খগেন যেতেই ‘শূন্য’ঘর বামেরা

২০১১ সালে রাজ্যে পরিবর্তনের হাওয়াতেও মালদহের তিনটি বিধানসভা আসন বামেরা দখলে রেখেছিল। পঞ্চায়েতেও অস্তিত্ব টিকেছিল বামেদের। দলীয় সূত্রে খবর, ২০১৩ সালে জেলার ৩৮টি জেলা পরিষদের আসনের মধ্যে বামেরা পায় ১৬টি।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

মালদহ শেষ আপডেট: ১৬ মার্চ ২০১৯ ০৭:৪৬
Share:

রাজ্য থেকে বামেরা ক্ষমতাচ্যুত হয়েছে আট বছরের আগে। এরই মধ্যে মালদহে কার্যত ‘শূন্য’ হয়ে গেল বামেরা। দলের একমাত্র বিধায়ক খগেন মুর্মু বিজেপিতে যোগ দিতেই জেলায় বিধায়ক-শূন্য হয়ে পড়ল বামেরা। ফলে ভোটের মুখে অস্বস্তিতে জেলা বাম নেতারা। একই সঙ্গে লোকসভা নির্বাচনে মালদহের দু’টি আসনই কংগ্রেসকে ছেড়ে দেওয়ায় হতাশ হয়ে পড়েছেন জেলার নিচুতলার কর্মী-সমর্থকেরা।

Advertisement

২০১১ সালে রাজ্যে পরিবর্তনের হাওয়াতেও মালদহের তিনটি বিধানসভা আসন বামেরা দখলে রেখেছিল। পঞ্চায়েতেও অস্তিত্ব টিকেছিল বামেদের। দলীয় সূত্রে খবর, ২০১৩ সালে জেলার ৩৮টি জেলা পরিষদের আসনের মধ্যে বামেরা পায় ১৬টি। একাধিক পঞ্চায়েত সমিতি ও গ্রাম পঞ্চায়েতও ছিল তাদের দখলে। ২০১৬ বিধানসভা নির্বাচনে রাজ্যে আসন সমঝোতা করে লড়াই করে বাম-কংগ্রেস। তবে বাম-কংগ্রেসের আসন সমঝোতা রাজ্যে ধাক্কা খেলেও সাফল্য মিলেছে মালদহে। জেলার ১২টি আসনের মধ্যে বাম-কংগ্রেস পেয়েছিল ১১টি এবং একটি পেয়েছিল বিজেপি। আসন সমঝোতায় সাফল্য মিললেও বামেদের প্রাপ্তি ছিল তিনজন।

তবে ভাঙন শুরু হয় এর পরেই। গাজলের সিপিএমের বিধায়ক দীপালি বিশ্বাস, ইংরেজবাজারের বাম-কংগ্রেস সমর্থিত নির্দলের বিধায়ক যোগ দেন তৃণমূলে। ফলে পঞ্চায়েত নির্বাচনে অস্তিত্ব সঙ্কটে পড়ে বামেরা। কারণ, এ বার জেলা পরিষদের নির্বাচন হওয়া ৩৭টি আসনের কোথাও খাতা খুলতে পারেনি বামেরা। এমনকী, পঞ্চায়েত সমিতি, গ্রাম পঞ্চায়েত স্তরেও একক ভাবে দখল করতে পারেনি এক সময় রাজ্যে ৩৪ বছর ধরে ক্ষমতায় থাকা দল। পঞ্চায়েতে শূন্য হলেও হবিবপুরের বিধায়ক খগেন মুর্মূ ছিলেন বামেদের একমাত্র নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি। লোকসভা ভোটের শেষ মুহূর্তে খগেন বিজেপিতে যোগ দেওয়ায় বড় ধাক্কা খেল বামেরা। কারণ খগেন তিনবারের হবিবপুরের বিধায়ক। একইসঙ্গে, জেলা পরিষদের সদস্যও ছিলেন তিনি। খগেন নিজে বলেছেন, “সিপিএমে থেকে তৃণমূলের সঙ্গে লড়াই করা যাবে না। তাই বিজেপিতে যোগ দিয়েছি।”

Advertisement

লোকসভা ভোটের প্রাক্কালে দলের ভরাডুবিতে ছন্নছাড়া বাম কর্মী-সমর্থকেরা। সিপিএমের এক নেতা জানান, লোকসভা নির্বাচনেও কংগ্রেসের সঙ্গে তাদের আসন সমঝোতা হচ্ছে। ফলে মালদহের দু’টি আসনই ছেড়ে দিতে হচ্ছে কংগ্রেসকে। এমন করেই কর্মীদের মনোবল ভেঙে যাচ্ছে। বারবার লড়াই থেকে বিরত থাকলে জনপ্রতিনিধিদের মতো কর্মী সংখ্যাও কমে যাবে বলে তাঁর অভিমত। সিপিএমের জেলা সম্পাদক অম্বর মিত্র বলেন, “শূন্য থেকেই সবকিছুই শুরু হয়। তাই কেউ একজন গেলে দলের কোনও ক্ষতি হয় না। আশা করছি জেলায় দল ঘুরে দাঁড়াবে।”

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement