—প্রতীকী ছবি।
ভারত, নেপাল এবং বাংলাদেশকে নিয়ে ‘সীমান্ত পর্যটনের’ উন্নয়নে চলতি মাসে ঢাকায় বসতে চলছে ত্রিদেশীয় আলোচনা। ‘প্যাসিফিক এশিয়া ট্রাভেল অ্যাসোসিয়েশন’-এর (পাটা) বাংলাদেশ ‘চ্যাপ্টার’ এর উদ্যোক্তা। রাজ্যের উত্তরবঙ্গ-ঘেঁষা বাংলাদেশ, নেপালকে মিলিয়ে যৌথ পর্যটন ‘সার্কিট’ তৈরির পরিকল্পনাকে আরও এক ধাপ এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার লক্ষ্যে এই বৈঠক ডাকা হয়েছে। সেখানে ভারতের তরফে ‘হিমালয়ান হসপিটালিটি অ্যান্ড ট্যুরিজ়ম ডেভেলপমেন্ট নেটওয়ার্ক’-এর প্রতিনিধিরা বাংলাদেশ যাচ্ছেন। থাকবেন ‘পাটা’র নেপাল ‘চ্যাপ্টার’-এর প্রতিনিধিরাও। আগামী ২৬ অগস্ট থেকে চার দিন ঢাকা এবং কক্সবাজারে বসছে এই আসর।
‘পাটা’র বাংলাদেশ ‘চ্যাপ্টার’-এর সেক্রেটারি জেনারেল তৌফিক রহমান জানিয়েছেন, সীমান্ত পর্যটনের বিভিন্ন দিক তুলে ধরে তিন দেশের অংশীদারিত্ব বাড়তে এই বৈঠকের ব্যবস্থা করা হয়েছে। সেখানে বাংলাদেশের পর্যটনমন্ত্রী, পর্যটন সচিব, বাংলাদেশ টুরিজ়ম বোর্ডের সিইও-র মতো ব্যক্তিত্ব যোগ দেবেন।
পর্যটন দফতর সূত্রের খবর, উত্তরবঙ্গের দার্জিলিং, কালিম্পং, ডুয়ার্স বরাবর বাংলাদেশিদের মধ্যে জনপ্রিয়। সিকিমও কয়েক বছর আগে, বাংলাদেশিদের জন্য দরজা খুলে দিয়েছে। এর পরেই রয়েছে নেপালের বিভিন্ন এলাকা। পানিট্যাঙ্কি, কাঁকরভিটা দিয়েও বাংলাদেশিরা নেপালে ঘুরতে যান। করোনা সংক্রমণের বছরের পর থেকে ফুলবাড়ি, চ্যাংরাবান্ধার মতো সীমান্ত এলাকা দিয়ে বিরাট সংখ্যক বাংলাদেশি ভারতে আসছেন। চিকিৎসা এবং বেড়ানো— দু’টি সেরেই তাঁরা ফেরেন। ওপার বাংলাতেও যাতে নেপাল বা ভারতের এই অংশ থেকে পর্যটকেরা আরও যান, তা চায় বাংলাদেশের পর্যটন মন্ত্রক।
উত্তরে বসবাসকারী বহু মানুষের ভিটেমাটি ছিল বাংলাদেশ। দেশ ভাগের সময় তাঁরা এ পারে চলে আসেন। কিন্তু মাটির সে টান বরাবর পরিবারগুলির মধ্যে রয়েছে। উল্টো দিকে, পর্যটন বিকাশে আগ্রহী বাংলাদেশ। এর বাইরে বাংলাদেশ, নেপাল, ভারত নিয়ে ‘বৌদ্ধিক পর্যটন সার্কিট’-কেও জনপ্রিয় করার কাজ চলছে। ইউরোপ বা এশিয়ার বিভিন্ন দেশ থেকে পর্যটকেরা এসে বাংলাদেশ, ভারত এবং নেপাল— এই অংশের ‘সার্কিট’ এক সঙ্গে ঘুরে যান। একেই আরও জনপ্রিয় করার প্রচেষ্টা চলছে।
‘হিমালয়ান হসপিটালিটি অ্যান্ড ট্যুরিজ়ম ডেভেলপমেন্ট নেটওয়ার্ক’-এর সম্পাদক সম্রাট সান্যাল বলেন, ‘‘সীমান্ত পর্যটন বিকাশকে আরও মজবুত করার লক্ষ্যেই আমরা বাংলাদেশ যাচ্ছি। এর আগে, বাংলাদেশের তরফেও প্রতিনিধিরা এ দেশে এসেছেন। দু’পক্ষের আলোচনায় ‘মউ’ স্বাক্ষরও হয়েছিল। এ বার আবার নতুন করে সেগুলি নিয়েও কথা হবে।’’
২৬ অগস্ট ভারত এবং নেপালের প্রতিনিধিরা ঢাকায় পৌঁছবেন। রাতে সে দেশের পর্যটনের সঙ্গে জড়িত সরকারি, বেসরকারি সংস্থার দায়িত্বপ্রাপ্ত উপস্থিত থাকবেন। আলোচনা, বৈঠকও চলবে। পরদিন সকালে সবাইকে কক্সবাজারে নিয়ে যাওয়া হবে। সেখানে যাওয়ার সময় বাংলা আদি রাজধানী শহর, সোনারগাঁও পানাম সিটি ঘুরিয়ে দেখানো হবে। এ ছাড়া, কুমিল্লার সপ্তম শতাব্দীর বৌদ্ধ গুম্ফা, মহেশখালি দ্বীপ ও বৌদ্ধ মন্দির, আদিনাথ মন্দির ছাড়াও, ঢাকার সংসদ, শহিদ মিনার, লিবারেশন ওয়ার মিউজ়িয়াম, লর্ড কার্জন হল, ঢাকেশ্বরী মন্দিরের মতো এলাকা প্রতিনিধিদের ঘুরিয়ে দেখানো হবে। ২৯ অগস্ট আর এক দফায় বৈঠক হবে।