প্রতীকী ছবি।
গত দশ বছর রাজ্যে ক্ষমতায় থেকেও শিলিগুড়িতে পুরসভা দখল করতে পারেনি তৃণমূল। বিধানসভা ভোটে বিপুলভাবে জিতে শিলিগুড়ির দখলের লক্ষ্যে কাজ শুরু করে দিল রাজ্যের শাসক দল। ভোটের পর শিলিগুড়িতে দলবদল শুরু হল। শহরের অন্যতম পরিচিত দুই অবাঙালি মুখ তথা দীর্ঘদিনের বাম কাউন্সিলর কমল আগরওয়াল এবং রামভজন মাহাতো তৃণমূলে যোগ দিলেন।
এমনিতেই, শাসক দলে বরবার অবাঙালি সম্প্রদায়ের মধ্যে সংগঠন করা একাধিকবার ভোটে জেতা নেতা নেই বললেই চলে। আগামী পুরভোটের লক্ষ্যে তৃণমূলে কাজ শুরু তা বলেই নেতারা জানাচ্ছেন। বুধবার দলীয় দফতরে দলবদল কর্মসূচিতে গৌতম দেব, রঞ্জন সরকারেরা পাশে বসে দুই দলত্যাগী বাম নেতারা জানান, শিলিগুড়ির টানা উন্নয়নের জন্য তৃণমূলকেই প্রয়োজন। বামফ্রন্টের পক্ষে তা সম্ভব নয়।
গৌতম দেব বলেন, ‘‘শিলিগুড়ির সার্বিক উন্নয়নের লক্ষ্যে আমরা নতুন করে সংগঠিত হচ্ছি। সেখানে অনেকেই আমাদের পাশে আসছেন। আগামীতে আরও আসবেন। এদিন শহরের দুই অতি পরিচিত মুখ, দীর্ঘদিনের জনপ্রতিনিধি আমাদের সঙ্গে এলেন।’’ আর বামফ্রন্টের জেলার আহ্বায়ক জীবেশ সরকার বসেন, ‘‘ওঁরা ক্ষমতার আশেপাশে থাকতেই দল ছাড়লেন। আমরা বামপন্থীরা লড়াই করে আবার শহরে মাথা তুলে দাঁড়াব।’’
কমল আগরওয়াল দুই দশকের বেশি সিপিএম সদস্য। অবাঙালি অধ্যুষিত এলাকায় ১০ নম্বর ওয়ার্ড থেকে তিন দফায় কাউন্সিলর হয়েছেন। মেয়র পারিষদ, প্রশাসনিক বোর্ডের সদস্য ছিলেন। পেশায় আইনজীবী কমলবাবু অশোক ভট্টাচার্যের ঘনিষ্ট বলেই পরিচিত। তাঁর ভাই আইনজীবী মনোজ আগরওয়ালও এদিন তৃণমূলে যোগ দিয়েছেন। আর আরএসপির রামভজন মাহাতো পুরসভায় ডেপুটি মেয়র ছাড়াও মেয়র পারিষদ ছিলেন। অবাঙালি সংখ্যাগরিষ্ঠ ৩ নম্বর ওয়ার্ড থেকে তিন দফায় নিজে কাউন্সিলর ছাড়াও তাঁর স্ত্রীও একবার বাম কাউন্সিলর ছিলেন।
দলবদলের পর কমলবাবু বলেন, ‘‘আমি কিছু পেতে তৃণমূলে আসিনি। এখন পুরভোট নেই। কবে হবে তা-ও ঠিক নেই। বিজেপি বললেও যাইনি। অশোক ভট্টাচার্যকে শ্রদ্ধা করি। তাও বলছি, সিপিএমে থেকে উন্নয়ন এবং মানুষের কাজ করতে সমস্যা হচ্ছে।’’ আর রামভজনবাবু বলেন, ‘‘বাম নীতি ভাল। কিন্তু তা আর বাস্তবে লাগু করার ক্ষেত্রে রাস্তা দেখতে পাচ্ছি না। সেখানে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের যেভাবে কাজ করার চেষ্টা করছেন, তাতে আমরাও সামিল হলাম।’’
পুরসভার ৪৭টি ওয়ার্ডের মধ্যে এবার ভোটে তৃণমূল মাত্র ৭টি আসনে এগিয়ে। গত পুরভোটে জেতা আসনের থেকেও কম। গত কয়েক বছরে শিলিগুড়িতে অবাঙালিদের মধ্যে দলের গ্রহণযোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন চলছেই। দলের জেলা সভাপতি রঞ্জন সরকার বলেন, ‘‘আরও অনেকেই যোগাযোগ করছেন। সঠিক সময় সব সামনে আসবে।’’