আশীর্বাদ: মেয়ে রাখির সঙ্গে কমল সরকার। নিজস্ব চিত্র
সকাল থেকেই বাড়িতে বাজছে্ সানাইয়ের সুর। এক দিকে তৈরি হচ্ছে ছাদনাতলা, কেউ ব্যস্ত অতিথি আপ্যায়নে। বাড়ির ছোট মেয়ের বিয়ে বলে কথা। কিন্তু ভোর থেকেই দেখা নেই কনের বাবার!
তিনি তখন ঘুরছেন নির্বাচনী প্রচারে। গত কয়েক দিনের মতো শনিবারও সেই রুটিন বদলায়নি কালিয়াগঞ্জ বিধানসভা কেন্দ্রের উপনির্বাচনের বিজেপি প্রার্থী কমল সরকারের। বাড়িতে ছোট মেয়ের বিয়ের দিনেও নয়।
শনিবারই ছিল প্রচারের শেষ দিন। ঘটনাচক্রে, এ দিনই কালিয়াগঞ্জের ধনকৈল গ্রাম পঞ্চায়েতের বালাস এলাকার বাসিন্দা কমলের ছোট মেয়ে রাখির বিয়ে ছিল। এ দিন দুপুরে কালিয়াগঞ্জ শহরে কমলের সমর্থনে প্রচার করেন ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব দেব। তার পরে কমলের বাড়িতে গিয়ে রাখিকে শুভেচ্ছা জানিয়ে আসেন তিনি। প্রচারের ফাঁকে সেই সময় বাড়িতে ফেরেন কমল। শুক্রবার রাতে রায়গঞ্জের বিজেপি সাংসদ তথা কেন্দ্রীয় মন্ত্রী দেবশ্রী চৌধুরীও কমলের বাড়িতে গিয়ে রাখিকে শুভেচ্ছা জানিয়ে তাঁর হাতে উপহার তুলে দেন।
কমলের কথায়, ‘‘প্রায় তিন মাস আগে মেয়ের বিয়ের দিন ঠিক হয়েছিল। তখন জানতাম না দল আমাকে প্রার্থী করবে বা ভোটের দু’দিন আগেই বিয়ের তারিখ পড়বে। প্রচারে ব্যস্ত থাকায় মেয়ের বিয়ের কোনও আয়োজনের কাজই করতে পারিনি। পরিজন-পড়শিরাই সব করেছেন।’’
এ দিন সকাল থেকে প্রচারের শেষ সময় বিকাল পাঁচটা পর্যন্ত মোস্তাফানগর, ভাণ্ডার, বোচাডাঙ্গা, রাধিকাপুর ও ধনকৈল গ্রাম পঞ্চায়েতের বিভিন্ন এলাকায় ঘুরে নির্বাচনী প্রচার চালান কমল। সন্ধ্যায় তিনি যখন বাড়ি ফেরেন, তখন অতিথি, প্রতিবেশি ছাড়াও দলীয় নেতা ও কর্মীদের ভিড়ে বিয়ের আসর জমজমাট। প্রতিবেশিরাই ভোজ রান্না ও অতিথিদের পরিবেশন করেন। রাত ১১টা নাগাদ রাখির বিয়ের লগ্ন ছিল। দিনের শেষে কমল বলেন, ‘‘ভোটের কাজে ব্যস্ত থাকায় নিজের হাতে মেয়ের আয়োজন করতে পারলাম না। একটু আক্ষেপ তো থাকবেই।’’
রাখি পুলিশের কনস্টেবল। করণদিঘি থানায় কর্মরত। তাঁর সঙ্গে প্রতিবেশি শিবেন দেবশর্মার বিয়ে হয়। তিনিও পুলিশে কাজ করেন। তিনি মালদহ জেলা পুলিশ লাইনে কর্মরত।
রাখির কথায়, ‘‘প্রচারে ব্যস্ত থাকায় বাবা আমার বিয়ের আয়োজনে সময় দিতে পারেননি। তবে উনি ভোটে জিতলে সেই দুঃখ কেটে যাবে।’’