নেত্রী: উত্তরবঙ্গ উৎসবের মঞ্চে, শিলিগুড়ির বাঘাযতীন পার্কে। সোমবার। ছবি: স্বরূপ সরকার
গত কয়েক বছরে শিলিগুড়ির আমূল পরিবর্তন হয়েছে বলে জানিয়ে তার ‘কৃতিত্ব’ দাবি করলেন খোদ রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই সঙ্গে দু’হাত তুলে উত্তরবঙ্গ তো বটেই, শিলিগুড়ি শহরকে তাঁর পাশে থাকার জন্য ফের অনুরোধ করলেন। শিলিগুড়িকে কেন্দ্র করে গজলডোবার সেতু, এশিয়ান হাইওয়ে, একাধিক উড়ালপুলের কাজের উল্লেখ করে ‘শহরটা কী ছিল, কী হয়েছে’, তাও বলতে শোনা গিয়েছে মুখ্যমন্ত্রীকে। সোমবার বিকেলে বাঘাযতীন পার্ক থেকে উত্তরবঙ্গ উৎসবের উদ্বোধন করেন মুখ্যমন্ত্রী। সেখানে বিজেপি, কেন্দ্রীয় বাজেটের সমালোচনা করে এ শহরের প্রতি তাঁর ভালবাসা বরাবরের তা বোঝানোর চেষ্টা করেছেন।
মুখ্যমন্ত্রী বলেছেন, ‘‘আমার তো হাসিমারার মালঙ্গীতে চলে যাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু যখন শুনলাম এখানে অনুষ্ঠান হচ্ছে, তখন কি আর বাগডোগরা নেমে চলে যেতে পারি! তাই আপনাদের সঙ্গে উৎসবের আনন্দ ভাগ করে নিতে এলাম।’’
রাজনীতির দিক থেকে শিলিগুড়ি শহর একবারই তৃণমূলের পাশে থেকেছে, ২০১১ সালে পরিবর্তনের হাওয়ার সময়। এ ছাড়া, ২০১৬ সালের বিধানসভাতেও তৃণমূল হেরেছে। হেরেছে লোকসভা, পুরসভা, মহকুমা পরিষদ ভোটেও। কিন্তু তাতে একাধিকবার দুঃখের কথা বললেও শিলিগুড়ির থেকে যে মুখ্যমন্ত্রী মুখ ফিরিয়ে থাকেননি তা তাঁর দলের নেতারা বারবার বলেছেন। ইস্ট-ওয়েস্ট করিডর, এশিয়ান হাইওয়ে-২, মুখ্যমন্ত্রীর শাখা সচিবালয় উত্তরকন্যা থেকে বেঙ্গল সাফারি, কাওয়াখালির উপনগরী, বর্ধমান রোডে নতুন উড়ালপুল, বিমানবন্দরকে আন্তর্জাতিক মানের করার জমি বর্তমান সরকারই ব্যবস্থা করছে বলে নেতারা জানিয়েছেন। তার পরেও তৃণমূলের উপর শহরবাসী ভরসা না করায় নেত্রী বরাবর দলের অন্দরে উষ্মা প্রকাশ করে গিয়েছেন।
এ দিন উত্তরবঙ্গ উৎসবের মঞ্চেই মন্ত্রী গৌতম দেব ছাড়া শাসক দলের জেলা সভাপতি রঞ্জন সরকারের সঙ্গে আলাদা করে কথা বলেন মুখ্যমন্ত্রী। রাতে উত্তরকন্যার কন্যাশ্রী ভবনে মুখ্যমন্ত্রী জেলা তৃণমূল নেতৃত্বের কাছে শিলিগুড়ি শহরের পরিস্থিতি কথা শুনেছেন। বিকেলে এক দফায় শহরের খেলাঘর মোড় এলাকায় এসজেডিএ-র ভাইস চেয়ারম্যান নান্টু পালের বাড়িতে গিয়ে তাঁর মেয়েকে বিয়ের আশীর্বাদও করে আসেন মুখ্যমন্ত্রী।
স্থানীয় সিপিএমের বিধায়ক অশোক ভট্টাচার্য বলেছেন, ‘‘উনি যাই বলুন, নিজেরা ক্ষমতায় আসতে না পারায় তৃণমূল সরকার বরাবর আমাদের বঞ্চিত করে গিয়েছেন। বছর পর বছর পাওনা টাকা দেননি। তার পরেই শহরকে এগিয়ে নিয়ে যেতে আমরা সাধ্যমতো চেষ্টা করে গিয়েছি।’’