ইরাদ্রী বসু।
জেইই (মেন) পরীক্ষায় রাজ্যে এক নম্বর র্যাঙ্ক করে নজর কাড়ল শিলিগুড়ির ইরাদ্রী বসু খাউন্ড ওরফে মিশুক। তার পার্সেন্টাইল ৯৯.৯৯৩৪। শিলিগুড়ির যে কোচিং সেন্টারে সে পড়ে, সেখান থেকেই মঙ্গলবার সকালে তাকে বিষয়টি জানানো হয়। তখন ইরাদ্রী কোচিং সেন্টারেরই একটি পরীক্ষা বাড়িতে বসে অনলাইনে দিচ্ছিল। বিষয়টি জেনে খুশি ইরাদ্রী। এখন তার লক্ষ্য, জেইই (অ্যাডভান্সড) পরীক্ষায় ভাল র্যাঙ্ক করে দেশের নাম করা আইআইটি-তে নিজের জায়গা পাকা করা।
বছর সতেরোর ইরাদ্রী জানাল, তার স্বপ্নের কথা। অঙ্ক প্রিয় বিষয় হলেও, ভবিষ্যতে কম্পিউটার সায়েন্স নিয়ে পড়াশোনা করতে চায়। ‘আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স’ (এআই) নিয়েও আগ্রহী। তবে ঠিক কোনও পেশায় যাবে, তা এখনও নিশ্চিত ভাবা হয়নি। শিলিগুড়ির হাকিমপাড়ার বাসিন্দা ইরাদ্রীর বাবা সরবন খাউন্ড মালবাজারের একটি স্কুলের শিক্ষক। মা বৈজয়ন্তী বসু বিউটি পার্লার চালান। পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, রাসবিহারী সরণিতে বাড়ির ঠিক পাশেই ছোট বেলায় নার্সারিতে ভর্তি করাতে ইরাদ্রীর নিয়ে গিয়েছিলেন বাবা মা। সেখানে ভর্তির পরীক্ষা শেষে বেঞ্চ থেকে উঠতে চায়নি আরও পরীক্ষা দিয়ে চায় বলে। তার পরে কেজিতে ভর্তির পরীক্ষার প্রশ্নও তাকে দেওয়া হয়। তাতে ভাল নম্বর পাওয়ায় শিক্ষিকারা তাকে কেজিতে ভর্তি করে নেন।
রাজনীতিতে আগ্রহ নেই ইরাদ্রীর। ইংরেজি মাধ্যম স্কুলে দশম শ্রেণি পর্যন্ত পড়াশোনার পরে কোচিংয়ের বিষয়টিকে গুরুত্ব দেয় ইরাদ্রী ও তার পরিবার। সেই মতো একাদশ এবং দ্বাদশ শ্রেণিতে শুধু পরীক্ষায় বসা এবং প্র্যাক্টিকাল পরীক্ষার জন্য দার্জিলিং পাবলিক স্কুলে ভর্তি হয়। সকাল সাড়ে ৮টা নাগাদ প্রবেশিকা পরীক্ষার কোচিংয়ের জন্য সেন্টারে চলে যায়। সেখানে দেড়টা পর্যন্ত ক্লাস করে সেখানেই একটি ঘরে বসে সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত পড়াশোনা করত।
প্রিয় খাবার মোমো। বাড়িতে সকালে উঠে ঘর গুছনো, কখনও রান্নার কাজে মাকে সাহায্যও করে। পালা করে দুই মাস রাতে নিজেদের আবাসন ভবনের গেটের তালা লাগানোর দায়িত্ব নিজেই নিয়েছে। ইরাদ্রীর ফল প্রকাশের খবর পেয়ে এ দিন শুভেচ্ছা আসতে থাকে পরিচিতদের থেকে। লাগোয়া ওয়ার্ডের কাউন্সিলর সুজয় ঘটক বলেন, ‘‘আমার বন্ধুর বোনের ছেলে। ভাল ফল করেছে শুনে শুভেচ্ছা জানাতে গিয়েছিলাম।’’