কংগ্রেস-বরণে বাম নেতারাও

জোটের মঞ্চে প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীররঞ্জন চৌধুরীকে মালা পরানোয় সাহায্য করলেন সিপিএমের কর্মীরা। অধীরের জন্য গলা ফাটালেন তাঁরা।বুধবার দুপুরে মালদহের কালিয়াচক ২ ব্লকের মোথাবাড়ির প্রচারে অধীর যখন প্রচারে গনি খানের নাম তোলেন, তখনও বাম কর্মীদের কাছ থেকে স্বতঃস্ফূর্ত সমর্থন পেয়েছেন।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

মালদহ শেষ আপডেট: ০৭ এপ্রিল ২০১৬ ০৩:০৪
Share:

প্রদেশ সভাপতি অধীর চৌধুরীর সঙ্গে কংগ্রেস সাংসদ আবু হাসেম খান চৌধুরী। ছবি: মনোজ মুখোপাধ্যায়

জোটের মঞ্চে প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীররঞ্জন চৌধুরীকে মালা পরানোয় সাহায্য করলেন সিপিএমের কর্মীরা। অধীরের জন্য গলা ফাটালেন তাঁরা।

Advertisement

বুধবার দুপুরে মালদহের কালিয়াচক ২ ব্লকের মোথাবাড়ির প্রচারে অধীর যখন প্রচারে গনি খানের নাম তোলেন, তখনও বাম কর্মীদের কাছ থেকে স্বতঃস্ফূর্ত সমর্থন পেয়েছেন। অধীর বলেন, ‘‘প্রয়াত গনি খানের জেলায় লুঠ করতে এসেছে তৃণমূল নামক এক চোরের দল। এই দলকে আশ্রয় দেওয়া মানেই প্রয়াত গনি খানকে অস্মান করা।’’ মোথাবাড়ি কেন্দ্রের দাঁড়িয়েছেন বাম সমর্থিত কংগ্রেস প্রার্থী সাবিনা ইয়াসমিন। তবে এ দিনের বাম কংগ্রেস জোটকে তীব্র ভাষায় কটাক্ষ করেছেন তৃণমূল নেতৃত্ব। তৃণমূলের জেলা সভাপতি মোয়াজ্জেম হোসেন বলেন, ‘‘একক ভাবে লড়ার ক্ষমতা নেই দুই দলেরই। এমনকি সভা মঞ্চ ভরানোর জন্য তাঁদের লোকও জুটবে না। তাই দু’দল যৌথ ভাবে সমস্ত জায়গায় সভা করছে।’’ তাঁর দাবি, ‘‘তাতেও কোন কাজ হবে না। এই জোটের বিরুদ্ধে জবাব দেবেন মালদহের মানুষ।’’

জেলা জুড়েই বাম কংগ্রেস দুই দলই যৌথ ভাবে প্রচার, জনসভা এবং মিছিল করছেন। কখনও কংগ্রেসের জনসভায় হাজির হচ্ছেন সিপিএমের জেলা থেকে শুরু করে রাজ্য নেতৃত্ব। আবার কখনও কংগ্রেসের সভা, মিছিলে সামিল হচ্ছেন জেলা কংগ্রেস থেকে শুরু করে প্রদেশ নেতারা। এ দিন দুপুর ২টো থেকে কালিয়াচক ২ ব্লকের মোথাবাড়ি বিধানসভা কেন্দ্রের বাঙিটোলা মাঠে অনুষ্ঠিত হয় সাবিনা ইয়াসমিনের সমর্থনে জনসভা। প্রধান বক্তা ছিলেন প্রদেশ কংগ্রেসের সভাপতি অধীরবাবুই। সভার শুরু থেকেই জেলা কংগ্রেস নেতাদের পাশাপাশি মঞ্চে হাজির ছিলেন সিপিএমের জেলা সম্পাদক অম্বর মিত্র, সম্পাদক মন্ডলীর সদস্য নৈইমুদ্দিন শেখ সহ লোকাল কমিটির সম্পাদক এবং সদস্যরা।

Advertisement

এ দিন অধীরের সভা শুরু হওয়ার কথা ছিল বিকেল চারটেতে। কিন্তু তাঁর দেরি হওয়ার পরেও কংগ্রেস কর্মীদের পাশাপাশি অপেক্ষা করেছেন সিপিএম কর্মী-সমর্থকেরাও। পৌনে পাঁচটা নাগাদ হেলিকপ্টারে করে মাঠে ঢোকেন অধীর। সেই সময় লাল ঝান্ডা হাতে নিয়ে মাঠে দাঁড়িয়ে থাকা বাম কর্মী-সমর্থকেরাও অধীরের সমর্থনে স্লোগান দিতে শুরু করে দেন। অধীরকে দাঁড়িয়ে সংবর্ধনা দেন জেলার সিপিএম নেতা। কংগ্রেস নেতাদের সঙ্গে থেকে তাঁরাও প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতিকে মালা ও উত্তরীয় পরান। অধীর বলেন, ‘‘বাংলার মুখ্যমন্ত্রী চোর, বাটপারদের নেত্রী। এই দলকে রাজ্য থেকে সরাতে হবে। প্রথম দফার নির্বাচন হয়েছে জঙ্গল মহলে। সেখানে ২৫০টি বুথে এজেন্ট দিতে পারেনি তৃণমূল। বাম কংগ্রেস জোটের কাছে হারিয়ে যাবে তৃণমূল। তথন আমাদের গান গাইতে হবে তোমার দেখা নেই রে, তোমার দেখা নেই।’’

গত বিধানসভা ভোটে কংগ্রেস-তৃণমূল জোট প্রার্থী ছিলেন সাবিনা। সে বার ভোট পান ৪৭ হাজার ৪৬৬টি ভোট। সিপিএমের নৈমুদ্দিন শেখ পেয়েছিলেন ৪১ হাজার ৪৪৬টি ভোট। আর লোকসভা নির্বাচনে তৃণমূল প্রার্থী পেয়েছিলেন ২০ হাজার ২৯৬টি ভোট। কংগ্রেস ও সিপিএম প্রার্থীদের ভোটের যোগ ফল হল ৭১ হাজার ৬৬২টি ভোট।

এই জোটের অঙ্কে এবং কর্মী সমর্থকদের জোটে স্বস্তিতে রয়েছে কংগ্রেস ও বাম নেতৃত্ব। দক্ষিণ মালদহের সাংসদ আবু হাসেম থান চৌধুরী বলেন, ‘‘বামেদের সঙ্গে এক হয়ে আমরা লড়াই করছি। আমাদের একমাত্র উদ্দেশ্য হল তৃণমূলকে রাজ্য থেকে সরানো।’’ একই সুরে সিপিএমের অম্বরবাবু বলেন, ‘‘একের পর এক সভায় মানুষের উপস্থিতিতে জোটের পক্ষেই হাওয়ার ইঙ্গিত পাচ্ছি।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement