প্রতীকী ছবি
ইংরেজবাজার পুরসভায় দলীয় ‘দ্বন্দ্ব’ মেটাতে নেতাদের ওয়ার্ড ভাগ করে দিয়েছেন তৃণমূলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তার আট দিন পরেই ফের প্রকাশ্যে পুরসভায় দলের কাউন্সিলরদের ‘দ্বন্দ্বের’ ছবি।
বৃহস্পতিবার দুপুরে ইংরেজবাজার পুরসভার অন্তর্বর্তী বাজেট বৈঠকের মধ্যেই তাঁর ঘনিষ্ঠ কাউন্সিলর হিসেবে পরিচিত প্রসেনজিৎ দাসকে সঙ্গে নিয়ে বেরিয়ে গেলেন কৃষ্ণেন্দুনারায়ণ চৌধুরী। অন্তর্বর্তী বাজেট বৈঠকের বৈধতা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন তিনি। যদিও নিয়ম মেনেই বৈঠক হয়েছে বলে জানিয়েছেন পুরপ্রধান নীহাররঞ্জন ঘোষ।
৪ মার্চ পুরাতন মালদহের সাহাপুরে দলের কর্মিসভা করেছিলেন মমতা। সেই বৈঠকে প্রকাশ্যেই মালদহে দলের ‘গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব’ নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেন তিনি। কৃষ্ণেন্দুকে ১, ৪, ৫, ৭, ৮, ৯, ১০, ১২, ১৯ ও ২৯ নম্বর ওয়ার্ডের দায়িত্ব দেন দলনেত্রী। নীহাররঞ্জনকে ৩, ৬, ১৫, ১৬, ১৭ ও ২৩, দুলাল সরকারকে ১৪, ২০, ২১, ২৪, ২৫, ২৭ ও ২৮, নরেন্দ্রনাথ তিওয়ারিকে ২২ ও ২৬, অম্লান ভাদুড়িকে ১১ ও ১৩, সুমলা আগরওয়াল এবং আশিস কুণ্ডুকে ২ ও ১৮ নম্বর ওয়ার্ডের দায়িত্ব দেওয়া হয়।
দলের নেতা-নেত্রীদের মধ্যে ওয়ার্ড বণ্টনের পরেও পরিস্থিতি কার্যত বদলায়নি বলে জানিয়েছেন দলেরই কাউন্সিলরদের একাংশ।
দলীয় সূত্রে খবর, এ দিন দুপুর ২টো নাগাদ ইংরেজবাজার পুরসভার কনফারেন্স হলে শুরু হয় অন্তর্বর্তী বাজেট বৈঠক। ভোট-নির্ঘণ্ট ঘোষণার পরেও যাতে সুষ্ঠু ভাবে পুরসভার কাজকর্ম চলে, সে জন্যই অন্তর্বর্তী বাজেট বৈঠক ডাকা হয়েছে বলে দাবি পুর-কর্তৃপক্ষের। তাঁদের দাবি, পুরসভায় প্রায় ১২০০ অস্থায়ী কর্মী রয়েছেন। তাঁদের বেতন, পুরসভার ন্যূনতম নাগরিক পরিষেবা স্বাভাবিক রাখতেই ওই বৈঠক ডাকা হয়।
ওই বৈঠকের বৈধতা নিয়েই প্রশ্ন তোলেন কৃষ্ণেন্দু। মিনিটদশেক বৈঠকে থাকার পরে বেরিয়ে যান তিনি। কৃষ্ণেন্দু বলেন, ‘‘পুরসভার ভোটের তারিখ এখনও ঘোষণা হয়নি। ভোট ঘোষণার পরই অন্তর্বতী বাজেট বৈঠক প্রশাসন ডাকতে পারে। তার পরে পুরসভায় আলোচনা হয়।’’ কিন্তু এ ক্ষেত্রে কোনও নিয়ম মানা হয়নি বলে দাবি করেন তিনি। তবে পুরপ্রধান নীহার বলেন, ‘‘পুরসভার আইন মেনেই বৈঠক ডাকা হয়েছে। সংখ্যাগরিষ্ঠ কাউন্সিলরের সম্মতিতেই অন্তর্বর্তী বাজেট বৈঠক করা হয়েছে।’’
পুরসভার বাজেট বৈঠক বা ‘বোর্ড অফ কাউন্সিলর’ বৈঠক— প্রায়ই নীহার-কৃষ্ণেন্দুর দ্বন্দ্বের বিষয় নিয়ে ক্ষুব্ধ শাসকদলের কাউন্সিলরদের একাংশও। তাঁদের বক্তব্য, ওই সব বৈঠকে মানুষের সমস্যার বিষয় নিয়ে আলোচনা করা যায় না। দলের ‘হেভিওয়েট’ কাউন্সিলরদের দ্বন্দ্বে বৈঠক ভেস্তে যায়। যদিও বৈঠক ভেস্তে যাওয়ার কথা মানেননি নীহার।