আলিপুরদুয়ার প্যারেড গ্রাউন্ডে প্রশাসনিক বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। নিজস্ব চিত্র।
গত জুলাই মাসে এক নির্দেশে চা পর্ষদ চা পাতা তোলার সময়সীমা কেন এগিয়ে আনল, তা নিয়ে তদন্ত করতে বললেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই সঙ্গে এ বিষয়ে আইনি পদক্ষেপ নিতেও রাজ্য প্রশাসনের শীর্ষ কর্তাদের নির্দেশ দেন তিনি।
চা বলয় অধ্যুষিত আলিপুরদুয়ার জেলায় বুধবার প্রশাসনিক বৈঠক করেন মুখ্যমন্ত্রী। স্বাভাবিক ভাবেই সেখানে চা বাগানের প্রসঙ্গ ওঠে। সেই প্রসঙ্গেই সেখানে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “টি বোর্ডের (চা পর্যদের) গত জুলাই মাসের এক নির্দেশে চা পাতা তোলার সময়সীমা ২৩ দিন এগিয়ে ৩০ নভেম্বর করার নির্দেশ দেওয়া হয়। শ্রম দফতরের লিখিত নির্দেশ সত্ত্বেও পাতা তোলার সেই সময়সীমা বাড়ানো হয়নি। কেন হয়নি বা কারা এর জন্য দায়ী, সে ব্যাপারে মুখ্যসচিবকে তদন্ত করে দেখতে বলছি। আইন অনুযায়ী পদক্ষেপ নিতে বলছি।” একই সঙ্গে মুখ্যমন্ত্রীর সংযোজন, “বাইরে থেকে আসা কিছু চায়ের জন্য দার্জিলিং বা ডুয়ার্সের চায়ের ক্ষতি হচ্ছে। এটাও দেখতে হবে।”
এ দিনের প্রশাসনিক বৈঠক থেকে মুখ্যমন্ত্রী তাঁর সরকারের আমলে চা শ্রমিকদের মজুরি বৃদ্ধি থেকে শুরু করে জমির পাট্টা প্রদান, ক্রেশ ও স্বাস্থ্য কেন্দ্র তৈরি-সহ উন্নয়নের বিভিন্ন বিষয় তুলে ধরেন। সেই প্রসঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “ডুয়ার্সে পাঁচটা চা বাগান খোলা হয়েছে। সাড়ে সাত হাজার শ্রমিক নতুন জীবন খুঁজে পেয়েছেন।” এর জন্য মুখ্যমন্ত্রীকেই কৃতিত্ব দেন বৈঠকে উপস্থিত রাজ্যের মন্ত্রী থেকে শুরু করে প্রশাসনের কর্তারা। রাজ্যের শ্রমমন্ত্রী মলয় ঘটক বলেন, “আপনার নির্দেশে যে ‘স্ট্যান্ডার্ড অপারেটিং প্রসিডিওর’ হয়েছে, তাতে আগামী দিনে চা বাগানগুলো খোলা রাখতে সুবিধা হবে। চা বাগানের মালিকপক্ষ হাইকোর্টে গিয়েছিল সেখানে সরাসরি বলা হয়, যা বাকি রয়েছে, তা দিলে তবেই শুনানি হবে। ফলে যতগুলি চা বাগান বন্ধ রয়েছে, তারাও তড়িঘড়ি বাগান খুলে দিচ্ছে।” একই সঙ্গে মলয় জানান, গত এক সপ্তাহ থেকে দশ দিনের মধ্যে পাঁচটা চা বাগান খুলে গিয়েছে। আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে আরও তিনটা চা বাগান খুলে যাবে।
মুখ্যমন্ত্রীর এ দিনের প্রশাসনিক বৈঠক থেকে চা বলয়ের ছেলে-মেয়েদের জন্য স্কুলবাসের প্রসঙ্গও ওঠে। প্রসঙ্গটি তোলেন রাজ্যসভার সদস্য ঋতব্রত বন্দ্যোপাধ্যায়। বিষয়টি দেখা হচ্ছে বলে জানান মুখ্যমন্ত্রী। পরে ঋতব্রত বলেন, “মুখ্যমন্ত্রী নিজে চা বলয়ের ছেলেমেয়েদের জন্য স্কুল বাসের ব্যবস্থা গ্রহণে উদ্যোগী হয়েছেন। এই উদ্যোগকে সাধুবাদ জানাই।” আজ, বৃহস্পতিবার সুভাষিণী চা বাগানে সরকারি প্রকল্পের সুবিধা প্রদানের সভা রয়েছে মুখ্যমন্ত্রীর। প্রশাসন সূত্রের খবর, সেখানে প্রায় আট হাজার চা শ্রমিককে জমির পাট্টা দেবেন মুখ্যমন্ত্রী। কয়েক’শো বাগান শ্রমিক পাবেন চা সুন্দরী প্রকল্পের ঘর।