স্বয়ংক্রিয় যন্ত্র।
ছোট ছোট মেঘের টুকরো ভেঙেও বৃষ্টি হয়, তাতে হড়পা বান ডাকে পাহাড়ি নদীতে, সমতলে তৈরি হয় বন্যা পরিস্থিতি। যে ভাবে গত বছর দুর্গাপুজোয় দশমীর বিসর্জনের রাতে মাল নদীতে হড়পা বান চলে এসেছিল। লাগাতার বৃষ্টি হলে, তা মাপার যন্ত্র রয়েছে। কিন্তু ছোট্ট মেঘের টুকরো ভেঙে পড়লে তার খবর পাওয়াই আগেভাগে সমস্যা হয়ে যায়। বিশেষ করে, পড়শি দেশ ভুটানে মেঘভাঙা বৃষ্টি প্রায়ই হয়, অনেক সময়ে সে খবর আসে না এ প্রান্তে। এ দিকে, সমতলে নদীর জল বেড়ে বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হয়ে যায়। এই সমস্যা দূর করতে এ বার বৃষ্টি পরিমাপ করার একাধিক স্বয়ংক্রিয় যন্ত্র বসাচ্ছে সেচ দফতর। ভুটান লাগোয়া একাধিক এলাকায় বসতে চলেছে বৃষ্টি পরিমাপের যন্ত্র, উত্তরবঙ্গের পাহাড়ি এলাকাগুলিতেও বসবে যন্ত্র। তার ফলে, পাহাড়ে বিশেষত, ভুটানে বৃষ্টি হলেই সে তথ্য সরাসরি রাজ্যের সেচ দফতরের কন্ট্রোল রুমে চলে আসবে।
গত বছর ভুটানে হড়পা বানের পরে, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় মালবাজারে এসে প্রশাসনিক সভায় দাবি করেছিলেন, সিকিম-ভুটান থেকে জল ছাড়ার তথ্য মেলে না এবং সেচ দফতরকে এ নিয়ে পদক্ষেপের কথাও বলেছিলেন। সেচ দফতর সূত্রের খবর, মাস চারেক হল ভুটানে বৃষ্টির প্রতিদিনের তথ্য মিলছে। কেন্দ্রীয় জল আয়োগের মাধ্যমে জলঢাকা, তোর্সা এবং সঙ্কোশের জল বৃদ্ধি কমে যাওয়ার তথ্য মিলছে। ভুটানের তিনটি জায়গায় বসানো হয়েছে নদীর জল পরিমাপের তথ্য। যদিও একাধিক নদী ভুটান থেকে নেমে এসেছে। ডায়না, মাল, পানা, জয়ন্তী থেকে রায়ডাক, রেতি-সুক্রেতি, পাগলির মতো বর্ষায় বিপজ্জনক হয়ে ওঠা নদী রয়েছে তাদের মধ্যে। এই নদীর সর্বত্র জলস্তর পরিমাপের যন্ত্র ভুটানে বসানো সম্ভব নয়। সে কথা মাথায় রেখেই বৃষ্টি পরিমাপের বন্ত্র বসছে। সেচ দফতরের উত্তর পূর্ব বিভাগের মুখ্য বাস্তুকার কৃষ্ণেন্দু ভৌমিক বলেন, “ছোট ছোট মেঘ ভেঙে যে বৃষ্টি হয়, তার খবর পাওয়া খুবই প্রয়োজনীয়। সে কারণে উত্তরবঙ্গের পাহাড় এবং সমতল জুড়ে বৃষ্টি পরিমাপের স্বয়ংক্রিয় যন্ত্র বসানো হবে। তার সমীক্ষা চলছে। একই সঙ্গে নদীর জলস্তর পরিমাপের যন্ত্রও বসবে। সমীক্ষার কাজ শেষ হলেই যন্ত্রগুলি বসানো হবে, কিছু কিছু এলাকায় সেই যন্ত্র বসানোও হয়েছে।”
ভূটানের সঙ্গে জল নিয়ে বৈঠকেরও কথা রয়েছে আগামী মাসে।