অজয় এডওয়ার্ডের অডিও ভাইরাল। — ফাইল চিত্র।
হামরো পার্টির সভাপতি তথা জিটিএ সদস্য অজয় এডওয়ার্ডের একটি অডিয়ো-বার্তা (সত্যতা যাচাই করেনি আনন্দবাজার) ঘিরে সরগরম দার্জিলিং।
প্রজাতান্ত্রিক মোর্চার অভিযোগ, বুধবার অজয় তাদের দলের দার্জিলিং মহকুমা শাখার সভাপতি অলককান্তমণি থুলুংকে ফোন করে তাঁর পুরপ্রতিনিধি দিদি প্রতিভা রাইকে পুরপ্রধান করার প্রস্তাব দেন। বৃহস্পতিবার প্রজাতান্ত্রিক মোর্চার তরফে ওই হোয়াট্সঅ্যাপ কলের ভিডিয়ো (আনন্দবাজার সত্যতা যাচাই করেনি) ছড়িয়ে পুরপ্রতিনিধি কেনাবেচার অভিযোগ তোলা হয়। বিকেলের মধ্যে ভিডিয়ো, অডিয়োটি পাহাড়ে সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। ছড়িয়ে পড়া ওই ভিডিয়োয় (সত্যতা আনন্দবাজার যাচাই করেনি) অজয় এডওয়ার্ডের প্রস্তাব অলক নাকচ করে দিচ্ছেন বলেও শোনা গিয়েছে।
প্রজাতান্ত্রিক মোর্চার দাবি, পুরবোর্ড দলের হাতছাড়া হতেই পুরপ্রতিনিধি কেনাবেচার অভিযোগ তোলা অজয়, নিজে কী করছেন তা পাহাড়বাসী দেখুন। প্রজাতান্ত্রিক মোর্চার সভাপতি অনীত থাপা বলেছেন, ‘‘অনেকের অনেক মুখোশ খুলবে। অজয় লোকের দিকে আঙুল তুলে, নিজে কী করেন তা দেখা গেল। বোর্ড দখলে ওঁরা মরিয়া হলেও, কোনও লাভ নেই।’’
অলককান্তমণি থুলুংয়ের দিদি প্রতিভা রাই দার্জিলিং পুরসভায় প্রজাতান্ত্রিক মোর্চার পুরপ্রতিনিধি। এর আগে, এক দফায় তিনি পুরসভায় চেয়ারপার্সনও ছিলেন। বিমল গুরুংয়ের ঘনিষ্ঠ ভাই-বোন দু’জনেই ২০১৭ সালের পর থেকে অনীত থাপার পাশে রয়েছেন। অনীত অলককে দার্জিলিং শাখার সভাপতিও করেছেন। অলক বলেন, ‘‘হোয়াট্সঅ্যাপে ফোন করে রাতে অজয় এডওয়ার্ড আমার দিদিকে পুরপ্রধান করার প্রস্তাব দিচ্ছিলেন। সংখ্যাগরিষ্ঠতা থেকে ওঁদের এক জন পুরপ্রতিনিধি কম রয়েছে। এটা আমাদের প্রলোভন দেওয়া ছাড়া আর কী!’’
যাঁকে নিয়ে এত শোরগোল, সেই অজয় এডওয়ার্ড অবশ্য মোর্চা নেতাকে ফোন করার কথা স্বীকার করে নিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘‘অলক আমার ভাইয়ের মতো। প্রতিভা দার্জিলিঙে জনপ্রিয়। পরিবারটি সঙ্গে আমার যোগাযোগ রয়েছে। আমাদের দল ছেড়ে যাওয়া দীপেন ঠাকুরিকে পুরপ্রধান করা হবে শুনছি। দীপেনকে আমরা চাই না। তাই প্রতিভা দাঁড়ালে, আমরাও সমর্থন করব বলেছি।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘দীপেনের নামে পুলিশে মামলা রয়েছে। উনি ‘ঘোড়া কেনাবেচা’ করেছেন। অডিয়ো পাহাড়বাসী শুনেছেন। এমন পুরপ্রধান দার্জিলিং চায় না। তাই প্রতিভার কথা বলেছি। আমি দলবদলের কথা, প্রলোভন কিছুই দিইনি। ওঁদের দলের নেত্রীকেও সমর্থন করব বলি দীপেনকে সরানোর জন্য।’’ তাঁর সংযোজন: ‘‘এতে অন্যায় কী রয়েছে জানা নেই।’’
দার্জিলিং পুরসভার ৩২টি আসনের মধ্যে একটি আসন ফাঁকা রয়েছে। ৩১টি আসনের মধ্যে ১৬টি প্রজাতান্ত্রিক মোর্চা, তৃণমূলের হাতে রয়েছে। ১৫টি আসন হামরো পার্টি, গোর্খা জনমুক্তি মোর্চা শিবিরের হাতে আছে। আগামী ১৬ জানুয়ারি নতুন চেয়ারম্যান নির্বাচনের দিন ঠিক হয়েছে।
সেখানে একটি বা দু’টি আসন এ দিক-ও দিক হয়ে গেলে সব হিসাব ওলোটপালট হতে পারে। সম্ভাব্য পুরপ্রধান দীপেন ঠাকুরিও অজয়ের কথার কোনও জবাব দিতে চাননি। তিনি বলেছেন, ‘‘সব কিছু দলীয় সিদ্ধান্তে হবে।’’