গত মাসে আকাশপথ, জলপথের পরে, নতুন করে স্থলপথের যুদ্ধের মহড়া চালাল সেনাবাহিনী। উত্তরবঙ্গ এবং সিকিমের সেনার দায়িত্বপ্রাপ্ত সুকনার ৩৩ কোরের নেতৃত্বে গত ২০ থেকে ২৮ ফেব্রুয়ারি অবধি চলছে মহড়া। মহড়ার প্রধান বিষয় ছিল, ট্যাঙ্ক ধ্বংসকারী ক্ষেপণাস্ত্রের (মিসাইল) ব্যবহার। ‘ওয়ান ট্যাঙ্ক ওয়ান মিসাইল’— এই স্লোগান নিয়ে মহড়া হয় বলে খবর। সেনা সূত্রের খবর, সেবক এবং ডুয়ার্স লাগোয়া তিস্তা ফিল্ড ফায়ারিং রেঞ্জের বিস্তীর্ণ এলাকায় এই মহড়ায় ট্যাঙ্ক ধ্বংসকারী ২৬০টি ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার করা হয়েছে। দেড় হাজার সেনা জওয়ান ক্ষেপণাস্ত্র এবং আধুনিক অস্ত্রের ব্যবহার ঝালিয়ে নিয়েছেন বলে জানা গিয়েছে। সেনার মুখপাত্র অঞ্জনকুমার বসুমাতারি বলেন, ‘‘ইস্টার্ন কমান্ডের ফিল্ড ট্রেনিংয়ের বার্ষিক সূচি মেনেই মহড়া হয়েছে। সেনার ইনফ্যান্ট্রি ব্যাটালিয়ন এতে অংশ নিয়েছিল। ৩৩ কোরের জিওসি মহড়ায় উপস্থিত ছিলেন।’’
এর আগে, গত ২২ থেকে ২৭ জানুয়ারি, ছ’দিন উত্তরবঙ্গের আকাশে, জলপথে চলে বায়ুসেনার বিশেষ মহড়া। সঙ্গে সেনাও ছিল। মহড়ার নাম দেওয়া হয়েছিল, ‘ডেভিল স্ট্রাইক’। কোচবিহারের বাংলাদেশ, আলিপুরদুয়ারের ভুটান সীমান্ত থেকে দার্জিলিঙের নেপাল থেকে সিকিম-চিন সীমান্ত অবধি উড়েছে রাফালের মতো যুদ্ধবিমান। সেনাবাহিনীর উত্তরবঙ্গ, সিকিমের দায়িত্বপ্রাপ্ত ৩৩ কোরের অফিসারেরা সুকনা থেকে নজরদারি চালান প্রক্রিয়াটিতে। সেই সঙ্গে বাগডোগরা, বেংডুবি, হাসিমারা-সহ বিভিন্ন সেনা ছাউনিকে জুড়ে রাখা হয় পুরো প্রক্রিয়ায়। সে বার চিন সীমান্তে রাফালের সঙ্গে সি-১৩০ হারকিউলিস বিমানের ব্যবহার হয়।
নদী পার হয়ে মাটিতে শত্রুর দিক থেকে এগিয়ে আসা ট্যাঙ্ক-সহ নানা আগ্নেয়াস্ত্রের ব্যবহার এ বার করা হয়েছে। গত মাসে যুদ্ধ বিমান থেকে ঝাঁপিয়েছিলেন এক হাজার প্যারাট্রুপার। খরস্রোতা তিস্তা নদীতে নেমেছিল ডুবুরি। আধুনিক আগ্নেয়াস্ত্রে সজ্জিত কমান্ডোরা লড়াইয়ের নামার পরে কী করেন, তা এ বার প্রশিক্ষণের মধ্যেও রাখা হয়েছিল। স্থলপথের মহড়াকে এ বার আরও এগিয়ে স্থলপথের এলাকা দখল, ট্যাঙ্ক ধ্বংস করার মহড়া হয়েছে। সেনা অফিসারেরা জানান, সিকিম সীমান্তের সঙ্গে নেপালের দিক নিয়েও নজরদারি বেড়েছে। ডোকলাম-সহ বিভিন্ন এলাকায় চিনের আগ্রাসী মনোভাব সামনে আসার পরে, নতুন যুদ্ধবিমান, আগ্নেয়াস্ত্র, ক্ষেপণাস্ত্র উত্তরবঙ্গে এসেছে। গত বছর রাতের অন্ধকারে উত্তরবঙ্গের আকাশে বায়ুসেনা রাফাল-সহ যুদ্ধবিমানের মহড়া চালিয়েছিল। তিস্তা ফিল্ড রেঞ্জে যুদ্ধের মহড়া হয়েছিল। তবে চলতি বছর থেকে খোলাখুলি হারকিউলিস, রাফাল, ক্ষেপণাস্ত্র নিয়ে প্রশিক্ষণ সামনে আনা শুরু করেছে সেনাবাহিনী।