tea gardens

বাগানে বিক্রি হবে সস্তায় পুষ্টিকর খাবার

জলপাইগুড়ির জেলাশাসক মৌমিতা গোদারা বসু বলেন, “এটা একটা পরীক্ষা বলা যেতে পারে। জেলার তিনটে চা বাগান দিয়ে শুরু হচ্ছে।

Advertisement

অনির্বাণ রায়

জলপাইগুড়ি শেষ আপডেট: ০১ জুন ২০২৩ ০৬:৩৫
Share:

চা বাগানে সস্তায় পুষ্টিযুক্ত খাবার বিক্রির ব্যবস্থা। — ফাইল চিত্র।

চা বাগানে ‘অপুষ্টির ছায়া’ রয়েছে, কার্যত মেনে নিয়েই চা শ্রমিকদের বিষয়ে জলপাইগুড়ি জেলা প্রশাসন এক নতুন পরীক্ষা শুরু করতে চলেছে। বাগানে টিফিনের সময় এবং ছুটির পরে, চা বাগানে সস্তায় পুষ্টিযুক্ত খাবার বিক্রির ব্যবস্থা করতে চলেছে প্রশাসন। চলতি মাস থেকে সে খাবার বিক্রি শুরু হবে। যে খাবারের তালিকায় থাকছে বিটের কাটলেট থেকে কুলেখাড়া শাকের পকোড়ার মতো পদ, যেগুলির পুষ্টিগুণ বেশি।

Advertisement

জলপাইগুড়ির জেলাশাসক মৌমিতা গোদারা বসু বলেন, “এটা একটা পরীক্ষা বলা যেতে পারে। জেলার তিনটে চা বাগান দিয়ে শুরু হচ্ছে। সাফল্য মিললে, সব বাগানেই শুরু করা হবে।”

প্রশাসনের সামনে এখন প্রশ্ন, চা শ্রমিকেরা কি দাম দিয়ে আদৌ এই সব খাবার কিনে খাবেন? জেলা প্রশাসন সূত্রের খবর, শ্রমিকদের সাধ্যের মধ্যেই রাখার চেষ্টা করা হবে খাবারের দাম। আপাতত স্থির হয়েছে, প্রতিটি পদের দাম হবে অত্যন্ত কম। দশ টাকা বা তার কমে খাবার বিক্রির সিদ্ধান্ত নিয়েছে প্রশাসন। যদিও প্রশাসনের দাবি, এর পরেও যদি চা শ্রমিকেরা খাবার না কিনতে পারেন, তবে প্রকল্পটি বন্ধ করে দেওয়া হবে। যদি শ্রমিকেরা আগ্রহ দেখান, তা হলে জেলার সব চা বাগানেই এই ‘মডেল’ চালু হবে।

Advertisement

জেলা প্রশাসন সূত্রের খবর, জেলায়, বিশেষত চা বলয়ে অপুষ্টিতে ভোগা শিশুদের সংখ্যা তিন শতাংশের কম। যদিও দুশ্চিন্তা মাঝবয়সি এবং বৃদ্ধদের নিয়ে। বড়দের মধ্যে কত জন অপুষ্টিতে ভুগছেন তা নিয়ে কোনও সমীক্ষাও হয়নি। সে সংখ্যা কত, তা-ও জানে না প্রশাসন। চা বাগানের ক্ষেত্রে মহিলাদের পরিশ্রম বেশি হয়। প্রতিদিন সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত কাজ করতে হওয়ায় দুপুরের খাবার অনেকেরই পর্যাপ্ত হয় না।

সম্প্রতি জেলা প্রশাসন চা শ্রমিকদের মধ্যে একটি সমীক্ষায় দেখেছে, অধিকাংশ মহিলা শ্রমিকেরা সকালে কাজে বেরোনোর আগে রান্না করার যথেষ্ট সময় পান না। ভাত, ডাল অথবা ভাতের সঙ্গে শুধু কিছু একটা সিদ্ধ কৌটোয় ভরে নিয়ে কাজে চলে আসেন। অনেকে সকালে না খেয়ে অথবা শুধু চা খেয়ে কাজে আসেন। প্রশাসনিক স্তরে স্থির হয়েছে, চা শ্রমিকদের যখন টিফিন হবে সে সময়ে ঠেলাগাড়িতে সস্তায় বিভিন্ন পুষ্টিকর খাবার বিক্রি করা হবে। চা বলয়ের এই অস্থায়ী দোকানে আপাতত মিলবে ছোলার ‘চিল্লা’, বিটের কাটলেট, পালং শাক ও মটর দিয়ে তৈরি রুটি এবং পকোড়া, পনির টিক্কা, ছাতুর রুটি, ওটসের মালপোয়ার মতো পদ। যেগুলি খেলে, ভরপুর পুষ্টি মিলবে চা শ্রমিকদের।

তিনটি স্বনির্ভর গোষ্ঠীকে প্রশাসন থেকে এ সব খাবার বিক্রির জন্য ঠেলা-ভ্যান কিনে দেওয়া হয়েছে। নানা রকমের ঋণেরও বন্দোবস্ত করে দেওয়া হয়েছে। জেলাশাসক বলেন, “দুপুরে ভাত খাওয়ার সময়ে অথবা ছুটির পরে, চা শ্রমিকেরা যদি একটা পনিরের পদ বা বিট, ছোলা, বেসনের পদ কিনে খান সপ্তাহে অন্তত দু’দিন, তা হলেও অনেক পুষ্টি পাবেন তাঁরা।”

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement