মেডিক্যাল কলেজে ধুন্ধুমার, ভোগান্তি

আজ, বুধবার বহির্বিভাগে চিকিৎসকরা কর্মবিরতি করবেন বলে জানানো হয়েছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ১২ জুন ২০১৯ ০৫:৪৯
Share:

দুর্ভোগ: মঙ্গলবার রাতে উত্তরবঙ্গ মেডিক্যালে। ছবি: বিশ্বরূপ বসাক

কেউ কিডনির জটিল অসুখে ভুগছেন। কাউকে রেফার করা হয়েছে শিলিগুড়ি জেলা হাসপাতাল থেকে। এক রোগী গাছ থেকে পড়ে গেলে তাঁর মলদ্বারে চা গাছের ডাল ঢুকে রক্তক্ষরণ হচ্ছে। উত্তরবঙ্গ মেডিক্যালের জরুরি বিভাগে এমন রোগীদের নিয়ে গিয়ে পরিবারের লোকেরা দেখেন, সেখানে গেট আটকে আন্দোলন করছেন জুনিয়র চিকিৎসকদের একাংশ। তাঁদের হাতে কালো ব্যাজ। এনআরএসে ইনটার্ন চিকিৎসককে মারধরের প্রতিবাদে উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগের গেট আটকে পরিষেবা বন্ধ করে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে ওই চিকিৎসকদের বিরুদ্ধে। মঙ্গলবার আড়াইটের পর থেকে তার জেরে বিপাকে পড়েন রোগীরা। অনেকে রোগী নিয়ে ফিরে যান। তা নিয়ে হুলুস্থূল পড়ে যায়। হাসপাতালের সুপার ও ডিনের মতো বরিষ্ঠ চিকিৎসকেরাও জুনিয়রদের সমথর্ন করেন। এরই মধ্যে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি সামলাতে ব্যর্থ হয়। রোগীর লোকদের সঙ্গে জুনিয়র চিকিৎসকদের দফায় দফায় বচসা বাধে। লোকজন মারমুখী হয়ে উঠলে উত্তেজনা ছড়ায়। রাত সাড়ে আটটা অবধি এই পরিস্থিতি চললে শেষে ইট, বাঁশ নিয়ে জুনিয়র চিকিৎসকদের তাড়া করেন রোগীর আত্মীয় ও স্থানীয় লোকেরা। ডাক্তাররা তখন জরুরি বিভাগ ছেড়ে চলে যান। তখন পুলিশকে ঘিরে বিক্ষোভ দেখান রোগীর আত্মীয়রা। আজ, বুধবার বহির্বিভাগে চিকিৎসকরা কর্মবিরতি করবেন বলে জানানো হয়েছে।

Advertisement

জুনিয়র ডাক্তার অ্যাসোসিয়েশনের উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল ইউনিটের সভাপতি সাগ্নিক মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘আমাদের সঙ্গে সিনিয়ররাও রয়েছেন। এক জন চিকিৎসককে ভয়ঙ্কর ভাবে মারধর করা হয়েছে। তার জন্য প্রতিবাদ করা হচ্ছে। অনির্দিষ্ট কালের জন্য জরুরি বিভাগ বন্ধ করা হয়েছে। তবে যারা অত্যন্ত মুমূর্ষু রোগী মৃত্যুর সঙ্গে লড়াই করছে, অন্য জায়গায় পাঠানো যাবে না, তাঁদের ভর্তি করছি।’’

হাসপাতালের সুপার কৌশিক সমাজদার, ডিন সন্দীপ সেনগুপ্তরা গেলেও পরিস্থিতি বদলায়নি। পুলিশ গিয়ে বারবার বোঝানোর চেষ্টা করে। জরুরি বিভাগের গেট খুলে দিতে বলে। তাতে কেউ কান দেয়নি।

Advertisement

পরে জুনিয়র চিকিৎসকরা জানান, জরুরি বিভাগ বন্ধ থাকলেও দু’জন পিজি চিকিৎসক এবং দু’জন জুনিয়র চিকিৎসক গেটের বাইরে রোগীদের পরীক্ষা করবেন। যাঁদের অবস্থা খুবই সঙ্কটজনক তাঁদের ভর্তি করানো হবে। হাসপাতালের সুপার বলেন, ‘‘চিকিৎসকরা মার খাচ্ছে। তাই প্রতিবাদে নামা হয়েছে। তবে জরুরি পরিষেবা যাতে মেলে তা দেখা হচ্ছে।’’ ডিন বলেন, ‘‘চিকিৎসকরা আর কত দিন মার খাবেন! তাঁরাও তো মানুষ। সব চিকিৎসকই প্রতিবাদ করছেন।’’ এ দিন হাসপাতালের নিরাপত্তা নিয়ে রোগী কল্যাণ সমিতির বৈঠকেও হইচই করেন ডিন-সহ জুনিয়র চিকিৎসকেরা। দুপুরে চিকিৎসক, জুনিয়র ডাক্তার, পড়ুয়ারা প্রতিবাদ মিছিল করেন।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement