হাসপাতালেই মদের আসর

বাসিন্দারা জানিয়েছেন, রোগীর পরিজনদের একাংশের মাধ্যমে ওই ঘটনা জানাজানি হয়। তাদের একাংশের অভিযোগ, সন্ধে নামলেই ঢিলেঢালা নজরদারির সুযোগে কিছুটা অন্ধকারাছন্ন জায়গা বেছে নিয়ে এ ভাবেই মাঝেমধ্যে আসর বসাচ্ছেন কিছু যুবক।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

দিনহাটা শেষ আপডেট: ২২ ডিসেম্বর ২০১৭ ০২:৪০
Share:

আসর: এমন চিহ্নই মেলে হাসপাতাল চত্বরে। নিজস্ব চিত্র

হাসপাতালের চত্বরেই পাতা হয়েছে টেবিল। সেখানে সাজিয়ে রাখা একাধিক মদের গ্লাস। চানাচুর, ঝুরিভাজা, তেলেভাজার মত রকমারি খাবার। পাশেই ছোট গাড়িতে বাজছিল গান। জনা কয়েক যুবক গানের সঙ্গে তালমিলিয়ে গ্লাসে চুমুক দিচ্ছিলেন। দিনহাটা মহকুমা হাসপাতালের ভেতরে সংস্কারের কাজ চলা বর্হিবিভাগ ভবনের সামনে বুধবার রাতে এমনভাবেই মদের আসর বসানোর অভিযোগ উঠেছে।

Advertisement

বাসিন্দারা জানিয়েছেন, রোগীর পরিজনদের একাংশের মাধ্যমে ওই ঘটনা জানাজানি হয়। তাদের একাংশের অভিযোগ, সন্ধে নামলেই ঢিলেঢালা নজরদারির সুযোগে কিছুটা অন্ধকারাছন্ন জায়গা বেছে নিয়ে এ ভাবেই মাঝেমধ্যে আসর বসাচ্ছেন কিছু যুবক। বুধবারের ঘটনাটি প্রকাশ্যে এসেছে মাত্র। হাসপাতালে মদের আসর বসানোর ওই অভিযোগে অস্বস্তি বেড়েছে স্বাস্থ্যকর্তাদের। হাসপাতালের কাছেই থানা। ফলে শহরে বেআইনি মদের আসর বন্ধে পুলিশের ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। কোচবিহারের মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক সুমিত গঙ্গোপাধ্যায় বৃহস্পতিবার দিনহাটা মহকুমা হাসপাতালে যান।

সুমিতবাবু অবশ্য বলেন, “আমি অন্য কাজে গিয়েছিলাম। ওই ঘটনা বিক্ষিপ্ত ব্যাপার। পুলিশে অভিযোগ করা হয়েছে।” ওই হাসপাতালের রোগী কল্যাণ সমিতির চেয়ারম্যান উদয়ন গুহ বলেন, “দিনহাটায় ফিরেই প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেব।” বৃহস্পতিবার চিকিৎসক ও কর্মীদের নিয়ে বৈঠক করেন হাসপাতালের ভারপ্রাপ্ত সুপার উজ্জ্বল আচার্য। তিনি বলেন, “বহিরাগতরা গাড়ি নিয়ে এসেছিলেন। এটি বিচ্ছিন্ন ঘটনা। রোগী কল্যাণ সমিতির চেয়ারম্যান সহ ঊর্ধ্বতনদেরও জানিয়েছি। নজরদারি বাড়ানো হচ্ছে।”

Advertisement

বাসিন্দাদের একাংশের অভিযোগ, হাসপাতালে অবাধ যাতায়াত নিয়ন্ত্রণের কোনও উদ্যোগ নেই। তারপর বেসরকারি যানবাহনও যথেচ্ছভাবে পার্কিং করে রাখা হচ্ছে। কিছু বেসরকারি আম্বুল্যান্সও রাখা হয়। সেই সুযোগ নিয়েই পরিচিতদের সঙ্গে যোগসাজস করে নেশার আসর বসাচ্ছে একদল যুবক। এমনকী ঘটনা জানাজানি হওয়ার পর হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ যথেষ্ট তৎপর না হওয়া গাড়ি নিয়ে অভিযুক্তরা সবাই নিমেষে উধাও হয়ে যায়। পুলিশ জানিয়েছে, আগে ওরকম ঘটনা জানানো হয়নি। বৃহস্পতিবার হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ অভিযোগ দিয়েছেন। দিনহাটার এসডিপিও কুন্তল চট্টোপাধ্যায় বলেন, “আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

এ নিয়ে সরব হয়েছে রাজনৈতিক সংগঠনের নেতারা। সংগঠনের কোচবিহার জেলা সম্পাদক শুভ্রালোক দাস বলেন, “কর্তৃপক্ষের উদাসীনতায় বেসরকারি অ্যাম্বুল্যান্স কর্মীদের একাংশের মদতে কিছু সমাজ বিরোধী রোজ মদের আসর বসাচ্ছে। অভিযুক্তদের চিহ্নিত করে ব্যবস্থা নিতে স্মারকলিপি দেওয়া হয়েছে।” তৃণমূলের দিনহাটা শহর কমিটির কার্যকরী সভাপতি বিশু ধর বলেন, “বহিরাগতদের অবাধ যাতায়াত বন্ধে কড়া ব্যবস্থা দরকার।” তৃণমূল প্রভাবিত দিনহাটা বেসরকারি অ্যাম্বুল্যান্স চালক সমিতি অবশ্য ওই ঘটনার সঙ্গে তাদের একাংশের নাম জড়িয়ে দেওয়ার ক্ষুব্ধ। সমিতির সভাপতি রাজু হক বলেন, “ভিত্তিহীন অভিযোগ। খোঁজ নিয়ে দেখেছি ওই ঘটনার সঙ্গে আমাদের কারও কোনরকম যোগসূত্রই নেই।”

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement