ছবি: সংগৃহীত।
মালদহে একশো দিনের কাজের প্রকল্পে 'ভুয়ো' সাপ্লিমেন্টারি অ্যানুয়াল অ্যাকশন প্ল্যান (স্যাপ) সামনে আসতেই অবশেষে টনক নড়ল জেলা প্রশাসনের। প্রশাসনিক সূত্রে খবর, গত দু’বছরে জেলার ১৪৬টি গ্রাম পঞ্চায়েতে একশো দিনের প্রকল্পে প্রশাসন অনুমোদিত অ্যানুয়াল অ্যাকশন প্ল্যান (অ্যাপ) ও স্যাপে যে সমস্ত কাজ হয়েছে, তা যাচাই শুরু করেছে প্রশাসন। ভুয়ো স্যাপে কোনও প্রকল্পের কাজ হয়ে গিয়েছে কি না, তা খুঁজে বের করতে এই উদ্যোগ। একশো দিনের জেলা প্রকল্প দফতরে ব্লক ধরে ধরে এই তথ্য যাচাই চলছে। সূত্রে খবর, ইতিমধ্যে জেলার ৭টি ব্লকের নথি যাচাই হয়ে গিয়েছে এবং সেই ব্লকগুলিতে প্রকল্পের কাজে প্রচুর অসঙ্গতি মিলেছে। এ দিকে, ভুয়ো স্যাপে কাজ বন্ধ করতে জেলা প্রশাসনের তরফে নতুন একটি সফটওয়্যার ও একটি ‘ডেডিকেটেড’ মেল আইডি চালু করা হচ্ছে বলেও প্রশাসন জানিয়েছে।
সম্প্রতি মালদহের ইংরেজবাজার ব্লকের বেশ কয়েকটি গ্রাম পঞ্চায়েতে একশো দিনের কাজের প্রকল্পে ভুয়ো স্যাপের মাধ্যমে কয়েকশো স্কিমের কাজের চেষ্টা হয় বলে অভিযোগ। এ নিয়ে ইংরেজবাজার থানায় পৃথক দু’টি অভিযোগও দায়ের করেন ইংরেজবাজার ব্লকের বিডিও। এর পাশাপাশি প্রশাসনের অজান্তে বিগত বছরে ভুয়ো স্যাপে কোনও পঞ্চায়েতে কাজ হয়েছে কি না, তা যাচাইয়ের কাজ শুরু করল প্রশাসন।
প্রশাসনিক সূত্রে জানা গিয়েছে, জেলার ১৪৬টি গ্রাম পঞ্চায়েতে ২০২০-২১ ও ২০২১-২২ অর্থ বর্ষে প্রশাসনের অনুমোদিত অ্যাপ ও স্যাপে একশো দিনের প্রকল্পে যে সমস্ত কাজ হয়েছে, সে সবই খতিয়ে দেখা হচ্ছে। প্রশাসন অনুমোদিত কাজের বাইরে কোনও স্কিমের কাজ হয়েছে কি না, সেটা খুঁজে বের করাই মূল লক্ষ্য। প্রশাসন সূত্রে আরও জানা গিয়েছে, ব্লক ধরে ধরে গ্রাম পঞ্চায়েতগুলির এই সংক্রান্ত কাগজপত্র একশো দিনের কাজের প্রকল্পে জেলা দফতরে এনে যাচাই করা হচ্ছে। পুরাতন মালদহ, বামনগোলা, রতুয়া-২, হরিচন্দ্রপুর-১ ও ২, চাঁচল-১ ও ২ ব্লকের পঞ্চায়েতগুলির সংশ্লিষ্ট নথি যাচাই করা হয়েছে বলে খবর। প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, সংশ্লিষ্ট ব্লকের পঞ্চায়েতগুলির কাজে বেশ কিছু অসঙ্গতি ধরা পড়েছে। প্রশাসন অনুমোদিত অ্যাপ ও স্যাপের বাইরে বেশ কিছু স্কিমে কাজ করা হয়েছে বলেও অভিযোগ।
ভুয়ো স্যাপ রুখতে নথি যাচাইয়ের পাশাপাশি এ বার থেকে নির্দিষ্ট একটি মেল আইডি ও সফটওয়্যারের মাধ্যমে জেলার গ্রাম পঞ্চায়েতগুলি থেকে অ্যাপ ও স্যাপের প্রস্তাব নেওয়া হবে, জানিয়েছেন প্রশাসনিক কর্তারা। সেগুলির প্রশাসনিক অনুমোদন দেওয়া হবে ওই সফটওয়্যার এবং মেল আইডিতেই। ফলে এর বাইরে কোনও কাজ হলে, তা চিহ্নিত করা সহজ হবে।
মালদহের অতিরিক্ত জেলাশাসক (সাধারণ) বৈভব চৌধুরী বলেন, ‘‘গত দু’টি অর্থ বর্ষে একশো দিনের প্রকল্পের কাজের নথি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। পাশাপাশি অ্যাপ ও স্যাপের কাজের প্রস্তাব এখন থেকে একটি ডেডিকেটেড মেল ও সফটওয়্যারে নেওয়া হবে।’’