প্রচারে তৃণমূল বিধায়ক মদন মিত্র। ময়নাগুড়িতে। ছবি: দীপঙ্কর ঘটক
কেন্দ্রীয় বাহিনীকে ‘জল-বাতাসা’ খাওয়ানোর ‘নিদান’ দিলেন মদন মিত্র। জলপাইগুড়ির ময়নাগুড়িতে বুধবার ভোট-প্রচারে এসে উত্তর ২৪ পরগনার কামারহাটির তৃণমূল বিধায়ক মদনের মন্তব্য, ‘‘কেন্দ্রীয় বাহিনী থাকলেও তৃণমূল যদি মনে করে, বাংলা ফাঁকা করে দিতেপারবে। কেন্দ্রীয় বাহিনী কিছুই করতে পারবে না। ভোট ফুরোলেই বাহিনী চলে যাবে, থাকবে তৃণমূলই।’’ তাঁর সংযোজন: ‘‘কেন্দ্রীয় বাহিনী যদি ক্লান্ত হয়ে পড়ে, ওঁদের বসতে দেবেন। জল-বাতাসা দেবেন। ভাল করে অভ্যর্থনা করবেন। দিল্লিতে ফিরে গিয়ে ওঁরা যেন বলতে পারেন, মমতার লোকেরা আমাদের সঙ্গে ভাল ব্যবহার করেছেন।’’ জলপাইগুড়ির বিজেপি সাংসদ জয়ন্ত রায়ের মন্তব্য, ‘‘তিহাড়ে বন্দি অনুব্রত মণ্ডলের ফাঁক পূরণ করতে যতই মদন মিত্রদের মতো নেতাদের কাজে লাগানো হোক না কেন, মানুষ ওঁদের চেনেন। কী ভাবে ওঁদের ঘোল খাওয়াতে হয়, মানুষ সেটাও জানেন।’’
২০১৮-র পঞ্চায়েত ভোটে বিরোধীদের মনোনয়ন জমা দেওয়ায় বাধা দেওয়ায় অভিযুক্ত ছিল রাজ্যের শাসক দল। পাঁচ বছর পরে পরিস্থিতি বদলালেও ‘খুব উজ্জ্বল’ বলে মনে করেন না বিরোধীরা। মদনের অবশ্য মন্তব্য, ‘‘তৃণমূল যদি মনে করত, তা হলে অন্য কাউকে মনোনয়নপত্র পেশ করতে দেওয়া হত না। তৃণমূল গণতন্ত্রে বিশ্বাস করে। তাই সকলে মনোনয়নপত্র দাখিল করতে পেরেছেন।’’
রাজ্যপাল সি ভি আনন্দ বোসকে এ দিন কটাক্ষ করে মদন বলেন, ‘‘রাজ্যপাল বিজেপির এজেন্ট। ভোটের প্রচারে গিয়ে আক্রান্তদের রাজ্যপাল তাঁর বাড়িতেই রাখতে পারেন।’’ দলীয় কর্মীদের উদ্দেশে তাঁর বার্তা, ‘‘একটা মনমোহিনী দাওয়াই আপনাদের জন্য কানে কানে বলে যাব। ওই দাওয়াই ভোট করাতে কাজে লাগবে।’’ তবে কী সে ‘দাওয়াই’ তা অবশ্য প্রকাশ্যে বলতে চাননি তিনি। সে প্রসঙ্গে সাংসদ জয়ন্তের মন্তব্য, ‘‘ওঁদের কথার জবাব মানুষ দেবেন ব্যালটে।’’
জলপাইগুড়িতে দলের অন্দরের ‘গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব’ তৃণমূলের জেলা নেতৃত্বকে চিন্তায় রেখেছে। মদনের মন্তব্য, ‘‘আমরা সবাই একই নৌকার যাত্রী। দলের মধ্যে যাঁরা বেইমানি করবেন তাঁদের চিহ্নিত করে রাখতে হবে। দলে থেকে দলের সঙ্গে বেইমানি করা মেনে নেওয়া হবে না।’’ বুধবার সকাল থেকে ময়নাগুড়ি ব্লকের ব্যাঙকান্দি, দোমোহনি মোড়, আলসিয়া মোড়, পালনবাড়ি, চূড়াভান্ডার, লাল স্কুল মোড়, হুসলুডাঙা-সহ কয়েকটি এলাকায় প্রচারসভা ও র্যালিতে যোগ দেন মদন।