বিপণন: আনাজের বাজারে। মঙ্গলবার কোচবিহারে। নিজস্ব চিত্র
পুজোর প্রসাদে ফলমূল তো থাকবেই। আর পুজোর পর দুপুরে খিচুড়ির সঙ্গে একটু তরকারি তো থাকতেই হবে! কিন্তু সরস্বতী পুজো ঘিরে বাঙালির এই যে অনন্য রসনা বিলাস, সেটা পূরণ করতে গিয়ে নাভিশ্বাস উঠছে। বাজারে আনাজের দামে যে ভাবে আগুন লেগেছে তাতে কপালে ভাঁজ পড়েছে উদ্যোক্তা থেকে শুরু করে গৃহস্থদেরও।
কোচবিহার, আলিপুরদুয়ার বা জলপাইগুড়ি সব জায়গায় একই ছবি। পুজোর সামগ্রী কেনার পরে হাতে কত পড়ে থাকল, সেই হিসেব করে বাজারের পথে পা বাড়াচ্ছেন সকলে। সরস্বতী পুজোর আগের দিন, মঙ্গলবার সকাল থেকেই ভিড়ে ঠাসাঠাসি আলিপুর প্রধান বাজার থেকে ভবানীগঞ্জ, দিনহাটার চওড়াহাট বাজার। একটু কমবেশি করে দুই বাজারেই আপেল প্রতি কেজি ১২০ থেকে ১৫০ টাকা, বেদানা ১৩০ থেকে ১৫০ টাকা, আঙুর ১৭০ থেকে ১৯০ টাকা। নারকেল কুল বিক্রি হয়েছে প্রতি কেজি ৪০ টাকা , মিষ্টি আলু প্রতি কেজি ৪০ টাকায়।
এখনও ঠান্ডা থাকায় পলাশ ফুলের অভাব। এ দিন পলাশ ফুলের দাম ছিল অনেকটাই। ছোট্ট একটি ফুলের ডাঁটা বিক্রি হয়েছে ২০ থেকে ২৫ টাকায়। দিনহাটার চওড়াহাট বাজারে দাঁড়িয়ে প্রাথমিক শিক্ষক হীরালাল দাস বলেন, ‘‘গত বছরের তুলনায় দাম এবার অনেক বেশি। তাই পুজোর খরচ কিছুটা হলেও কাটছাঁট করতে হয়েছে আমাদের।”
জলপাইগুড়ি শহরের বাজারে আনাজের দাম ছিল যথেষ্ট চড়া। শহরের দিনবাজার, স্টেশন বাজার, বয়েলখানা বাজার, বউবাজার-সহ সর্বত্রই চড়া দাম। এ দিন ক্রেতা স্বাতী মজুমদার বলেন, ‘‘আনাজের দাম লাগাম ছাড়া। ফলের বাজারও যথেষ্ট চড়া। যতটা সম্ভব কমই কিনছি।’’
কেমন দাম ছিল জলপাইগুড়িতে? দিনবাজারে লাল আলু কিলো প্রতি ২০-২৫ টাকা দামে বিক্রি হয়েছে। সাদা আলুর দাম ১৭-২০ টাকা। বেগুন কেজি প্রতি ৫০-৬০ টাকা। ফুল কপি কেজি প্রতি ২০-৩০ টাকা। বাঁধাকপি কিলো প্রতি ১৭-২০ টাকা। মিষ্টি কুমড়ো ৪০ টাকা,টমেটো ৪০-৫০ টাকা কেজি প্রতি দরে বিক্রি হয়েছে।
জলপাইগুড়ি সদর মহকুমাশাসক রঞ্জনকুমার দাস বলেন, ‘‘দাম নিয়ন্ত্রণের জন্য দায়িত্বপ্রাপ্ত দফতরের নজরদারি রয়েছে। জলপাইগুড়ি শহরে সরকারি বিক্রয় কেন্দ্রেও আনাজ বিক্রি করা হচ্ছে।” আলিপুরদুয়ারের গৃহবধূ সঙ্গীতা সরকার বলেন, “প্রতিবছরই পুজোর সময়ে বাজারে আগুন লাগে। এই অবস্থা চললে আগামীদিনে পুজোর খরচ কিভাবে জোগাড় হবে, ভাবছি।”