রক্ত দিচ্ছেন আইসি অমিতাভ দাস। নিজস্ব চিত্র।
তখন ডিউটি করছিলেন কোতোয়ালি থানার আইসি অমিতাভ দাস। খবর পেলেন এক মুমূর্ষু রোগীর জন্য বি নেগেটিভ রক্তের প্রয়োজন। কিন্তু তা কোথাও মিলছে না। তা শুনে আইসি নিজেই ছুটলেন কোচবিহার মেডিক্যাল কলেজের ব্লাড ব্যাঙ্কে। সরাসরি নিজের বি নেগেটিভ রক্ত দিলেন রোগীকে। বললেন, “এটুকু তো করতেই হবে।” তাঁর ওই ভূমিকায় পুলিশ মহল তো বটেই, খুশি সাধারণ মানুষও। উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন পর্ষদের চেয়ারম্যান রবীন্দ্রনাথ ঘোষ বলেন, “এমন কাজকে সব সময়ই কুর্নিশ জানাই।” কয়েক জন বাসিন্দার কথায়, “এমন পুলিশ আধিকারিকের প্রয়োজন রয়েছে। আমরা খুব
খুশি হয়েছি।”
কোতোয়ালি থানার আইসি’র ভূমিকা অবশ্য কোচবিহারে নতুন প্রশংসিত নয়। পুলিশ সূত্রেই জানা গিয়েছে, তিনি বেশ কিছু বছর আগে তিনি কোতোয়ালি থানায় অ্যাসিস্যান্ট সাব ইন্সপেক্টরের ভূমিকায় ছিলেন। কোচবিহার টাউন এলাকা তাঁর দায়িত্বে ছিল। একাধিক সমাজবিরোধীর বিরুদ্ধে পর পর ব্যবস্থা নিয়ে সাড়া ফেলে দিয়েছিলেন। এ বারে তিনি কোতোয়ালি থানার আইসি। এ বারেও তাঁর ভূমিকায় খুশি সাধারণ মানুষ। এক দিকে, আইনশৃঙ্খলা ঠিকঠাক করতে লাগাতার নজরদারি করছেন। দিন কয়েক আগে পুরসভা নির্বাচনের দিন তাঁর ভূমিকা ছিল চোখে পড়ার মতো। লাঠি হাতে ঘুরে বেড়িয়েছিলেন এক প্রান্ত থেকে আর এক প্রান্ত। যারা গণ্ডগোলে জড়িত ছিলেন, প্রত্যেকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিয়েছেন। শাসক থেকে বিরোধী হিসেবে কেউ পার পায়নি।
শনিবার কোচবিহার শহরের কাছে খাগরাবাড়িতে কর্তব্যরত ছিলেন অমিতাভ দাস। সেই সময় রক্তের সঙ্কটের কথা জানতে পারেন। মাস তিনেক আগেই এক বার রক্তদান করেছিলেন তিনি। তার পরেও রক্ত দেওয়ার বিষয়ে দু’বার ভাবেননি। আইসি জানান, তিনি একটি ‘রক্তদাতা’ গ্রুপের সদস্য। সেই গ্রুপেই তিনি জানতে পারেন মেডিক্যাল কলেজে ভর্তি ওই রোগীর রক্ত প্রয়োজন। সঙ্গে সঙ্গেই তিনি রক্ত দেওয়ার জন্য যোগাযোগ করে মেডিক্যাল কলেজের ব্লাড ব্যাঙ্কে পৌঁছে যান। ডিউটি শেষ হওয়ার পরে পৌঁছে যান মেডিক্যাল কলেজে। তিনি বলেন, “আমি নিয়মিত রক্তদান করি। কোনও সমস্যা আমার হয় না। অনেক সময়েই জানতে পারি রক্তের প্রয়োজনীয়তার কথা। তখন পাশে থাকার চেষ্টা করি।”