স্বাগত: পুরাতন মালদহে বেসরকারি হোটেলের হেলিপ্যাড থেকে মহানন্দা ভবনের পথে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। নিজস্ব চিত্র
মালদহ সফর শুরুর ঘন্টাদু’য়েক আগে কলকাতায় দলীয় কর্মসূচিতে জেলার ‘গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব’ নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করলেন তৃণমূলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
সোমবার দুপুরে নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়ামে দলীয় সভায় প্রকাশ্যেই মালদহ নিয়ে ক্ষোভ উগড়ে দেন তিনি। তিনি বলেন, ‘‘মালদহে খেয়ালখুশি মতো দল চলছে। অনেকেই দলের নির্দেশ মেনে চলছেন না। দলের কথাও শুনছেন না।’’ এমন হলে দলে থাকার প্রয়োজন নেই বলে সাফ জানিয়ে দেন মমতা। কলকাতা থেকে হেলিকপ্টারে এ দিনই দুপুর ২টো ৪৫ মিনিট নাগাদ মালদহে পৌঁছন মুখ্যমন্ত্রী।
লোকসভা থেকে বিধানসভা— মালদহ থেকেই ভোটের প্রচার শুরু করেছিলেন তৃণমূলনেত্রী। দলের অন্দরমহলের খবর, মালদহ থেকে সভা শুরু করে রাজ্যে সাফল্য পেলেও জেলার ফলাফল নিয়ে ‘হতাশ’ হতে হয় তাঁকে। গত বিধানসভা নির্বাচনে রাজ্যে তৃণমূল ঝড়ের মধ্যেও মালদহে প্রাপ্তি ছিল শূন্য। জেলার ১২টি আসনেই পরাজিত হয় তৃণমূল। তৎকালীন রাজ্যের মন্ত্রী কৃষ্ণেন্দুনারায়ণ চৌধুরী, সাবিত্রী মিত্রও হেরে গিয়েছিলেন। একই ভাবে এ বারের লোকসভা নির্বাচনেও জেলায় খাতা খুলতে পারেনি রাজ্যের শাসক দল। মালদহের দু’টি আসনেই তৃণমূলের ভরাডুবি ঘটেছে। তবে পঞ্চায়েত, পুরসভাগুলিতে জেলায় ভাল মিলেছে।
দলের নেতাদের একাংশের বক্তব্য, এমন ফলাফলের পিছনে জেলায় দলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের বিষয়টিই সামনে এসেছে। তাই মালদহে দলের দ্বন্দ্ব সামলাতে মরিয়া তৃণমূলনেত্রী। এর আগেও মালদহ সফরে এসে দলীয় নেতা-নেত্রীদের ঐক্যবদ্ধ ভাবে চলার নির্দেশ দিয়েছেন তিনি। বিধানসভা নির্বাচনের আগে মালদহ বিমানবন্দরে কৃষ্ণেন্দু, সাবিত্রী, বাবলা, চৈতালি, কাকলির মতো নেতা-নেত্রীদের নাম ধরে ডেকে একসঙ্গে চলার বার্তা দিয়ে গিয়েছিলেন মমতা। মাসতিনেক আগে মালদহে প্রশাসনিক বৈঠকে যোগ দিতে এসেছিলেন তিনি। বৈঠকে যোগ দেওয়ার আগেও দলীয় নেতা-নেত্রীদের নিয়ে বৈঠক করে তিনি একসঙ্গে জেলায় কাজ করার নির্দেশ দিয়েছিলেন।
দলের অন্দরমহলের কানাঘুষো, তার পরেও জেলায় দলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব মেটেনি, তা এ দিন কলকাতায় দলনেত্রীর বক্তব্যেই স্পষ্ট হয়েছে।
প্রকাশ্য সভায় দলনেত্রীর ক্ষোভ প্রকাশ তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করছেন তৃণমূল নেতৃত্বের একাংশের। তাঁদের বক্তব্য, ‘‘নেত্রীর বক্তব্য শুনে মনে হল এ বার তিনি লক্ষণরেখা টেনে দিয়েছেন।’’
কৃষ্ণেন্দু বলেন, ‘‘আমি দিদির অনুগত সৈনিক। দলের নির্দেশ মতোই কাজ করি।’’ মৌসম বলেন, ‘‘ঐক্যবদ্ধ হয়েই কাজ করার চেষ্টা করা হচ্ছে।’’