গাজোলে স্থায়ী পঞ্চায়েত সমিতি গঠনে তৃণমূলের গন্ডগোলে পুলিশের লাঠিচার্জ। ছবি স্বরূপ সাহা
পঞ্চায়েত সমিতির স্থায়ী সমিতি গঠনেও রক্ত ঝরল মালদহে। শুক্রবার, গাজল পঞ্চায়েত সমিতির স্থায়ী সমিতি গঠনে তৃণমূলের গোষ্ঠী দ্বন্দ্বে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এ দিন দুপুরের ঘটনায় দু’পক্ষের একাধিক জন আহত হয়েছেন। পরে, পুলিশ লাঠি চালিয়ে পরিস্থিতি সামাল দেয়। গোষ্ঠী দ্বন্দ্বে সংঘর্ষের ঘটনায় অস্বস্তিতে তৃণমূল নেতৃত্ব। যদিও দলীয় স্তরে ঘটনার খোঁজ নেওয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছেন তৃণমূলের জেলা সভাপতি আব্দুর রহিম বক্সী। তিনি বলেছেন, “কারও কোনও রকম গাফিলতি থাকলে দলগত ভাবে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
পঞ্চায়েত ভোট থেকে বোর্ড গঠনে মালদহে রক্ত ঝরেছে। এমনকি, বোর্ড গঠনের সভাকক্ষেও শাসক-বিরোধী দলের পঞ্চায়েত সদস্যরা নিজেদের মধ্যে হাতাহাতিতে জড়িয়েছেন। এ বার পঞ্চায়েত সমিতির স্থায়ী সমিতি গঠনেও জেলায় রক্ত ঝরেছে। এ দিন গাজল পঞ্চায়েত সমিতির স্থায়ী সমিতি গঠন ছিল। প্রশাসনের দাবি, ৪৫ আসনের পঞ্চায়েত সমিতিতে তৃণমূল ২৪টি রয়েছে। পঞ্চায়েতের সমিতির সভাপতি, সহ-সভাপতি তৃণমূলের রয়েছেন। এ ছাড়া জেলা পরিষদ, গ্রাম পঞ্চায়েতেও তৃণমূল এগিয়ে রয়েছে। ফলে, পঞ্চায়েত সমিতির স্থায়ী সমিতি গঠনেও তৃণমূল এগিয়ে রয়েছে।
এ দিন দুপুরে তৃণমূলের জয়হিন্দ বাহিনী ও মাদার তৃণমূলের কর্মী, সমর্থকদের মধ্যে ব্লক অফিস চত্বরেই বাঁশ, লাঠি নিয়ে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। অভিযোগ, দুপক্ষই একে অপরের উপরে বাঁশ, লাঠি নিয়ে হামলা চালায়। ঘটনায় ব্লক অফিস চত্বরে হইচই পড়ে যায়। পরিস্থিতি সামাল দিতে গেলে পুলিশের উপরেও ইট নিয়ে হামলা চালানো হয় বলে অভিযোগ। অভিযোগ, এর পরে পুলিশ ব্যাপক লাঠি চালালে কর্মী, সমর্থকেরা ছত্রভঙ্গ হয়ে যায়। তৃণমূলের একাংশের দাবি, পঞ্চায়েত সমিতির স্থায়ী সমিতির পূর্ত কর্মাধ্যক্ষ পদের একাধিক দাবিদার। সে পদে জয়হিন্দ বাহিনীর ব্লক সভাপতি বিশাল সাহার মা সোমা সাহাও দাবিদার রয়েছেন। তবে সোমাকে পদ দেওয়া হয়নি। বিশাল বলেন, “ব্লক নেতৃত্ব দলীয় পঞ্চায়েত সদস্যকে ব্লক অফিসে ঢুকতে বাধা দেন। এর প্রতিবাদ করলে আমাদের উপরে হামলা চালানো হয়েছে।” তৃণমূলের ব্লক সভাপতি দীনেশ টুডু বলেন, “কে কোন পদে বসবেন তা দলীয় নেতৃত্ব ঠিক করেছেন। সভাকক্ষে শান্তিপূর্ণ ভাবে বোর্ড গঠন হয়েছে। সভাকক্ষের বাইরে ঘটনা নিয়ে দলীয় স্তরে খোঁজ নেওয়া হচ্ছে।” এ দিনের ঘটনা নিয়ে তৃণমূলকে কটাক্ষ করেছেন উত্তর মালদহের বিজেপির সাংসদ খগেন মুর্মু। তিনি বলেন, “পঞ্চায়েতে লুটে খাওয়ার জন্য তৃণমূল নিজেদের মধ্যে রক্ত ঝরাচ্ছে।” সাংসদের কটাক্ষকে আমল দিতে নারাজ তৃণমূলের জেলা সভাপতি আব্দুর রহিম বক্সী।