আহত কর্মী সুরিন্দর পাল সিংহ। নিজস্ব চিত্র
বেঙ্গল সাফারি পার্কের ভিতরেই চিতাবাঘের আক্রমণে গুরুতর জখম হলেন সেখানকার এক কর্মী সুরিন্দর পাল সিংহ। তাঁর গলায় চিতাবাঘটি কামড়েছে। বুকে এবং হাতে থাবা মেরেছে। তাঁকে প্রথমে শিলিগুড়ি জেলা সদর হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। পরে উত্তরবঙ্গ মেডিকেল কলেজে পাঠানো হয়েছে। সাফারি পার্কের কাছেই খোলাচাঁদ ফাপড়িতে তাঁর বাড়ি। পার্কের অধিকর্তা অরুণ মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘নজরদারি গাড়ির ওই চালক চিতাবাঘের বিচরণ ক্ষেত্রে গাড়ি থেকে কেন নেমেছিলেন তদন্ত করা হবে।’’
বনদফতর সূত্রের খবর, বুধবার বিকেল ৪টে নাগাদ সুরিন্দর সাফারির ভিতরেই ঘুরছিলেন। তিনি জানান, গাড়ির দরজা খুলে নেমে পাশে দাঁড়িয়েছিলেন। একটি চিতাবাঘ এসে তাঁর উপর ঝাঁপিয়ে পড়ে। কোনওমতে তিনি গাড়িতে উঠে দরজা বন্ধ করে দেন। ইতিমধ্যে খবর পেয়ে বনকর্মীরা তাঁকে প্রাথমিক চিকিৎসার পর শিলিগুড়ি হাসপাতালে নিয়ে যান।
বেঙ্গল সাফারি পার্কে পর্যটকেরা গেলে নিরাপদ লোহার খাঁচা দেওয়া গাড়ি করে ঘোরানো হয়। সেগুলির সঙ্গে একটি নজরদারি গাড়ি থাকে। তাতেও লোহার খাঁচা লাগানো থাকে। কারণ, কোনও সময় চিতাবাঘ বা রয়েল বেঙ্গল বাঘ আক্রমণ করতে পারে। পুজোর আগেই আরও এক বনকর্মী নজরদারি গাড়ি থেকে নেমে বেশ কিছুটা দূরে যান। গাছ থেকে লাফিয়ে এসে একটি চিতাবাঘ তাঁকে পায়ে কামড়ে দেয়। তিনি অবশ্য অনেকটাই সুস্থ।
এই অবস্থায় প্রশ্ন উঠেছে, যাঁরা পর্যটকদের নিরাপত্তা দেবেন, তাঁরাই নিয়ম ভেঙে গাড়ি থেকে নেমে পড়বেন কেন? পার্কের কর্তারা জানান, ওই কর্মী সুস্থ হলেই অনেক কিছু আরও স্পষ্ট হবে। তাঁরা সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজও খতিয়ে দেখছেন।
মুখ্যমন্ত্রীর নামকরণ করা রয়েল বেঙ্গল শাবক ইকা গত সপ্তাহেই বেঙ্গল সাফারি পার্কে মারা গিয়েছে। রোদের অভাবে তার গায়ে সংক্রমণ হয়েছিল বলে বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন। সে জন্য সম্প্রতি চিতাবাঘের থাকার জায়গায় মাথার উপরের ত্রিপলের শেডে রোদ আটকাচ্ছিল বলেই এরকম হয়ে থাকতে পারে বলে প্রাথমিক তদন্তে জানা গিয়েছে। তার পরে বাঘের থাকার জায়গায় ওই ত্রিপল খুলে নেওয়া হয়েছে।