মুরসালিমকে সংবর্ধনা দেওয়া হচ্ছে। —নিজস্ব চিত্র।
মালদহের অখ্যাত গ্রামের ছোট্ট বালক মুরসালিমকে রেল কর্তৃপক্ষের তরফে সংবর্ধনা দেওয়া হল। রেলে তার পরিবারের এক জন সদস্যকে চাকরি দেওয়ার প্রতিশ্রুতিও দেওয়া হয়েছে।
নর্থ ফন্টিয়ার রেলওয়ের কাটিয়ার ডিভিশনের পক্ষ থেকে সোমবার ১২ বছরের মুরসালিমকে সংবর্ধিত করা হয়। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন কাটিয়ার ডিভিশনের মুখ্য রেলওয়ে প্রবন্ধক সুরেন্দ্র কুমার, উত্তর মালদহের সাংসদ খগেন মুর্মু-সহ রেলের অন্য আধিকারিকেরা। মুরসালিমের হাতে পুরস্কার এবং মানপত্র তুলে দেওয়া হয়েছে। তার পরিবারের সদস্যকে চাকরি দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে একটি প্রস্তাব রেলের উচ্চতর কর্তৃপক্ষকে পাঠানো হয়েছে।
মালদহের হরিশ্চন্দ্রপুর থানা এলাকার কড়িয়ালি গ্রামের বাসিন্দা মুরসালিম। গত শুক্রবার ২২ সেপ্টেম্বর তার উপস্থিত বুদ্ধিতেই বড়সড় দুর্ঘটনার হাত থেকে রক্ষা পেয়েছে আপ শিয়ালদহ-শিলচরগামী কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেস। রেললাইনে গভীর গর্ত দেখে গায়ের লাল টি-শার্ট খুলে মাথায় উপর ঘোরাতে ঘোরাতে ছুটে এসেছিল ওই বালক। বিপদ বুঝে চালকও ট্রেনটি থামিয়ে দেন। ছুটে আসেন রেলের লোকেরা। দেখেন, সত্যিই আপ লাইনের তলা থেকে মাটি সরে গিয়েছে! প্রায় সঙ্গে সঙ্গেই লাইন মেরামতির কাজ শুরু হয়। পরে সুষ্ঠু ভাবেই গন্তব্যে পৌঁছয় ট্রেনটি। এই ঘটনার পর থেকেই খবরের শিরোনামে উঠে আসে মালদহের অখ্যাত গ্রাম। মুরসালিমকে দেখতে গ্রামে ভিড় লেগেই আছে তার পর থেকে। আসছেন বড় বড় রাজনৈতিক নেতা, মন্ত্রী, রেলের আধিকারিকেরা।
কড়িয়ালির ঝাঙরপাড়ার বাসিন্দারা গ্রামের পক্ষ থেকেও সোমবার মুরসালিমকে সংবর্ধনা দেন। সংবর্ধনা অনুষ্ঠান থেকে সাংসদ খগেন বলেন, ‘‘এত মানুষের জীবন বাঁচিয়েছে, আমরা চাই এই ছেলেটা জীবনে উন্নতি করুক। রেলের তরফে ওর পড়াশোনার যাতে কোনও অসুবিধা না হয়, তা দেখা হবে। ওর কাছ থেকে আমাদেরও শিক্ষা নেওয়া উচিত। আমি সাংসদ হিসাবে ওকে কী ভাবে সাহায্য করা যায়, দেখব। এ বিষয়ে রেলমন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেব।’’
সুরেন্দ্র বলেন, ‘‘রেললাইনে যে বৃষ্টির কারণে গর্ত হয়ে গিয়েছিল, সেই তথ্য রেল আধিকারিকেরা এই ছেলেটির কাছ থেকেই প্রথম জানতে পারেন। ওকে শংসাপত্র দেওয়া হল। এ ছাড়া, আর্থিক সহায়তা কী করা যায়, তা আমরা দেখছি। ওর পড়াশোনায় অসুবিধা যাতে না হয়, তা নিশ্চিত করা হবে।’’