গণপিটুনির ঘটনায় জড়িত নয় এমন কাউকে গ্রেফতার বা আটক করা যাবে না—এই দাবিতে জাতীয় সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখালেন মালবাজারের ডামডিম চা বাগানের শ্রমিকেরা।
বাগানের সব ক’টি শ্রমিক সংগঠনের সদস্যরাই এই বিক্ষোভে যোগ দেন। বুধবার সকাল নয়টা থেকে সাড়ে এগারোটা পর্যন্ত ডামডিম মোড়ে আড়াই ঘণ্টা ৩১ নম্বর জাতীয় সড়ক অবরুদ্ধ করে দেন চা শ্রমিকেরা। গণপিটুনির ঘটনায় গত সোমবার গভীর রাতে বাগানের হাটখোলা লাইন থেকে চার যুবককে আটক করে মালবাজার থানার পুলিশ। তাদের ঘটনার সঙ্গে কোনও যোগ নেই বলে দাবি করেন শ্রমিকেরা। এরপর মঙ্গলবার রাতেও তাদের থানা থেকে ছাড়া হয়নি। বাগানে আবারও পুলিশ এসে ধরপাকড় শুরু করতে পারে, এই আশঙ্কায় বুধবার সকালে পুলিশের উপর চাপ বাড়াতে জাতীয় সড়ক অবরোধ শুরু করে দেন শ্রমিকেরা। এদিন বাগানের প্রায় হাজার খানেক শ্রমিক এবং বাসিন্দা ৩১নম্বর জাতীয় সড়কে চলে আসেন।
গত রবিবার সকালে মালবাজার এলাকার পেশায় গাড়ির চালক দুই যুবককে ছাগল চোর সন্দেহে ডামডিম চা বাগানে গণপিটুনি দেওয়া হয়। যুবকদের সঙ্গে থাকা একটি ছোট গাড়িও জ্বালিয়ে দেয় জনতা। মালবাজার মহকুমা হাসপাতালে নিয়ে আসার আগেই মারা যান অজয় রায় নামের এক যুবক। অপর জখম যুবক গোপাল সিংহ সে দিনই সন্ধ্যায় উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে মারা যান। এরপরেই ঘটনায় জড়িতদের গ্রেফতারের জোরালো দাবি ওঠে মালবাজারে। নিউ মাল জংশনের বাসিন্দা মৃত গোপাল সিংহের পরিবারের সদস্য এবং প্রতিবেশীরা ঘটনায় জড়িতদের গ্রেফতারের দাবিতে সোমবার বিকালে আধ ঘণ্টা নিউমাল এলাকায় জাতীয় সড়ক অবরোধও করেন।
পুলিশের পক্ষ থেকেও এরপর তৎপরতা শুরু হয়। সন্দেহের বশে চার যুবককে আটকও করা হয়। কিন্তু এদিন অবরোধ চলাকালীনই আটক চার যুবককে ছেড়েও দেয় পুলিশ। তদন্তের স্বার্থেই জিজ্ঞাসাবাদের জন্যে এই চার জনকে আটক করা হয় বলে জানায় পুলিশ। দোষীদের খোঁজে বাগানে আবারও তল্লাশি চলবে বলেও পুলিশ সূত্রের খবর। গণপিটুনির ঘটনায় দোষীদের নাম পরিচয় জানতে পুলিশ তদন্তও শুরু করেছে বলে জানান মালবাজারের এসডিপিও নিমা নরবু ভুটিয়া। তবে ঘটনায় জড়িত নন, এমন কাউকে আটক বা গ্রেফতার করলে ফের আন্দোলনে নামবে শ্রমিকেরা বলে জানিয়েও রাখেন আন্দোলনকারীরা।
চা বাগানের বেশ কিছু বাসিন্দা তখন দাবি করেছিলেন, নিয়মিত ছাগল চুরি হয়। সেই কারণে এলাকার বাসিন্দারা রীতিমতো উত্তেজিত ছিল। চা বাগানের শ্রমিক সংগঠনগুলিও ছাগল চুরির কথা স্বীকার করেন। তারাও বলে, ছাগল চুরি রোখা দরকার। এই নিয়ে চাপানউতোর সে দিন থেকেই শুরু হয়েছিল। পুলিশ জানিয়েছে, সবই খতিয়ে দেখা হচ্ছে।