Haldibari Tea Garden

শুধু ভয়েই কি মারা হল, উঠল প্রশ্ন

‘বনবান্ধব উৎসবে’র শুরুর দিন থেকেই উত্তরের বনে ‘অঘটন’ ঘটে চলছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

ধূপগুড়ি শেষ আপডেট: ১৫ জানুয়ারি ২০২০ ০২:০২
Share:

প্রতীকী ছবি।

‘বনবান্ধব উৎসবে’র শুরুর দিন থেকেই উত্তরের বনে ‘অঘটন’ ঘটে চলছে। সোমবার কাঠ চোর সন্দেহে এক ব্যক্তির গুলিতে মারা যাওয়ার পর মঙ্গলবার উদ্ধার হল চিতাবাঘের দেহ।

Advertisement

ডুয়ার্সের মরাঘাট এবং হলদিবাড়ি চা বাগানের নর্দমা থেকে একটি মধ্যবয়স্ক চিতাবাঘের দেহ উদ্ধার করা হয়েছে। সেটির দেহ দেখে বনকর্মীদের ধারণা, সেটি তেমন হিংস্রও নয়। কারণ, যে এলাকা থেকে উদ্ধার হয়েছে সেখানে গত ৪৮ ঘণ্টায় এলাকাবাসীর উপর বন্যজন্তুর গুরুতর আক্রমণের কোনও খবরও নেই। ফলে প্রশ্ন উঠছেই, তা হলে কারা মারল চিতাবাঘটিকে? মুখের একাংশ থেতলে যাওয়ায় বনকর্মীদের কাছে এটা পরিষ্কার, সেটিকে পিটিয়েই মারা হয়েছে। বন দফতরের দাবি, নিয়মিত চা বাগানে বন্যপ্রাণ না মারার জন্য সচেতনতা অভিযান চালানো হয়। তার পরেও এমন কাণ্ড ঘটে যাওয়ায় নানা প্রশ্ন উঠেছে। বন্যপ্রাণী বিভাগের জলপাইগুড়ির ডিএফও নিশা গোস্বামী এ দিন বলেন, “চা বাগানে প্রতিনিয়ত সচেতনতা চালাতে হয়। আমরা সচেতনতা অভিযান চালাই নিয়মিত। আরও সচেতনতার প্রয়োজন রয়েছে।”

বন এবং বনবাসীদের সম্পর্ক নিবিড় করতে গত সোমবার থেকে উত্তরবঙ্গে শুরু হয়েছে ‘বনবান্ধব উৎসব’। যদিও মঙ্গলবারের ঘটনায় পরিবেশপ্রেমীদের একাংশ বন দফতরের দিকেই আঙুল তুলছেন। ডুয়ার্সের চা বাগানে চিতাবাঘের উপদ্রব নতুন কিছু নয়। তবে বাগানে বাঘ বেড়িয়েছে খবর পেয়েও অনেক সময়ে বনকর্মীদের পৌঁছতে দেরি হয় বলে অভিযোগ। সেক্ষেত্রে রাগ গিয়ে পড়ে বুনোটির ওপরেই, দাবি পরিবেশকর্মীদের।

Advertisement

ওই বাগানেরই এক শ্রমিক তথা বাসিন্দা বলেন, “প্রতি রাতে বাড়ির আশপাশ দিয়ে চিতাবাঘ ঘুরছে। কখনও হাতি চলে আসছে। বনদফতরকে খবর দিলে সময়মতো সেখানকার কর্মীরা আসেন না। এদের মারা কোনওমতেই উচিত নয়। কিন্তু নিজেদের প্রাণ বাঁচাতে বন্যপ্রাণীদের তাড়াতে এদের উপর আঘাত করতে বাধ্য হন গ্রামবাসীরা।”

দেরিতে পৌঁছনোর কথা মেনেছেন বনকর্মীদের একাংশ। তাঁদের পাল্টা যুক্তি, পরিকাঠামোই নেই দফতরের। জলপাইগুড়ি সম্মানিক বন্যপ্রাণ ওয়ার্ডেন সীমা চৌধুরী বলেন, “ক্ষোভের সব কথা বুঝলাম। কিন্তু সকলেরই ধৈর্য্য রাখতে হবে। বুনোদের দেখা মাত্রই বন দফতরকে দ্রুত খবর দেওয়া দরকার।’’

বন দফতরের দায়িত্ব নিয়ে পরিবেশকর্মীদের আরও অভিযোগ রয়েছে। সমাজসেবী নারায়ণ বিশ্বাস অভিযোগ করে বলেন, “জঙ্গল দিনের পর দিন চোরাশিকারী ও কাঠ মাফিয়াদের আস্তানা হয়ে উঠেছে। এর ফলে বাঘের খাবারের অভাব ও থাকার মতো পরিবেশ নষ্ট হয়ে গিয়েছে। এর ফলে বাধ্য হয়েই লোকালয়ের দিকে চলে আসছে বাঘ ও অন্য বন্যপ্রাণী। বন দফতরকে আরও দায়িত্ববান হয়ে এদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিতে হবে। বন্যপ্রাণীদের জন্য জঙ্গলে খাবারের খাবারের ব্যবস্থা করলে কোনও বন্যপ্রাণী লোকালয়ে আসবে না।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement