প্রতীকী ছবি।
দার্জিলিং ও কালিম্পং জেলার পাহাড় ও সমতলকে ঘিরে পর্যটন শিল্পে আগামী কয়েক বছরে প্রায় ৬০০ কোটি টাকার বিনিয়োগ সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। গত বৃহস্পতিবার শিলিগুড়িতে দু’টি বাণিজ্য সম্মেলন হয়েছে। ওই দিন সকালে কাওয়াখালির শিল্পী-হাটে বাণিজ্য সম্মেলন হয়। সন্ধ্যায় মাল্লাগুড়িতে পর্যটন কনক্লেভ হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশে হওয়া দুই সম্মেলন থেকে উত্তরবঙ্গে আগামী তিন বছরের বিনিয়োগের প্রস্তাব এবং একাধিক চালু কাজের ছবি তুলে ধরা হয়েছে। সেখানে পর্যটন কনক্লেভ থেকে শিলিগুড়িকে ঘিরে অন্তত সাতটি বিনিয়োগের ছবি সামনে আসছে, যা মেলালে বিনিয়োগের অঙ্ক ছ’শো কোটির উপরে দাঁড়াতে পারে। বৈঠকে রাজ্যের মুখ্যসচিব হরিকৃষ্ণ দ্বিবেদী, প্রধান সচিব নন্দিনী চক্রবর্তী থেকে একাধিক দফতরের সচিবেরা ছিলেন। সেখানে পর্যটন হাব হিসাবে শিলিগুড়ির সম্ভাবনা নিয়ে আলোচনা হয়েছে।
রাজ্য প্রশাসনের এক শীর্ষ কর্তার কথায়, ‘‘করোনার জেরে, দেড় বছরের পর পরিকাঠামোয় বিনিয়োগ বন্ধ হয়েছিল। ২০২২ সাল থেকে ফের শুরু হয়েছে। উত্তরবঙ্গের দার্জিলিং ও কালিম্পং জেলাতেই সবচেয়ে বেশি বিনিয়োগের ছবি সামনে আসছে। আগামী তিন বছরে তা ৬০০ কোটি টাকার কাছাকাছি দাঁড়াতে পারে।’’ তিনি জানান, এই বিনিয়োগের প্রাথমিক কাজ সব জায়গায় শুরু হয়েছে। এ ছাড়া, দেশের অন্যতম দুটি বিরাট হোটেল শিল্পের কর্পোরেট সংস্থা শিলিগুড়িতে তিনটি তারাখচিত সম্পত্তি নিয়ে আসছে। সেগুলি ঘোষণা হওয়ার পরে, বিনিয়োগের অঙ্ক এক হাজার কোটি ছাড়িয়ে যাবে। তারাখচিত হোটেল, চা পর্যটনেই মূলত বিনিয়োগগুলি হচ্ছে।
সরকারের তরফের খবর, গত এক দশকের একটু বেশি সময়ে রাজ্যের পর্যটন ক্ষেত্রের হোটেল, রিসর্টকে ধরে ১,৪০৮.৯১ কোটি টাকার বিনিয়োগ হয়ে গিয়েছে। এর মধ্যে বেসরকারি বিনিয়োগের পরিমাণ ১,৩৬২.৪৭ কোটি টাকা। সরকারি পর্যটন দফতরের অতিথি নিবাসগুলিতে বিনিয়োগ হয়েছে ৪৬.৪৪ কোটি টাকা। এ বারও সরকারি অতিথি নিবাস মৈনাক, ডুয়ার্সের মালবাজার টুরিস্ট লজের পরিকাঠামো তৈরিতে বিনিয়োগ হতে চলেছে। পর্যটন দফতরের অফিসারেরা জানাচ্ছেন, গত ১২ বছরে রাজ্যের বেসরকারি হোটেলকে ঘিরে ৫৯৭৮, পর্যটন দফতরের সরকারি অতিথি নিবাসে ৩৬৫, হোমস্টে-তে ১৮,৩৫৬, টুরিজ়ম সার্ভিস প্রোভাইডার হিসাবে ৮২০ জন এবং টুরিস্ট গাইড হিসাবে ৫৫১ জনের কর্মসংস্থান হয়েছে। নতুন বিনিয়োগে আগামী তিন বছরের মধ্যে কম করে আরও এক থেকে দেড় হাজার কর্মসংস্থান তৈরি হবে।
শিলিগুড়ির সঙ্গে বাংলাদেশ, নেপাল ও ভুটানের সরাসরি যোগাযোগ রয়েছে। ফুলবাড়ি দিয়ে ইমিগ্রেশন চালু হয়েছে। মিতালী এক্সপ্রেস চলছে। পানিট্যাঙ্কি সীমান্ত থেকে নিয়মিত এ পারে বিদেশিরা আসছেন। বাগডোগরা বিমানবন্দর ৩০ লক্ষ যাত্রীধারণ ক্ষমতার দিকে এগিয়েছে।