Kanchanjunga Express

ট্রেনটা যদি না-থামত? গর্ব হলেও শিউরে উঠছি মাঝে মাঝে: মুরসালিমের মা আনন্দবাজার অনলাইনকে

মালদহের ভালুকা স্টেশনের অদূরে ঘটনাটি ঘটেছিল। রেললাইনে গভীর গর্ত দেখে গায়ের লাল টি-শার্ট খুলে মাথায় ঘোরাতে ঘোরাতে ছুটে গিয়েছিল মুরসালিন। তাতেই বিপদ বুঝে ট্রেনটি থামিয়ে দেন চালক।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২৩ ২১:২৭
Share:

(বাঁ দিকে) মা মার্জিনা বিবি এবং তাঁর ছেলে মুরসালিম। —নিজস্ব চিত্র।

ছেলের উপস্থিত বু্দ্ধিতেই রক্ষা পেয়েছে আপ কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেস। প্রাণে বেঁচেছেন শিয়ালদহ-শিলচরগামী কাঞ্চনজঙ্ঘার কয়েক হাজার যাত্রী। ওই ঘটনার পর থেকেই ছেলেকে নিয়ে চারদিকে হইচই শুরু হয়ে গিয়েছে। তাঁদের মাটির ঘরে এসেছেন রাজ্যের মন্ত্রী এবং রেলের বড় বড় কর্তারা। এ নিয়ে গর্ব তো হচ্ছেই। পাশাপাশি ছেলে রেললাইনের মাঝখান দিয়ে ট্রেনের দিকে ছুটে যাচ্ছে— এই দৃশ্যটার কথা ভেবেই বুক কেঁপে উঠছে মুরসালিমের মা মার্জিনা বিবির। তিনি বলেন, ‘‘এ কেমন অনুভূতি আমি জানি না। একমাত্র কোনও মায়েরই হয়ত এই ধরনের অনুভূতি হওয়া সম্ভব!’’

Advertisement

বৃহস্পতিবার দুপুরে মালদহের ভালুকা স্টেশনের অদূরে ঘটনাটি ঘটেছিল। রেললাইনে গভীর গর্ত দেখে গায়ের লাল টি-শার্ট খুলে মাথায় ঘোরাতে ঘোরাতে ছুটে গিয়েছিল মুরসালিন। তাতেই বিপদ বুঝে ট্রেনটি থামিয়ে দেন চালক। ছুটে আসেন রেলের লোকেরা। দেখেন, সত্যিই আপ লাইনের তলা থেকে মাটি সরে গিয়েছে! প্রায় সঙ্গে সঙ্গেই লাইন মেরামতির কাজ শুরু হয়। পরে সুষ্ঠু ভাবেই গন্তব্যে পৌঁছয় ট্রেনটি। এই ঘটনার পর থেকেই খবরের শিরোনামে উঠে আসে মালদহের হরিশ্চন্দ্রপুর থানার প্রত্যন্ত গ্রাম কড়িয়ালির মুরসালিন। শনিবার তার বাড়িতে নেতা-মন্ত্রীদের দেখে কার্যত ঘাবড়ে গিয়েছিলেন মার্জিনা। সেই প্রসঙ্গে বলতে গিয়ে তিনি বলেন, ‘‘কখনও এত লোক তো দেখিনি বাড়িতে। একের পর এক বড় মাপের লোকেদের আসতে দেখে সত্যিই গর্ব হচ্ছিল। কিন্তু যত বারই ভাবছি যে, ছেলে ট্রেনের দিকে ছুটে যাচ্ছে, আমরা বুকটা কেঁপে উঠছে।’’

শনিবারই মুরসালিমের পরিবারের সঙ্গে দেখা করেন রাজ্যের মন্ত্রী তাজমুল হোসেন। সংখ্যালঘু দফতরের প্রতিমন্ত্রী তাজমুল জানান, দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশেই মুরসালিমের বাড়িতে এসেছেন তিনি। মন্ত্রী বলেন, ‘‘এমন সাহসি ছেলের জন্য গর্ব হয়। রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে ওই বালককে পুরস্কৃত করা হবে।’’ এর পর রবিবার মালদহ জেলা পরিষদের সদস্য তথা তৃণমূলের জেলা সাধারণ সম্পাদক বালিকুল ইসলাম ওরফে বুলবুল‌ খান মুরসালিমের বাড়িতে যান। মুরসালিমের পড়াশোনার দায়িত্ব নেন তিনি। বলেন, ‘‘মুরসালিমের পড়াশোনা যাতে মাঝপথে বন্ধ না হয়ে যায়, সেটা দেখব। প্রতি মাসেই ওর পরিবারকে কিছু সাহায্য করব।’’

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement