নদীর ধারের নীচু এলাকায় জল ঢুকতে শুরু করেছে ইতিমধ্যেই। নিজস্ব চিত্র
যে কোনও মুহূর্তে বন্যা হতে পারে, প্রতি মুহূর্তে এই ভয়ে দিন কাটাচ্ছেন মালদহের মানুষ। বর্ষায় এই জেলায় গঙ্গার জলস্তর বিপদসীমা ছাড়িয়েছে। শুধু গত ১২ ঘণ্টায় গঙ্গার জলস্তর বেড়েছে ১০ সেন্টিমিটার। স্থানীয় নদী ফুলহারেরও একই অবস্থা। পর্যবেক্ষকদের আশঙ্কা, এর উপর যদি উত্তরবঙ্গ আর বিহারে বৃষ্টি শুরু হয় আর সেখানকার নদীগুলিতে জল বাড়ে তবে সেই জল গঙ্গায় ঢুকে মালদহের চারটি ব্লককে ঠলে দেবে চরম বিপদের মুখে। বন্যা হবে মালদহে।
মালদহের জেলা সেচ দফতর জানিয়েছে, বহু বছর পর গঙ্গা এবং ফুলহার নদীর জলস্তর প্রায় একই জায়গায় রয়েছে। আর এতেই বিপদের সম্ভাবনা আরও বেড়েছে। যদিও মালদহবাসীদের একাংশের অভিযোগ, আশঙ্কা যদি সত্যি হয়, তবে বিপদ ঠেকানোর কোনও প্রস্তুতি এখনও পর্যন্ত নেই জেলা প্রশাসনের। উঁচু জায়গায় তাঁবু খাটিয়ে সরে আসতে হয়েছে তাঁদের। তবে জল বাড়লে, খাবারের অভাব দেখা দিলে, সমস্যা বাড়বে। কারণ শুকনো খাবার আর পানীয় জলের জোগান নেই। প্রশাসনের তরফে কোনও সাহায্যও আসেনি। যদিও মালদহের জেলাশাসকের বক্তব্য, ‘‘গোটা বিষয়টিতেই নজর দেওয়া হচ্ছে। ব্লক প্রশাসনকে সতর্ক করা হয়েছে। সময়মতো যথাযথ পদক্ষেপও করা হবে। জলস্ফীতির কারণে পরিস্থিতি যাতে ভয়ঙ্কর না হয়ে ওঠে তার জন্য জরুরি ভিত্তিতে বালির বস্তা জল আটকানোর চেষ্টা করা হচ্ছে।’’
ইতিমধ্যেই গঙ্গার বাড়তে থাকা জল ঢুকতে শুরু করেছে নদীর ধারের নিচু এলাকাগুলিতে। মানিকচক ব্লকের রামনগর, জোটপাট্টা, রবিদাসপাড়া এলাকাগুলি প্লাবিত হয়েছে। অন্যদিকে ফুলহার নদীর জলও ঢুকতে শুরু করেছে মহানন্দাটোলা, বিলাইমারি গ্রাম পঞ্চায়েতের আটটি গ্রামে। সেচ দফতর জানিয়েছে, প্রতিবছরই এইসময়ে ৪০ হাজার কিউসেক জল প্রবাহিত হয় গঙ্গা দিয়ে। তবে এ বছর বিপদের আশঙ্কা বেশি, কারণ ইতিমধ্যেই গঙ্গার জল বিপদসীমা ছাড়িয়েছে এবং উত্তরবঙ্গ-বিহারে এখনও ভারী বৃষ্টির পূর্বাভাস রয়েছে। ফলে উত্তরের নদীগুলির জলস্ফীতি ঘটলে তার প্রভাব মালদহ জেলার হরিশ্চন্দ্রপুর ১ও ২,রতুয়া ১ ও ২ব্লকে প্রভাব পড়বে। তবে বন্যার আশঙ্কায় ইতিমধ্যেই ৩৪০টি পরিবারকে উঁচু এলাকায় সরানো হয়েছে বলেও জানিয়েছে সেচ দফতর।