lock down

লকডাউন না কি মানবিকতা, পথে নেমে দিশেহারা পুলিশ

কোচবিহারের পুলিশ সুপার সন্তোষ নিম্বালকর বলেন, “পুলিশ আইন মেনে কাজ করছে। সবাই যাতে লকডাউন মেনে চলেন সে বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।”

Advertisement

নমিতেশ ঘোষ

কোচবিহার শেষ আপডেট: ০৪ এপ্রিল ২০২০ ০৫:১৩
Share:

ভিড়: বাজার চলছে। কোচবিহার শহর সংলগ্ন ডাওয়াগুড়ি হাটে। শুক্রবার। নিজস্ব চিত্র

লকডাউনের শুরুতে ‘খোলা হাত’ পেয়েছিল পুলিশ। এক দিনের মধ্যেই লাঠিপেটা করে গোটা শহরকে পুরোপুরি লকডাউনে নিয়ে গিয়েছিল। তার পরেই শুরু হয় সমালোচনা। ‘বেঁধে দেওয়া’ হয় পুলিশের হাত। এক দিকে চাপ দেওয়া হচ্ছে যাতে ‘ফুল লকডাউন’ করতে ব্যবস্থা নেয় পুলিশ। অন্যদিকে সতর্ক করে দেওয়া হচ্ছে, পুলিশকে মানবিক হতে হবে। তার উপরে আনাজ-মাছ-মাংস-মুদি থেকে মিষ্টির দোকান খোলা রয়েছে। সব মিলিয়ে দিশেহারা অবস্থা পুলিশের। নিচুতলার পুলিশ কর্মীদের মধ্যে তা নিয়ে ক্ষোভও তৈরি হয়েছে। অনেকে সে ক্ষোভ উগরে দিচ্ছেন পুলিশ মহলে। কোচবিহারের পুলিশ সুপার সন্তোষ নিম্বালকর বলেন, “পুলিশ আইন মেনে কাজ করছে। সবাই যাতে লকডাউন মেনে চলেন সে বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।”

Advertisement

কেন পুলিশের মধ্যে ক্ষোভ দেখা দিয়েছে? পুলিশ কর্মীদের একাংশ জানান, যখন করোনাভাইরাসের আতঙ্কে সবাই ঘরবন্দি, সেই সময় পুলিশকর্মীরা মাঠে কাজ করছেন। পুলিশকর্মীরা যদি সবরকম সহযোগিতা না পায় সেক্ষেত্রে কাজ করা কঠিন। তাঁদের অভিযোগ, কিছু মানুষ অহেতুক রাস্তায় ঘুরে বেড়াচ্ছেন। তাঁদের মধ্যে কেউ কেউ সম্প্রতি পুলিশকর্মীদের সঙ্গে খারাপ ব্যবহারও করেছেন। তার পরেও তাঁদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে গিয়ে দু’বার ভাবতে হচ্ছে। জেলা পুলিশের এক ইন্সপেক্টর বলেন, “পুলিশকে অনেক কঠিন কাজ করতে হচ্ছে। কিন্তু সেই কাজে সহযোগিতা পাওয়া যাচ্ছে না। আমাদের নির্দেশ দেওয়া হচ্ছে ফুল লকডাউন করতে হবে। এ দিকে, অনেক দোকান খোলা। কাউকে সতর্ক করলেই মানবিকতার কথা বলা হচ্ছে। তা হলে কী ভাবে সব সম্ভব হবে?”

লকডাউনের শুরুর দিনে কোচবিহারে চায়ের আড্ডা, মদের আড্ডা থেকে শুরু করে কাজ ছাড়া রাস্তায় ঘুরে বেড়ানো বাসিন্দাদের বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নিয়েছিল পুলিশ। লাঠিপেটা করে কিছুক্ষণের মধ্যে শহর ফাঁকা করে দিয়েছিল। তার ফলও পাওয়া গিয়েছিল। অন্ততপক্ষে পরের দু’-তিন দিন সব ফাঁকা হয়ে গিয়েছিল। তার পরেই বেঁধে দেওয়া হয় পুলিশের হাত। তখন থেকেই সব উল্টে যেতে থাকে। কোচবিহার সদরের এক পুলিশ বলেন, “এখন তো অনেক জায়গায় আমাদের কথা কেউ শুনছেনই না। এটা আমাদের জন্যেও ভাল নয়।” দিন কয়েক আগে রাস্তায় কর্তব্যরত এক ডিএসপির সঙ্গে তর্ক জোড়েন এক ব্যক্তি। জেলা পুলিশের এক আধিকারিক বলেন, “আইন যাঁরা ভাঙছেন তাঁদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। কিন্তু আরও কড়া অবস্থানের নির্দেশ না মিললে ফুল লকডাউন সম্ভব নয়।”

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement