টেন্ডেন্ট ইঞ্জিনিয়ার দীপক সিংহ। তিনি বলেন, ‘‘টেন্ডার হয়ে গিয়েছে। মার্চ থেকে কাজ শুরু হবে বলে আশা করছি। দুটি সেতুর উপরের অংশ নতুন করে তৈরি হবে।’’ তিনি জানান, ক্ষতিগ্রস্ত সেতুগুলি সেচ দফতরের অধীনে ছিল। সরকারি প্রক্রিয়ায় পূর্ত দফতরের হাতে এসেছে। তার পরে, সেতুগুলির সমীক্ষা করা হয়েছে। সে সমীক্ষার রিপোর্ট কলকাতা গিয়ে অনুমোদনের পরে টাকা বরাদ্দ করায় টেন্ডার হল। তাতেই সময় লেগেছে।
রাজ্যে তৃণমূল সরকার ক্ষমতায় আসার পরে, গজলডোবার ‘মেগা টুরিজ়ম হাব’-এর ঘোষণা করেন মুখ্যমন্ত্রী। কয়েক হাজার কোটি টাকার প্রকল্পের অনেকটাই বাস্তাবায়িত হয়ে গিয়েছে। ‘ভোরের আলো’ কটেজ, যুবকল্যাণ দফতরের আবাসন, পর্যটকদের নানা ধরনের মনোরঞ্জনের ব্যবস্থা করা হচ্ছে। অস্ট্রেলিয়ার সিডনি হার্বার সেতুর আদলে প্রকল্প
এলাকায় নতুন সেতু চালু হয়েছে। একাধিক বেসরকারি হোটেলও রয়েছে। তবে শিলিগুড়ি থেকে সহজে সেখানে যাতায়াতের জন্য সেচ দফতরের রাস্তায় সেতু মেরামত এবং উড়ালপুল করা হয়। রাস্তাটিও পুরো সংস্কার হয়। এতে পর্যটকদের আমবাড়ির রেলগেটে দীর্ঘক্ষণ আটকে থাকতে হত না। কিন্তু দেড় বছর আগে দু’টি সেতুর একাংশ বসে যেতে শুরু করে। তাতে বিপত্তি বাড়ে। পুরো রাস্তাটি বন্ধ করে ঘুরপথে গাড়ি চলাচল করানো শুরু হয়।