দার্জিলিংয়ের রাস্তা। —ফাইল চিত্র।
দোকান থেকে গ্যারাজ মালিকদের একটা বড় অংশ জমি দখল করে ব্যবসা করায়, দার্জিলিং শহরে সরু রাস্তা আরও সংকীর্ণ হয়ে পড়ছে বলে অভিযোগ উঠল। শৈলশহরকে যানজট-মুক্ত করে যান নিয়ন্ত্রণে পুলিশ প্রশাসনকে প্রস্তাব দিয়েছে পাহাড়ে পরিবহণের যৌথ মঞ্চ ‘হিমালয়ান ট্রান্সপোর্ট কো-অর্ডিনেশন কমিটি’। নতুন বছরের ৪ জানুয়ারি দার্জিলিং পুলিশকে ওই প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। পুলিশ, জিটিএ এবং প্রশাসন মিলে বৈঠক ডেকে সমস্যা মেটানোর প্রক্রিয়া শুরু করতে চাইছে। তার আগে, পরিবহণের যৌথ মঞ্চ সমীক্ষা চালিয়ে ১৯ দফার প্রস্তাব পুলিশ প্রশাসনকে দিয়েছে।
এর সঙ্গে রেললাইন, বিদ্যুতের স্তম্ভ কিছুটা সরাতে পারলে দার্জিলিঙের রাস্তা কিছুটা চওড়া করা যাবে বলে পরিবহণ ব্যবসায়ীদের দাবি। ভরা পর্যটনের মরসুম শুরু হতেই জোড়বাংলো, ঘুম থেকে দার্জিলিং পৌঁছতে কোনও কোনও দিন গাড়ির লাইনে এক থেকে দেড় ঘণ্টা লেগে যায় বলে অভিযোগ। এতে শৈলশহরকে নিয়মিত যানজটে জেরবার হতে হচ্ছে। পর্যটকদের ভোগান্তি তো বটেই, সাধারণ পাহাড়ি বাসিন্দাদের হেনস্থা হতে হচ্ছে বলে অভিযোগ। বিষয়টি শুনেছেন ‘গোর্খাল্যান্ড টেরিটোরিয়াল অ্যাডমিনিস্ট্রেশন’ (জিটিএ)-এর প্রধান অনীত থাপাও। তিনি বলেছেন, ‘‘দার্জিলিঙের যানজট নিয়ে সমস্যা বাড়ছে। পুলিশের সঙ্গে কথা বলে বৈঠকে করে সমাধানের রাস্তা ধীরে ধীরে বার করতে হবে।’’ তিনি জানান, দার্জিলিঙে যাতায়াতের বিকল্প রাস্তাও তৈরির সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
পরিবহণ সংগঠনগুলি জানিয়েছে, পরিবহণ সংগঠন, রাজনৈতিক দল, স্বেচ্ছাসেবী ও সামাজিক সংগঠন, স্কুল, কলেজ এবং পুলিশের ট্র্যাফিক শাখাকে নিয়ে একটি পরামর্শদাতা কমিটি গঠন করা প্রয়োজন। এই কমিটির একটি ‘হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ’ থাকলে সেখানে বিভিন্ন ভাবে সমস্যা, পরামর্শ উঠে আসতে পারবে। শৈলশহরের যেখানে সেখানে নয়, সুষ্ঠু ভাবে গাড়ি দাঁড় করানোর জায়গা চিহ্নিতকরণ প্রয়োজন, যা পাহাড়ে কোথাও নেই। পাহাড়ের বিভিন্ন গাড়ি সিন্ডিকেট বা স্ট্যান্ডের ছোট ছোট পার্কিং রয়েছে। সেখানে স্ট্যান্ডগুলির গাড়ি নিয়ম মেনে রাখার বন্দোবস্ত করা দরকার। যে সিন্ডিকেটের গাড়ি সেখানেই পার্ক করে সেখান থেকে আসা-যাওয়া করবে।
পাহাড়ের গাড়িচালকেরা জানান, দার্জিলিঙের বেশিরভাগ হোটেলের নিজস্ব পার্কিং এলাকা নেই। রাস্তার তারা গাড়ি দাঁড় করিয়ে রাখে। হোটেলের সামনে রাস্তার কিছুটা অংশ দখল করা হয়। এটা বন্ধ করা দরকার। প্রশাসনকে ‘পিক-আপ অ্যান্ড ড্রপ’ নিয়েও কড়াকড়ি করতে হবে। সে ‘অজুহাতে’ দিনভর বা রাতে হোটেলের সামনে রাস্তা দখল করে রাখা হয়। এ ছাড়া, পাহাড়ের জাতীয় সড়ক থেকে শহরের ঢোকার মুখে বহু বাসিন্দা নিজেদের গাড়ি রাখার জন্য বাড়ির সামনে কংক্রিট দিয়ে র্যাম্প তৈরি করেন। তাতে রাস্তার অংশ দখল হয়। যাতায়াতের সমস্যা তৈরি হয়। সেগুলিও ভেঙে দেওয়ার প্রস্তাব রাখা হয়েছে।