প্রতীকী ছবি।
কেউ প্রাক্তন প্রধান শিক্ষিকা। কেউ হয়তো নিজেকে রাজ পরিবারের সদস্য বলে দাবি করেন। কেউ থাকেন কোচবিহারে, কেউ কলকাতায়। কাউকে আবার নেতার ছায়াসঙ্গী হয়ে ঘুরতে দেখা গিয়েছে। সকলের একটাই আবেদন— ‘আমায় প্রার্থী করুন।’
লোকসভা ভোট যত এগিয়ে আসছে, রাজ্যের শাসকদল তৃণমূলের প্রার্থী হতে চেয়ে আবেদনের হিড়িক পড়েছে কোচবিহারে। নিজের জীবনীপঞ্জী বা বায়োডেটা-সহ ইতিমধ্যেই দু’জন তাঁদের আবেদনের কথা প্রকাশ্যে জানিয়েছেন। বাকিদের অনেকেই অবশ্য প্রকাশ্যে না জানালেও তাঁরা যে গোপনে আবেদন-নিবেদন করছেন, তা দলীয় সূত্রেই জানা গিয়েছে। সব মিলিয়ে লোকসভার প্রার্থী নিয়েই এখন তৃণমূলের অন্দরে নানা গল্প ঘুরে বেড়াচ্ছে। তৃণমূলের কোচবিহার জেলা সভাপতি তথা উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী রবীন্দ্রনাথ ঘোষ অবশ্য বিষয়টি নিয়ে কিছু বলতে চাননি। তিনি বলেন, “ওই বিষয়ে যা বলার দলনেত্রী বলবেন।” মুখে কুলুপ এঁটেছেন কোচবিহারের তৃণমূল সাংসদ পার্থপ্রতিম রায়।
গত লোকসভা নির্বাচনে কোচবিহার থেকে প্রার্থী হয়েছিলেন রেণুকা সিংহ। আড়াই বছরের মাথায় তিনি অসুস্থ হয়ে মারা যান। তার পরে লোকসভা উপনির্বাচনে তৃণমূল প্রার্থী হিসেবে জেতেন পার্থপ্রতিম রায়। এ বারে ফের লোকসভা ভোটের আবহ তৈরি হতেই কোচবিহার আসনে প্রার্থী হতে চেয়ে আবেদন শুরু করেন অনেকে। তাঁদের মধ্যে রয়েছেন সুনীতি অ্যাকাডেমি হাইস্কুলের প্রাক্তন প্রধান শিক্ষিকা ভূপালি রায়। তিনি বলেন, “মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে সরাসরি আবেদন করেছি। দিদি এ বারে সিদ্ধান্ত নেবেন। এ ছাড়াও তৃণমূলের দায়িত্বে থাকা অন্য নেতাদের কাছেও ওই চিঠির কপি দিয়েছি।” রাজ পরিবারের সদস্য হিসেবে পরিচয় দেওয়া কলিনারায়ণ মুখোপাধ্যায়ও প্রার্থী হতে চান। কোচবিহারের হাজরাপাড়ায় তাঁর বাড়ি থাকলেও তিনি কর্মসূত্রে টালিগঞ্জে থাকেন। তিনি বলেন, “তৃণমূলের রাজ্য সভাপতি সুব্রত বক্সী এবং কোচবিহার জেলা সভাপতি রবীন্দ্রনাথ ঘোষের কাছে আবেদন জমা দিয়েছি।”
দলীয় সূত্রের খবর, শুধু ওই দু’জন নয়। ওই তালিকায় নাম রয়েছে আরও অনেকেরই। যারা নিজেদের আবেদনের কথা প্রকাশ্যে আনেননি। তাঁর মধ্যে তৃণমূলেরই একজন বিধায়ক, একজন মহিলা নেত্রী, এক প্রশাসনিক আধিকারিক-সহ বেশ কয়েক জন রয়েছেন। দলের এক জেলা নেতার কথায়, “বিরোধী দলে থাকার সময় প্রার্থী খুঁজে পাওয়া যেত না। এক-দু’জনই ছিলেন, যাঁরা সাহস করে লড়াই করতেন। এখন দেখছি দলের সঙ্গে সবাই আছেন!’’ তবে তাঁর কথায়, ‘‘এটা খারাপ কিছু নয়।” বিরোধীরা অবশ্য কটাক্ষ করে বলেন, “সব আবেদনকারীকে নিয়ে তৃণমূল একটি লটারি করে দিতে পারে। তা হলে দেখা যাবে কার ভাগ্যে শিকে ছিঁড়বে!”