প্রত্যাবর্তন: লিপিকাকে স্বাগত জানালেন অর্পিতা। নিজস্ব চিত্র
৬ মাসও কাটল না। রবিবার বিজেপি ছেড়ে ফের তৃণমূলে যোগ দিলেন জেলা পরিষদের সভাধিপতি লিপিকা রায়। ১৮ আসনের দক্ষিণ দিনাজপুর জেলা পরিষদে তাতে ১৪ জন থাকলেন তৃণমূল শিবিরে।
এ দিন বালুরঘাটের নিউমার্কেট এলাকায় তৃণমূল অফিসে জেলা সভাপতি অর্পিতা ঘোষের হাত থেকে ঘাসফুল পতাকা নিয়ে দলে ফেরেন লিপিকা। তিনি বলেন, ‘‘সিএএ ও এনআরসির প্রতিবাদে তৃণমূলে যোগ দিলাম। বিজেপিতে গিয়ে কোনও কাজ করতে পারিনি। এখন উন্নয়নের কাজ করবো।’’ তৃণমূলের দখল থেকে দক্ষিণ দিনাজপুর জেলা পরিষদ ‘ছিনিয়ে’ গত ২৪ জুন দিল্লিতে এক বিজেপি নেতা বলেছিলেন, ‘‘রাজ্যে ভূমিকম্প হল।’’
জেলা পরিষদের ১৮ জন সদস্যের মধ্যে ১০ জন তৃণমূল সদস্যকে সঙ্গে নিয়ে ওই দিন নয়াদিল্লিতে বিজেপিতে যোগ দেন লিপিকা। তার জেরে এ রাজ্যে প্রথম একটি জেলা পরিষদের ক্ষমতা দখল করেছিল বিজেপি। সভাধিপতি তৃণমূলে ফিরতেই জেলা পরিষদের বোর্ড পুরোপুরি তৃণমূলের দখলে ফিরল।
যাঁর হাত ধরে সভাধিপতির গেরুয়া শিবিরে যোগ, সেই প্রাক্তন তৃণমূল জেলা সভাপতি তথা বর্তমানে বিজেপি নেতা বিপ্লব মিত্রের অভিযোগ, ‘‘ক্রমাগত চাপে পড়ে লিপিকারা তৃণমূলে ফিরতে বাধ্য হলেন।’’ অর্পিতা অবশ্য বলেন, ‘‘চাপের কোনও বিষয় নেই। বিজেপিতে যোগ দেওয়া ১০ জন সদস্যের মধ্যে ৫ জন ভুল বুঝতে পেরে তৃণমূলে ফিরে আসেন। এর পরে লিপিকাও দলে ফেরার ইচ্ছা প্রকাশ করলে কথাবার্তা শুরু হয়।’’
দলীয় সূত্রে খবর, বালুরঘাট লোকসভা আসনে তৃণমূল প্রার্থী অর্পিতার হারের জেরে বিপ্লবকে তৃণমূল জেলা সভাপতির পদ থেকে সরিয়ে দেন দলনেত্রী। অর্পিতাকে জেলা সভাপতি করা হয়। এর পরেই বিপ্লবের হাত ধরে ২৪ জুন দিল্লিতে গিয়ে বিজেপিতে যোগ দেন সভাধিপতি। জেলা পরিষদে সংখ্যাগরিষ্ঠ হলেও সভাধিপতি বিরোধী বিজেপি শিবিরে থেকে যাওয়ায় পঞ্চায়েত আইনের জটিলতায় জেলায় উন্নয়নের কাজ থমকে গিয়েছিল বলে অভিযোগ।
তৃণমূল সূত্রে খবর, গত মাসে গঙ্গারামপুরে প্রশাসনিক বৈঠকে জেলা পরিষদ নিয়ে ক্ষোভপ্রকাশ করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি জেলাশাসক নিখিল নির্মলকে ‘উন্নয়নের কাজ থমকে রাখা যাবে না’ বলে নির্দেশ দিয়ে যান।
প্রশাসনিক সূত্রে খবর, জেলা পরিষদের ১৮ জন সদস্যর মধ্যে সভাধিপতিকে নিয়ে বর্তমানে তৃণমূলের সদস্যসংখ্যা ১৪ জন। ইতিমধ্যে সিএএ-র প্রতিবাদে পূর্ত কর্মাধ্যক্ষ মফিজউদ্দিন মিঁয়া বিজেপি ছেড়েছেন। তাঁর এবং দলত্যাগী আরও ৩ বিজেপি সদস্যের তৃণমূলে যোগ দেওয়া এখন সময়ের অপেক্ষা বলে দাবি করেছেন অর্পিতা।
এ নিয়ে বিজেপি জেলা সভাপতি বিনয় বর্মণ বলেন, ‘‘সভাধিপতি শাসক শিবিরে ফিরে গেলেও দলের কোনও ক্ষতি হবে না।’’