ক্ষোভের আঁচ

ম্যাডামও আক্রান্ত! মেনে নেব কী করে

পড়ুয়াদের বাঁচাতে গিয়ে সুচরিতা ম্যাডাম (সেন) আহত হয়েছেন শুনেই মনখারাপ হয়ে গিয়েছিল। জেএনইউ প্রাক্তনীদের হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে ওঁর রক্তাক্ত ছবি ভাইরাল হয় মুহূর্তে। সোমবার সকালেই ম্যাডামকে এসএমএস করেছি। শুনলাম, উনি এখন সুস্থ রয়েছেন।

Advertisement
শেষ আপডেট: ০৭ জানুয়ারি ২০২০ ০৩:৩০
Share:

অরিজিৎ দাস জেএনইউ-এর প্রাক্তনী, গৌড়বঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূগোলের শিক্ষক

কিছুতেই মেনে নিতে পারছি না। বিশ্ববিদ্যালয় চত্বরে কী করে হামলা চালাল বহিরাগতেরা!

Advertisement

পড়ুয়াদের বাঁচাতে গিয়ে সুচরিতা ম্যাডাম (সেন) আহত হয়েছেন শুনেই মনখারাপ হয়ে গিয়েছিল। জেএনইউ প্রাক্তনীদের হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে ওঁর রক্তাক্ত ছবি ভাইরাল হয় মুহূর্তে। সোমবার সকালেই ম্যাডামকে এসএমএস করেছি। শুনলাম, উনি এখন সুস্থ রয়েছেন।

জওহরলাল নেহরু বিশ্ববিদ্যালয়ে আন্দোলন হয় কেন— আগে তা বুঝতে হবে। দেশের সংস্কৃতির প্রতিফলন হয় সেই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে। জাতি-ধর্ম-বর্ণের মেলবন্ধনের সে এক বাস্তব চেহারা। বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি প্রক্রিয়াই একেবারে আলাদা। মহিলাদের পড়াশোনার বিশেষ সুযোগ রয়েছে সেখানে। মেধার ভিত্তিতে সমাজের বিভিন্ন শ্রেণির পড়ুয়ারা সেখানে সমান গুরুত্বের। সে জন্যেই আমার মতো অনেক সাধারণ পরিবারের ছেলেমেয়েদের শিক্ষার পীঠস্থান জেএনইউ।

Advertisement

সেই বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রীনিবাসে ঢুকে হামলা হল!

শুনেছি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ভর্তির ফি বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। তা চালু হলে প্রতি মাসে হাজার হাজার টাকা খরচ করতে হবে ছাত্রছাত্রীদের। তা হলে সাধারণ ঘরের পড়ুয়ারা কী করে সেখানে পড়তে পারবে? তারই প্রতিবাদে শান্তিপূর্ণ ভাবে বিশ্ববিদ্যালয়ে আন্দোলন চলছিল বলে শুনেছি। সেই শান্তিপূর্ণ আন্দোলনকে কাজে লাগাল সমাজের এক শ্রেণির মানুষ। বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসে ঢুকে বহিরাগতেরা হামলা চালাল।

একটা বিষয় স্পষ্ট হওয়া দরকার। বহিরাগতদের হামলায় সমস্যার সমাধান হবে না। কর্তৃপক্ষের মতো পুলিশের ভুমিকাও ভাবাচ্ছে। খবরে শুনেছি পুলিশ বহিরাগতদের নিরাপত্তা দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস থেকে বের করে নিয়ে যাচ্ছে। তাতে বোঝা যাচ্ছে, দেশের মতো বদলে যাচ্ছে জেএনইউ-এর পরিস্থিতিও।

আমি কৃষক পরিবারের ছেলে। বর্ধমানের আউশগ্রাম ২-এর উত্তর রামনগর গ্রামে আমার পৈতৃক বাড়ি। প্রত্যন্ত সেই গ্রাম থেকেই গিয়েছিলাম জেএনইউ-এ। সালটা ছিল ২০০৭। পাঁচ বছর কেটেছে সেখানে। গ্রামের ছেলে হওয়ায় কিছু সমস্যার মুখে পড়েছিলাম। সেই সময় আমার পাশে দাঁড়িয়েছিলেন ‘সেন্ট্রাল ফর দি স্টাডি অফ রিজিওন্যাল ডেভেলপমেন্ট’-এর অধ্যাপক সুচরিতা সেন। তাঁর পরামর্শ আমার ছাত্রজীবনে অনুপ্রেরণা হিসেবে কাজ করেছে।

ম্যাডামের উপরেও এ ভাবে হামলা মেনে নেব কী করে?

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement