করলায় আবর্জনা। নিজস্ব চিত্র
রাজ্যের দূষিত প্রথম ১৭টি নদীর তালিকায় এ বার স্থান পেল জলপাইগুড়ির করলাও। রাজ্য দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদ বিভিন্ন জেলায় সমীক্ষা চালিয়ে দূষিত নদীগুলির তালিকা করেছে। পর্ষদের মাপকাঠি অনুযায়ী তালিকা তৈরি হয়েছে। তালিকায় তেরো নম্বরে রয়েছে করলা নদী। সম্প্রতি নদীর জলের উপরের দিকেই বড় মাছ ভাসতে দেখা যাচ্ছে। নদীর বুক জুড়ে জঞ্জাল-আবর্জনা ছড়িয়ে থাকে প্রায় সারা বছরই। ২০১১ সালে বিষকাণ্ডের পরে সারা রাজ্যের কাছেই করলা পরিচিতি পেয়েছিল। এবার দূষিত নদী হিসেবেও সরকারি তকমা পেল করলা। শুধু এই নদীটিই নয়, জলপাইগুড়ির আরও একটি নদী এই তালিকায় ঢুকে পড়েছে। সেটি হল তিস্তা। এই দুই নদী ছাড়াও উত্তরবঙ্গের মহানন্দা, কালজানি নদীও দূষিত তালিকায় রয়েছে।
পর্ষদ সূত্রের খবর, নদীগুলিকে দূষণমুক্ত করতেই এই তালিকা তৈরি হয়। প্রথম ১৭টি নদীর তালিকা করে রাজ্য তো বটেই, পুরসভা, গ্রাম পঞ্চায়েতগুলিকেও জানানো হয়েছে। দূষিত তালিকায় থাকা সব নদীর জলই হাতে-পায়ে ছোঁয়ানোর অযোগ্য। নদীগুলির জলে দ্রবীভূত অক্সিজেনের পরিমাণ অত্যন্ত কম। অন্তত করলার ক্ষেত্রে যে সেই দাবি ঠিক, তা সম্প্রতি স্থানীয় লোকজনেরাও দেখতে পাচ্ছেন। নদীগুলি যাতে দ্রুত দূষণমুক্ত করার পরিকল্পনা নেওয়া হয়, সেই লক্ষ্য সামনে রেখে তালিকা তৈরি হয়েছে। কিন্তু জলপাইগুড়িতে করলা নিয়ে কোনও উদ্যোগ চোখে পড়ছে না বলেই অভিযোগ।
পর্ষদ জানিয়েছে, করলার তুলনায় তিস্তায় দূষণ খানিকটা কম। তবে তিস্তার জলেও ক্ষতিকারণ কলিফর্ম ব্যাক্টেরিয়া পেয়েছে তারা। জলপাইগুড়ির একটি পরিবেশপ্রেমী সংগঠনের কর্মকর্তা সঞ্জীব চট্টোপাধ্যায় বলেন, “এতদিন আমরা বলেছি, এখন পর্ষদও বলছে। দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদ একটি সরকারি সংস্থা। তাদের রিপোর্ট নিশ্চয়ই প্রশাসনের কাছে রয়েছে। প্রশাসন কী পদক্ষেপ করে, এখন সেই অপেক্ষা করছি। তিস্তা-করলা দুই নদীতেই দূষণ-বিরোধী অভিযান না চালালে সেগুলি মজে, হারিয়ে যাবে।”
পর্ষদের রিপোর্ট পেয়েছে জলপাইগুড়ি পুরসভাও। পুর কর্তৃপক্ষের দাবি, নদীর মূল সমস্যা হল জলের প্রবাহ না থাকা। পুরসভার চেয়ারম্যান মোহন বসু বলেন, “পর্ষদের রিপোর্ট পেয়েছি। করলা নদীতে প্রবাহ না ফিরলে দূষণ ঠেকানো যাবে না। পুরসভার তরফে একটি অ্যাকশন প্ল্যান তৈরি করে রাজ্যের মাধ্যমে কেন্দ্রের কাছে পাঠানো হয়েছে। সেটি রূপায়িত হলেও নদী প্রাণ ফিরে পেত। যাই হোক, আমরা তবু নানা প্রকল্পের কথা ভাবছি।”