International Women's Day

বল পায়ে মহিলা দল, ঝড় মাঠে

আয়োজকদের তরফে চন্দন পাল জানান, নন্দঝাড় হাইস্কুলে অনুষ্ঠিত খেলায় যোগ দেবে চারটি দল।

Advertisement

মেহেদি হেদায়েতুল্লা   

গোয়ালপোখর শেষ আপডেট: ০৮ মার্চ ২০২০ ০৩:০৯
Share:

মাঝমাঠে: মহিলা ফুটবল দল। নিজস্ব চিত্র

গ্রামেগঞ্জেও ফুটবলে মাঠ কাঁপাচ্ছে মেয়েরা। তা দেখে আয়োজন হচ্ছে হরেক প্রতিযোগিতারও। রবিবার ‘আন্তর্জাতিক নারী দিবসে’ মেয়েদের মধ্যে ফুটবল খেলা আরও জনপ্রিয় করতে গোয়ালপোখরে মহিলাদের জন্য এমনই একটি ফুটবল প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়েছে। আয়োজক গোয়ালপোখর থানা এবং নন্দঝার ছাত্র সমাজ।

Advertisement

আয়োজকদের তরফে চন্দন পাল জানান, নন্দঝাড় হাইস্কুলে অনুষ্ঠিত খেলায় যোগ দেবে চারটি দল। নন্দঝাড় ছাড়াও থাকবে ইসলামপুরের ‘পাশে আছি সংস্থা’ এবং নকশালবাড়ি এবং শিলিগুড়ির একটি করে মহিলা দল।

স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, দু’বছর আগে নন্দঝাড় ছাত্র সমাজ মেয়েদের নিয়ে দল গড়ে তুলেছিল। ওই দল ইতিমধ্যে জেলা এবং জেলার বাইরে গিয়ে দু’টি প্রতিযোগিতায় ট্রফি জিতেছে। ওই দলের অন্যতম সদস্য লিলি বিশ্বাস ও সুমিতা বিশ্বাস ইসলামপুর কলেজের প্রথম বর্ষের ছাত্রী। দু’জনেরই বক্তব্য— ‘‘মাঠে নামলেই শুনতে হত ব্যঙ্গ, মেয়েদের আবার ফুটবল খেলা! ভাল করে দাঁড়াতে পারিস না! চাবুকের মতো পিঠে পড়ত সে সব কথা। আজ এমন প্রতিযোগিতার আয়োজন করতে পেরে ভাল লাগছে। নারী দিবসে আমাদের এটাই সাফল্য।’’

Advertisement

ইসলামপুরের মহিলা ফুটবল দলের অধিনায়ক, ইসলামপুর কলেজের ছাত্রী সোনালি মার্ডি বলেন, চ্যালেঞ্জ নিয়ে মাঠে নেমেছিলাম। প্রথমে আপত্তি এলেও ফুটবলে দাপট দেখে পরিবারের লোকজন পাশে দাঁড়িয়েছেন।’’ মহিলাদের জন্য একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার সম্পাদক মধুমিতা চক্রবর্তী বলেন, ‘‘এই যুগে মোবাইল ফোনে আসক্তি রয়েছে বেশিরভাগ ছেলেমেয়ের। এই ফুটবল দলের মেয়েরা নতুন দিশা দেখাচ্ছে। তাঁদের লড়াইকে কুর্নিস জানাতে নারী দিবসে তাঁদের সম্মান জানানো হবে।’’

নন্দঝাড়ের ফুটবল দলের গোলরক্ষক, একাদশ শ্রেণির ছাত্রী দিয়ার কথায়, ‘‘স্কুলের ছুটির পরে ছেলেরা মাঠে খেলত। খেলতে ইচ্ছা করত খুব। কিন্ত বলতে গেলেই শুনতে হত ব্যঙ্গ। তবে মন বলেছিল ভেঙে পড়ার কিছু নেই। বল নিয়ে মাঠে নামতেই হবে।’’

সে জানায়, ঝক্কি কম ছিল না। প্রধান শিক্ষিকা সে সব ছাত্রীর অভিভাবকদের সঙ্গে কথা বলতে চাইলেন। পাশে দাঁড়িয়েছিলেন চন্দন পাল, সুমন বিশ্বাসের মতো পাড়ার দাদারাও। অভিভাবকদের অনুমতি মিলল। পায়ে এল কালো-সাদা ফুটবল।

আয়োজন সংস্থার তরফে সমীর বিশ্বাস জানান, ২০১৭ সালে পথ চলা শুরু। গত বছর জেলায় একটি প্রতিযোগিতায় চ্যাম্পিয়ন হয় গ্রামের ওই ফুটবল দলের মেয়েরাই। তাঁর কথায়, ‘‘গোটা ব্লকে একমাত্র আমাদের গ্রামের মহিলা ফুটবল টিম আছে। আমরা চাই আরও এমন দল গড়ে উঠুক। সে জন্য এমন প্রতিযোগিতার আয়োজন।’’

গোয়ালপোখরের ওসি বিশ্বনাথ মিত্র বলেন, ‘‘ওই মেয়েদের অদম্য জেদকে কুর্নিস জানাতেই পাশে দাঁড়িয়েছি।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement