প্রতীকী ছবি
একে হাতে কাজ নেই। একটু একটু করে জমানো পয়সাও প্রায় শেষ। তার উপর বাড়ির মালিকের সাফ কথা, ১ মে-র মধ্যে বাড়িভাড়া না দিলে ব্যবস্থা নেবেন তিনি। সেই হুঁশিয়ারি অনুযায়ী, আজ, শুক্রবারই ভাড়া না দিলে হয়তো বাড়ি ছাড়তে হতে পারে। কিন্তু ভাড়া তো দূরের কথা, দু-বেলা খাবারই এখন অনিশ্চিত নয়ডায় আটকে পড়া কোচবিহারের কয়েকটি শ্রমিক পরিবার।
শ্রমিক দিবসের আগের দিন, বৃহস্পতিবার ফোনে তাঁদের কয়েকজনের কথায় আতঙ্ক ধরা পড়ল। তাঁরা জানালেন, শ্রমিক দিবসেই তাঁদের বাড়িছাড়া হতে হবে হয়তো। কিন্তু তাঁদের হাতে এখন টাকাপয়সা নেই বললেই চলে। কী করে বাড়িভাড়ার টাকা দেবেন, তা বুঝতে পারছেন না। বাড়ির মালিক তাঁদের জানিয়েছেন, বাড়ি সংস্কার থেকে বিদ্যুতের বিল সব খরচই তিনি ওই ভাড়ার পয়সায় মেটান। ওই টাকা না পেলে তাঁকে অসুবিধের মধ্যে পড়তে হবে। কিন্তু তাঁদের এই মুহূর্তের সঙ্কটটা বাড়ির মালিক একবারও বুঝছেন না বলে অভিযোগ কোচবিহারের নয়ারহটের আয়ুব আলি, খাইরুল ইসলাম, কিসামত দশগ্রামের সোলেমন হকেদের।
আয়ুব জানিয়েছেন, সবমিলিয়ে ওই বাড়িতে তাঁরা ২৮টি পরিবার রয়েছেন। কেউ কারখানায় রক্ষীর কাজ করেন। কেউ রাজমিস্ত্রির কাজ করেন। মাসে অনেকেই ২০-২২ হাজার টাকা আয় করেন। সে জন্যেই ওখানে আড়াই থেকে তিন হাজার টাকায় ঘর ভাড়া নিয়ে তাঁরা সেখানে থাকতে শুরু করেন। লকডাউন শুরু হতেই সবার কাজ বন্ধ হয়ে যায়। তাঁরা সরকার বা প্রশাসনের কাছে বারবার আবেদন-নিবেদন করলেও একদিন মাত্র ত্রাণের খাবার হাতে পেয়েছিলেন। আয়ুব বলেন, “এখন আমাদের হাতে টাকা নেই। লকডাউন ঘোষণা হয়ে যাওয়ায় বাড়ি ফিরতে পারিনি। সেক্ষেত্রে বাড়ি ভাড়া মিটিয়েই ফিরতাম। এখন তো কঠিন অবস্থা। এর মধ্যেই বাড়ির মালিক ভাড়া চাইছেন।”
খাইরুল-সোলেমানের দাবি, তাঁদের বাড়ি ফেরার ব্যবস্থা করা হোক। না হলে খাওয়া ও থাকার ব্যবস্থা করা হোক। তাঁদের কথায়, কিছুই যদি না করা হয় তাহলে তাঁরা এই বিভুঁয়ে বেঁচে থাকবেন কী করে। তাঁদের ওই সমস্যার কথা জানিয়ে স্থানীয় যুব লিগ কেন্দ্র ও রাজ্য সরকারের কাছে চিঠি পাঠিয়েছে বলে জানা গিয়েছে। একই অবস্থা কর্নাটকের মঙ্গলুরুতে। সেখানেও মাথাভাঙা, শীতলখুচির প্রচুর শ্রমিক আটকে পড়েছেন। কালিদাস বর্মণ বলেন, “কষ্টে আছি। বাড়ি ফেরার ব্যবস্থা করা হোক।”