রবিবার দুপুরে পুনর্ভবা নদীর জলস্ফীতিতে প্লাবিত মালদহের বামনগোলা ব্লকের খুটাদহ এলাকা পরিদর্শনে মালদহ উত্তরের সাংসদ খগেন মুর্মু । ছবি: জয়ন্ত সেন।
মালদহে ফুঁসছে গঙ্গা, ফুলহার ও মহানন্দা নদী। সেচ দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, জেলার এই মূল তিন নদী রবিবার বিপদসীমার সামান্য নীচ দিয়ে বইছে। এ দিকে মানিকচক ব্লকের গোপালপুরে গঙ্গা ভাঙন অব্যাহত। মালদহের জেলাশাসক নীতিন সিংহানিয়া বলেন, ‘‘নদীগুলির জলস্ফীতি ও সামগ্রিক বন্যা পরিস্থিতি নিয়ে প্রশাসন সতর্ক। প্রয়োজন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।’’
এ দিকে, বামনগোলায় বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হয়নি। পুনর্ভবা নদীর জলোচ্ছ্বাসে এ দিনও চাঁদপুর ও গোবিন্দপুর-মহেশপুর পঞ্চায়েতের একাধিক এলাকা নতুন করে প্লাবিত। একাধিক গ্রাম জলের তলায়। এদিন দুপুরে প্লাবিত এলাকা পরিদর্শনে যান মালদহ উত্তরের সাংসদ খগেন মুর্মু। জলবন্দি বাসিন্দাদের সঙ্গে তিনি কথা বলেন। এ দিকে কালিয়াচক ২ ব্লকের কাগমারি-চণ্ডিপুর এলাকায় ভাগীরথী নদীর উপর একটি বাঁশ ও কাঠ দিয়ে তৈরি সাঁকো এদিন ভেঙে গিয়েছে। ফলে বিপাকে পড়েছেন ওই দুই এলাকার বাসিন্দারা।
সেচ দফতর জানা গিয়েছে, এ দিন গঙ্গার জলস্তর ছিল ২৪.২১ মিটার, ফুলহার ২৭.১৫ মিটার ও মহানন্দা ২০.১০ মিটার। এই পরিস্থিতিতে গঙ্গা ভাঙ্গন অব্যাহত মানিকচক ব্লকের গোপালপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের ঈশ্বরটোলা, কামালতিপুর ও দক্ষিণ হুকুমতটোলা গ্রামে। গঙ্গার ব্যাপক জলস্ফীতিতে পঞ্চায়েতের সংরক্ষিত তিনটি গ্রামে জল ঢুকতে পারে। তাতে জলবন্দি হয়ে পড়বেন অন্তত দু’হাজার পরিবার। এ দিকে গত বছর ভুতনির কেশরপুর কলোনি এলাকায় গঙ্গার জলের তোড়ে যে বাঁধ ভেঙেছিল তা মেরামতি হয়নি বলে অভিযোগ। যে ভাবে গঙ্গার জল বাড়ছে তাতে ওই ভাঙা অংশ দিয়ে জল ঢুকে ফের প্লাবিত হতে পারে ভুতনির তিনটি গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকা। বানভাসির আশঙ্কায় রাত জাগছেন বাসিন্দারা।
এ দিকে, পুনর্ভবার জলস্ফীতিতে প্লাবিত বামনগোলা ব্লকের গোবিন্দপুর-মহেশপুর এবং চাঁদপুর গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায় বন্যা পরিস্থিতির কোনও উন্নতি হয়নি। বরং নতুন করে এদিন আরও এলাকা প্লাবিত হয়েছে। এদিন দুপুরে প্লাবিত ওই এলাকা পরিদর্শনে যান সাংসদ খগেন মুর্মু। খগেন বলেন, "বামনগোলা ব্লকের এই দুটি গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায় প্লাবনের জেরে কয়েকশো বিঘা জমির ধান, পাট এবং আনাজ নষ্ট হয়েছে। সেই কৃষকদের ক্ষতিপূরণ দরকার। পাশাপাশি রাস্তা ভেঙে যাওয়ায় বটতলি থেকে জোটপাথারি রাস্তায় একটি সেতু, নারায়ণপুর ও শনঘাটের মাঝে অন্তত দুটি কালভার্টের প্রয়োজন রয়েছে। এ নিয়ে প্রশাসনের সঙ্গে কথা বলব।"