সুনসান লস্করহাট বাজারে পুলিশ পিকেট। নিজস্ব চিত্র।
বাড়ি ভাঙচুরের প্রতিবাদ জানাতে দিনভর খুচরো মাছের বাজার বন্ধ রাখলেন তপনের লস্করহাটের মাছ ব্যবসায়ীরা। এ দিন সকাল থেকে লস্করহাট মোড় এলাকার বাজারে কোনও ব্যবসায়ী মাছ বিক্রি করতে আসেননি। ঘটনায় দোষীদের গ্রেফতার এবং ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীদের ক্ষতিপূরণের দাবি পূরণ না হলে তারা অনির্দিষ্টকালের জন্য লস্করহাট এলাকায় মাছ বিক্রি বন্ধের পথে যাবেন বলেও এ দিন দাবি করেছেন।
বৃহস্পতিবার মাছের ওজন নিয়ে এক খুচরো ব্যবসায়ীর সঙ্গে বিবাদের জেরে উন্মত্ত জনতা ব্যবসায়ীদের বাড়ির উপরে হামলা চালায় বলে অভিযোগ। এ দিন সকালে ক্ষতিগ্রস্ত মাছ ব্যবসীদের পক্ষ থেকে তপন থানায় ১৬ জন হামলাকারীর বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করা হয়। তবে থানা থেকে পুলিশ ওই অভিযোগের প্রাপ্তিস্বীকারের প্রতিলিপি দিতে চায়নি বলে অভিযোগ করে তারা তুমুল ক্ষোভ প্রকাশ করেন। ক্ষতিগ্রস্তদের অভিযোগ, ওই ঘটনায় পুলিশ হামলাকারীদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করতে চাইছে না। তাঁদের দাবি, হামলায় ক্ষতিগ্রস্ত অভিযোগকারী ব্যবসায়ীদের পুলিশ জানিয়েছে, তাদের অভিযোগ নিয়ে হামলাকারীদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করলে বুধবার হাটে মাছ বিক্রির ওজন নিয়ে আপত্তি তোলা বিরজু হেমব্রম ওরফে ধারুকে মারধরের অভিযোগের ঘটনাতেও তাদের বিরুদ্ধে পাল্টা মামলা দায়ের করতে হবে। জেলা পুলিশ সুপার অর্ণব ঘোষ অবশ্য বলেন, ‘‘ঘটনার অভিযোগ পেলে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’ এ দিন সন্ধ্যায় গোটা বিষয়টি নিয়ে পরবর্তী পদক্ষেপ করতে লস্করহাট এলাকার একাংশ ব্যবসায়ী সেখানে বৈঠকে বসেন। তবে পুলিশের তরফে কোনও সাড়া না পেলে ক্ষতিগ্রস্তরা আদালতের দ্বারস্থ হয়ে বিচার চাইবেন বলে সিদ্ধান্ত হয়েছে। ভাঙচুরে ক্ষতিগ্রস্ত তাপস বিশ্বাস বলেন, ‘‘আমি মাছ ব্যবসায়ী নই। হাতাহাতি থামাতে দুপক্ষকে শান্ত করতে এগিয়ে যাই। তার জেরে হামলাকারীরা বাড়ির যাবতীয় আসবাব ভেঙে বাসনকোসন ও সোনার গয়না লুঠ করেছে।’’
এ দিন এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, অনেক কাঁচা বাড়ির উপর টিনের ছাউনিও ক্ষতিগ্রস্ত। বাসিন্দাদের বক্তব্য, ‘‘ছাউনি অবধি ফালা ফালা হয়ে যাওয়ায় বর্ষায় চরম দুর্ভোগে পড়েছি।’’ ঘটনার পর ২৪ ঘন্টা কেটে গেলেও হামলায় ক্ষতিগ্রস্তদের পাশে পঞ্চায়েত ও প্রশাসন দাঁড়ায়নি বলে অভিযোগ। এ দিনও সুনসান লস্করহাট জুড়ে ছিল চাপা উত্তেজনা ও পুলিশের টহল।