প্রতীকী ছবি
উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার ‘কাউন্সিল নমিনি’ এবং উপদেষ্টা কমিটির সদস্যদের পরিচয়পত্র জলপাইগুড়ি জেলা তৃণমূল অফিস থেকে বিলি করা নিয়ে তৈরি হল বিতর্ক। দোলের ছুটির আগের দিন অর্থাৎ গত রবিবার জলপাইগুড়ির মার্চেন্ট রোডে জেলা তৃণমূলের পার্টি অফিস গুরজংঝোড়া ভবন থেকে শিক্ষক-শিক্ষিকাদের ওই কার্ড বিলি করা হয়েছে।
জেলায় উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার সমস্ত কাজকর্ম ঠিকমতো হচ্ছে কিনা তা দেখার জন্য বাছাই করা শিক্ষক-শিক্ষিকাকে ‘কাউন্সিল নমিনি’ হিসেব নির্বাচন করে উচ্চ মাধ্যমিক কাউন্সিল। পাশাপাশি পরীক্ষা পরিচালনা করতে প্রতি জেলাতেই একটি করে উপদেষ্টা কমিটি তৈরি হয়। জলপাইগুড়ি জেলাতেও তা হয়েছে। জেলা তৃণমূল অফিস থেকে তাঁদের পরিচয়পত্র বিলি হওয়ায় ক্ষোভ ছড়িয়েছে জেলার শিক্ষক-শিক্ষিকাদের মধ্যে। উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষায় যে শিক্ষক-শিক্ষিকারা উচ্চমাধ্যমিক সংসদের মনোনীত হয়ে নজরদারি চালাবেন এবং সুষ্ঠু ভাবে পরীক্ষা চালাতে জেলা উপদেষ্টা কমিটির যে সদস্যরা নানা সিদ্ধান্ত নেবেন, তাঁরা সকলেই সরকারি প্রতিনিধি। তাঁদের পরিচয়পত্র কেন দলীয় অফিস থেকে দেওয়া হবে সে প্রশ্ন তুলেছেন শিক্ষকদের একাংশ।
জলপাইগুড়ি জেলায় উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা পরিচালনার দায়িত্বে থাকা সরকারি আধিকারিক পুষ্পা লেপচা বলেন, “জেলাশাসকের দফতর থেকে আহ্বায়কের হাতে সব পরিচয়পত্র তুলে দেওয়া হয়েছিল। পরে কী করে সেই পরিচয়পত্র বিলি হয়েছে তা খোঁজ নিতে হবে।” পরীক্ষা পরিচালনার দায়িত্বে থাকা জলপাইগুড়ির আহ্বায়ক সুবীর চৌধুরী বলেন, “আমি ময়নাগুড়ি হাইস্কুল থেকে জেলার বিভিন্ন প্রান্তের পরীক্ষা কেন্দ্রগুলির দায়িত্বে থাকা প্রতিনিধিদের হাতে পরিচয় পত্র দিয়েছি। তাঁরা কোথাও বিলি করেছেন তা আমার জানার কথা নয়।”
প্রতিটি পরীক্ষাগ্রহণ কেন্দ্রে একজন করে উচ্চ মাধ্যমিক সংসদের প্রতিনিধি থাকেন। যিনি প্রশ্নপত্রের প্যাকেট খোলা থেকে, পরীক্ষার শেষে উত্তরপত্র সিল করা পর্যন্ত প্রতিটি পর্যায় খুঁটিয়ে দেখেন। প্রতিটি জেলায় উপদেষ্টা কমিটি হয়। এই কমিটির এক একজন সদস্য এক একটি ব্লকের দায়িত্বে থাকে। পরীক্ষা চলাকালীন ওই ব্লকে কিছু হলে তাৎক্ষণিক সিদ্ধান্ত সদস্যকেই নিতে হয়। জেলায় সংসদ মনোনীত রয়েছেন ৮৯ জন ও উপদেষ্টা কমিটির সদস্য রয়েছেন ২৫ জন।
বিরোধীদের অভিযোগ, শাসক দলের নেতারা সংসদের প্রতিনিধিদের উপরে প্রভাব বিস্তারের চেষ্টা করেছেন। বিজেপি শিক্ষা সেলের জলপাইগুড়ি জেলার সভাপতি তনয় দাসের কটাক্ষ, “উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষাও যে তৃণমূল নিয়ন্ত্রণ করে তা সাধারণ শিক্ষক-শিক্ষিকাদের বোঝাতেই পার্টি অফিসে ডাকা হয়েছিল।’’ তৃণমূলের সেকেন্ডারি টির্চাস অ্যাসোসিয়েশনের জলপাইগুড়ি জেলার আহ্বায়ক অঞ্জন দাসের যুক্তি, “পরীক্ষা সুষ্ঠুভাবে পরিচালনা করতে মূলত আলোচনার জন্যই সকলকে ডাকা হয়েছিল।’’