শুক্রবার রাতে ঠেক ভেঙে দিয়ে তাতে আগুন ধরিয়ে দিলেন এক দল মহিলা। —নিজস্ব চিত্র।
বাড়ির অদূরে মদ-জুয়ার ঠেক নিয়ে দীর্ঘদিন ধরেই অশান্তি ছিল। তবে তা নিয়ে একাধিক বার প্রতিবাদেও সুরাহা হয়নি এলাকার এক মহিলার। এমনই অভিযোগ জলপাইগুড়ির ৪ নম্বর রেল গুমটি এলাকার বাসিন্দাদের। তাঁদের আরও অভিযোগ, ভাইফোঁটার দিনে ওই প্রতিবাদী মহিলা-সহ তাঁর স্বামী-শাশুড়ির উপর ছুরি নিয়ে হামলা চালান ওই ঠেকের মালিক। শুক্রবার রাতে ওই ঠেকে ভাঙচুর চালিয়ে তা ভেঙে দিয়ে তাতে আগুন ধরিয়ে দিলেন এক দল মহিলা। এই ঘটনায় দু’পক্ষের তিন জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
স্থানীয় মহিলাদের দাবি, ৪ নম্বর রেল গুমটি এলাকায় মদ-সহ নানা মাদক এবং জুয়ার ঠেক চালান গাঠুগোপাল ওরফে গোপাল দাস নামে এক ব্যক্তি। বসতি এলাকায় এ ধরনের ঠেক সরানোর কথা বললেও তাতে কাজের কাজ হয়নি। উল্টে এ নিয়ে প্রতিবাদ করতে গিয়ে হেনস্থার মুখে পড়েছেন শ্রেয়া বিশ্বাস নামে এলাকার এক মহিলা ও তাঁর পরিবারের সদস্যেরা।
শুক্রবার রাতে ঝামেলা চরম আকার নেয়। ঘটনার সূত্রপাত, ভাইফোঁটার দিন সন্ধ্যায়। অভিযোগ, ভাইফোঁটা দিতে বোনের বাড়িতে যাওয়ার পথে মদের ঠেকের রাস্তায় ছুরিকাহত হন শ্রেয়ার স্বামী শুভ বিশ্বাস। রেয়াত করা হয়নি শ্রেয়া ও তাঁর শাশুড়িকেও। ওই দুই মহিলা প্রতিবাদ করলে প্রথমে তাঁদের হাতে ও পেটে ছুরি দিয়ে আঘাত করে গাঠুগোপাল। তাঁদের বাঁচাতে গেলে মাটিতে ফেলে মারা হয় শুভকে। রক্তাক্ত অবস্থায় লুটিয়ে পড়েন শুভ। তাঁর চিৎকার শুনে ছুটে আসেন স্থানীয় বাসিন্দারা। এর পর তাঁদেরকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।
শ্রেয়া জানিয়েছেন, তাঁর স্বামীর মাথায় ১৪টি এবং আঙুলে চারটি সেলাই পড়েছে। শ্রেয়ার অভিযোগ, ছুরি দিয়ে হামলা চালালেও তাঁদের বিরুদ্ধে মারধর করার মিথ্যে অভিযোগ দায়ের করেছেন গাঠুগোপাল। গাঠুগোপালের বিরুদ্ধে হামলার অভিযোগ করে শ্রেয়া বলেন, ‘‘আমার স্বামীকে কেন বিনা দোষে মারধর করা হল?’’
শনিবার এ নিয়ে দু’পক্ষই কোতোয়ালি থানার দ্বারস্থ হয়েছে। পুলিশ সূত্রে খবর, মারপিটের ঘটনায় দু’পক্ষেরই অভিযোগ জমা পড়েছে। সেই সঙ্গে তিন জন গ্রেফতার হয়েছে। তবে পুলিশের ভূমিকায় ক্ষুব্ধ এলাকার মহিলারা। এক মহিলা বলেন, ‘‘মহিলার উপর হামলা সত্ত্বেও গাঠুগোপালের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ করেনি পুলিশ। উল্টে আমাদের ফাঁসানো হয়েছে। এর প্রতিকার না হলে ভবিষ্যতে আমরা ধর্নায় বসব।’’