নির্যাতিতার মৃত্যুর পর সিবিআই তদন্তের দাবি করেন তাঁর বাবা। প্রতীকী ছবি।
নির্যাতিতার মৃত্যুর পরই সিবিআই তদন্তের দাবি তুলেছিল তার পরিবার। দু’দিনের মাথাতেই সেই দাবি থেকে সরে এলেন সেই নাবালিকার বাবা। বুধবার তিনি বললেন, “মেয়ের মৃত্যুর পর আমার মাথার ঠিক ছিল না। এখন দেখছি পুলিশ ভালই কাজ করেছে। অভিযুক্তদের ধরেছে। তাই এখন সিবিআই তদন্ত চাইছি না। জেলা পুলিশই অভিযুক্তদের কঠোর শাস্তি দিক। তা হলেই আর কোনও বাবা-মায়ের কোল খালি হবে না।” যদিও মেয়ের মৃত্যুর আগে পর্যন্ত পুলিশের তদন্তে বারবার অনাস্থা জানান তিনি।
ওই নাবালিকাকে ধর্ষণের চেষ্টায় অভিযুক্তদের নাম না করতে তাকে সম্প্রতি হুমকি দেওয়া হয়েছিল বলে অভিযোগ। পরিবারের বক্তব্য, তার বাবা-মাকে এবং তাকেও মেরে ফেলার হুমকির জেরে গায়ে আগুন লাগিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করে নাবালিকা। গুরুতর অবস্থায় তাকে হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। তখন থেকেই পুলিশের তদন্ত নিয়ে বারবার অসন্তোষ প্রকাশ করেন নাবালিকার বাবা। এর পর সোমবার নাবালিকা মারা যাওয়ার পরেই তিনি এই ঘটনায় সিবিআই তদন্তের দাবি করেন। এই পরিস্থিতিতে আচমকা তাঁর এই মত বদলের পিছনে রাজনীতিই দেখছে বিরোধীরা। তাদের বক্তব্য, শাসক দলের চাপেই সিবিআই তদন্তের দাবি থেকে সরে এসেছে নাবালিকার বাবা। তবে নাবালিকার বাবার মত বদলে স্বভাবতই স্বস্তিতে রাজ্যের শাসক দল। ২ মে এই মামলার তদন্ত রিপোর্ট হাই কোর্টে জমা দেওয়ার কথা। এর আগের শুনানিতে হাই কোর্টও মামলার তদন্ত-ভার জেলা পুলিশের
উপরেই রেখেছিল।
এ দিন নাবালিকার বাবা বলেন, “হাসপাতালে শুয়ে মেয়ে বারবার বলে গিয়েছে, দোষীরা যেন কঠোর শাস্তি পায়। আমি চাই পুলিশ ওদের শাস্তি দিক।” জলপাইগুড়ির জেলা পুলিশ সুপার দেবর্ষি দত্ত বলেন, “কে কী বলেছেন সে বিষয়ে কোনও কথা বলতে পারব না। তবে প্রথম থেকেই বলছি তদন্ত ঠিক পথে এগোচ্ছে। অভিযুক্তেরা ধরা পড়েছে।”
বিজেপির জেলা সভাপতি বাপি গোস্বামীর মন্তব্য, “রাজ্যের শাসক দলের চাপে পড়েই মৃত নাবালিকার বাবা সিবিআই তদন্ত থেকে সরলেন। আমরা চাই, আদালতের নজরদারিতে তদন্ত হোক।” তৃণমূলের ব্লক সভাপতি শিবশঙ্কর দত্ত বলেন, “প্রথম থেকেই বলা হয়েছিল দোষীদের রেয়াত করবে না দল। পুলিশ দ্রুত তদন্ত করেছে। সে কথা নাবালিকার বাবা বুঝতে পেরেছেন। সেই কারণেই হয়ত তিনি আস্থা প্রকাশ করেছেন।”