আকাশছোঁয়া: জামাই ষষ্ঠীর আগে আলিপুরদুয়ারের বড়বাজারে ইলিশ মাছ। ছবি: নারায়ণ দে
জামাইষষ্ঠী আর পাতে ইলিশ পড়বে না তা কি হয়? চাহিদা মেটাতে তাই কাঁচা ইলিশের সঙ্গে গুদামজাত ইলিশও চলে এসেছে বাজারে। দুটোর দামই অবশ্য বেশ চড়া। একটু বড় মাপের কাঁচা ইলিশ দেড় থেকে দু’হাজার, গুদামজাত ইলিশ এক হাজার টাকা কিলোয় বিকোচ্ছে। সেই সঙ্গে বিক্রি হচ্ছে ভেটকি, চিতল, বোয়াল, কাতলা, রুই, চিংড়ি। সবই পাঁচশ থেকে হাজারের মধ্যে, রুই-কাতলার দাম তুলনায় একটু কম।
শনিবারই কোচবিহারের ভবানীগঞ্জ বাজারে ইলিশ কিনতে হাজির হয়েছিলেন সরোজ রায়। বললেন, “কাঁচা ইলিশই পছন্দ। খুব কম উঠেছে দেখলাম। দেড় হাজারের কিছু বেশি দিয়ে কিনতে হল। কী আর করব। বছরে একবার জামাইকে খাওয়াবো, ইলিশ তো লাগবেই।”
জামাইষষ্ঠী মানেই উত্তরবঙ্গের কোচবিহারে সকালের পাতে আম-দই-চিঁড়ে সঙ্গে মিষ্টি থাকবেই। দুপুরের পাতে সুগন্ধী চালের ভাত, সঙ্গে একটু ভাজা, মাছের মাথা দিয়ে ডাল আরও কিছু রকমারি পদ, সঙ্গে ইলিশ পাতুড়ি বা ইলিশ ভাপা বা ইলিশ সরষে, একটু কচি পাঠার মাংস। শেষ পাতে চাটনি, মিষ্টি-দই। শনিবারই মাছের বাজারে ভিড় জমে গিয়েছিল। আনাজপাতি, চাল, আম কিনে নিয়েছেন অনেকে। রবিবার জামাইষষ্ঠী। ওই দিন সকালে ভবানীগঞ্জ বাজার তো বটেই, শহরতলি-গ্রামের বাজারেও উপচে পড়বে ভিড়। অন্য দিনের তুলনায় সব জিনিসই একটু বেশি দামে কিনতে হবে, তা ধরে নিয়েছেন সবাই। সে ভাবেই তৈরি হয়েছে বাজেট। একটু অস্বচ্ছল পরিবারের কর্তাদের অবশ্য বাজেট করতে গিয়ে বেশ চাপে পড়ে যেতে হয়েছে। তেমনই এক কর্তার কথায়, “কোন জিনিসটা বাদ দেব বলুন তো। সবই তো নিতে হয়। তাতে এক দিনে অন্ততপক্ষে পাঁচ হাজার টাকার বাজার করতে হয়। এটা সম্ভব?”
কোচবিহারে মূলত গঙ্গার ইলিশ বিক্রি হয়। সেই ইলিশ পাওয়া এখন খুবই কঠিন। কারণ ইলিশ এখনও সেভাবে জালে পড়তে শুরু করেনি। কাঁচা ইলিশের মায়ানমারের পথ অবশ্য খোলা। সেই দেশ থেকেই ভারতে পৌঁচ্ছেছে ইলিশ। তা যাচ্ছে কোচবিহারে বাজারেও। সেই ইলিশের স্বাদ অবশ্য তেমন নেই। আবার পদ্মার ইলিশ বাংলাদেশ থেকে চোরাপথে সীমান্ত টপকে পৌঁছে যায় কোচবিহারে। এ বারও খুব অল্প পরিমাণে তা আসছে। আর তা নিয়ে শুরু হয়েছে কাড়াকাড়ি। এমন অবস্থায় বাজার ধরে রেখেছে গুদামের ইলিশ। ভবানীগঞ্জ বাজারের মৎস্য ব্যবসায়ী রাজেশ মাহাতো বলেন, “জামাইষষ্ঠীতে ইলিশ থেকে শুরু করে সব মাছের চাহিদা বেশি থাকে। তাই দাম বেড়ে যায়। এ বারও তা হয়েছে।”
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, Twitter এবং Instagram পেজ।