আশা: বাগানের জীর্ণ আবাসনে এক শ্রমিক। নিজস্ব চিত্র।
চা শ্রমিকেরাও পাবেন প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনার ঘর। প্রচুর চা বাগানের জেলা জলপাইগুড়িতে এমনই সিদ্ধান্ত জেলা প্রশাসনের। প্রথমে কিছুটা ধন্দ থাকলেও, জেলা প্রশাসনের সিদ্ধান্ত, যে সব চা শ্রমিকদের বাড়ি জরাজীর্ণ, তাঁরা এই যোজনায় ঘর পাবেন। এর ফলে, জেলায় হাজারখানেক চা শ্রমিক সরকারি ঘর পেতে চলেছেন।
প্রকল্পের নিয়ম অনুযায়ী, পাকা বাড়ি না থাকলে এবং নির্দিষ্ট আয়ের কম উপার্জন হলে, সেই ব্যক্তি সরকারি ঘর পেতে পারেন। জলপাইগুড়ির বন্ধ রায়পুর-সহ আশপাশের কয়েকটি বাগানের শ্রমিকদের আবাসন জীর্ণ. কোথাও আবাসনের ছাউনি সরে গিয়েছে। কোথাও পাকা দেওয়াল ভেঙে পড়েছে, সেখানে দরমার দেওয়াল উঠেছে। সে সব ক্ষেত্রে শ্রমিকদের সরকারি ঘর দেওয়া হবে। জলপাইগুড়ির জেলাশাসক মৌমিতা গোদারা বসু বলেন, “যে শ্রমিকদের বাড়ি পুরোপুরি পাকা নয় অথবা আবাসন ভেঙে জরাজীর্ণ হয়ে পড়েছে, তাঁদের সরকারি ঘর দেওয়া হবে।”
চা বাগানের জমি মালিকের লিজ়ের হওয়ায়, বাগানে নানা সরকারি প্রকল্প রূপায়ণে সমস্যায় পড়তে হয় প্রশাসনকে। বাগান কর্তৃপক্ষের তৈরি আবাসন সংস্কারও করতে পারে না প্রশাসন। তবে জরাজীর্ণ বাড়ির পাশে নতুন বাড়ি তৈরি করে নিতে সমস্যা নেই বলে প্রশাসনের দাবি।
বাগানে প্রতি শ্রমিক পরিবার পিছু একটি করে আবাসন দেওয়া হয়। পরিবার বড় হলে, আবাসনের পাশের জমিতে দরমা বেড়ার ঘর তুলে নতুন বাড়ি তৈরি করে থাকেন কেউ কেউ। সে ক্ষেত্রেও সরকারি ঘর দিতে আপত্তি নেই বলে প্রশাসন সূত্রের খবর। তবে এ ক্ষেত্রে শুধু সরকারি ঘর পাওয়ার জন্য বহু পরিবার আলাদা থাকেন বলে অভিযোগ উঠেছে। প্রশাসনের দাবি, সমীক্ষায় সবই যাচাই করে দেখা হচ্ছে। শুধু পৃথক জায়গায় থাকলেই হবে না, যাঁরা মাটির বা বেড়ার বাড়িতে রয়েছেন এবং যাঁরা বাগানের দেওয়া আবাসনে রয়েছেন তাঁদের একশো দিনের জব-কার্ডও আলাদা হতে হবে। তার পরেই ঘর দেওয়া হবে। চা শ্রমিকেরা সরকারি প্রকল্পের ঘর পেলে জরাজীর্ণ আবাসনে দীর্ঘদিনের থাকার সমস্যা সমাধান হতে পারে। চা বাগান পরিচালকদের সংগঠন ‘ইন্ডিয়ান টি অ্যাসোসিয়েশন’-এর ডুয়ার্স শাখার সভাপতি জীবন পান্ডে বলেন, “বিধি মেনে, শ্রমিকদের জন্য প্রশাসন কোনও সিদ্ধান্ত নিলে সব সময়ে স্বাগত।”