—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।
চোপড়া-কাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগে আরও দু’জনকে গ্রেফতার করার মধ্যেই এলাকা পরিদর্শনে এল জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের প্রতিনিধি দল। সূত্রের দাবি, প্রতিনিধি দলের সঙ্গে কথা বললেও এ বিষয়ে কার্যত এলাকার কেউ মুখ খোলেননি। মানবাধিকার কমিশনের তরফে ‘সাহস’ দেওয়া হলেও লাভ হয়নি। সদ্য-ধৃত দু’জন আগে ধৃত তাজিমুল ইসলামের ‘সঙ্গী’ বলে পুলিশ সূত্রের দাবি। এ দিনও চোপড়ার লক্ষ্মীপুরে ‘নির্যাতিতদের’ বাড়ির কাছে পুলিশ পিকেট ছিল। এ দিন মানবাধিকার কমিশনের সঙ্গে ছিলেন চোপড়া থানার আইসি এবং মহকুমাশাসকের অফিসের দুই ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেট।
পুলিশ সূত্রে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, বুধবার রাতে গ্রেফতার হওয়া দুই যুবকের এক জন লক্ষ্মীপুর গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার আলমগছের বাসিন্দা আব্দুল রউফ, অন্য জন মুন্সিটোলার বাসিন্দা তারিকুল ইসলাম। নিগ্রহের ঘটনার সঙ্গে তাদের যোগ কী এবং কী তাদের ভূমিকা, সে বিষয়ে এলাকাবাসীর মুখে কুলুপ। তবে এলাকার বাসিন্দাদের একাংশের দাবি, ওই দলটি ছিনতাই, মারধর করে টাকা নেওয়ার মতো নানা অসামাজিক কার্যকলাপে জড়িত। কয়েক দিন আগে, চোপড়ার দিগলগাঁওয়ে যুবক-যুবতীকে মারধরের অভিযোগ ওঠে। ওই ঘটনা এবং সমধর্মী ঘটনার ভিডিয়ো (সত্যতা যাচাই করেনি আনন্দবাজার) সমাজমাধ্যমে ছড়িয়েছিল। প্রথম প্রকাশ্যে আসা ঘটনায় মূল অভিযুক্ত তাজিমুল ইসলাম ওরফে জেসিবি আপাতত পুলিশ হেফাজতে।
লক্ষ্মীপুরের বাসিন্দা আব্দুল রউফ বালি-পাথরের ব্যবসা করেন বলে দাবি করেছেন তাঁর স্ত্রী নার্গিস বেগম। এ দিন নার্গিস বলেন, ‘‘স্বামী কোনও কিছুতে থাকেন না। বাবা অসুস্থ হওয়ায় রাতে বাপের বাড়ি গিয়েছিলাম। খবর পাই, গভীর রাতে পুলিশ এসে স্বামীকে তুলে নিয়ে গিয়েছে। কেন ওঁকে গ্রেফতার করা হল, বুঝে উঠতে পারছি না!’’ লক্ষ্মীপুর সংলগ্ন মুন্সিটোলার বাসিন্দা তারিকুলের স্ত্রী আর্জুনা বেগমের বক্তব্য, ‘‘স্বামী রাজমিস্ত্রির কাজ করেন। রাতে হঠাৎ পুলিশ ওঁকে তুলে নিয়ে গিয়েছে।’’ এ দিন চোপড়া থানায় গিয়ে রাজ্য বিধানসভার বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী অভিযোগ করেন, ‘‘তাজিমুলের নেতৃত্বে ‘গ্যাং অব গুন্ডাস’ (দুষ্কৃতী দল) নতুন নয়। আদিবাসীদের উপরে অত্যাচার করছে। পঞ্চায়েত ভোটে গুলি করে খুন করেছে। গত সাত-আট-ন’বছর ধরে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মুখ্যমন্ত্রিত্বে, পুলিশের সরাসরি প্রশ্রয়ে জঙ্গল-রাজ চলছে চোপড়ায়।’’ চোপড়ার তৃণমূল বিধায়ক হামিদুল রহমানের বক্তব্য, ‘‘এলাকায় কে, কী করছে না করছে পুলিশ-প্রশাসন দেখছে। শুভেন্দুবাবুরা রাজনীতি করতে এসেছেন।’’