—প্রতীকী ছবি
স্বাস্থ্য ভবনের নির্দেশ সত্ত্বেও জলপাইগুড়ি জেলা সদর হাসপাতাল এবং সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে ৯ জন চিকিৎসক কাজে যোগ দেননি। এই পরিস্থতিতে তাঁদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নিতে চলেছে স্বাস্থ্য দফতর।
দফতর সূত্রের খবর, কাজে যোগ না দেওয়া এই ৯ চিকিৎসকের বিরুদ্ধে পুলিশের কাছে অভিযোগ জানাবে স্বাস্থ্য দফতর। সম্প্রতি জেলা সদর হাসপাতালের এক অ্যানাস্থেসিস্ট হাসপাতালের ডিউটি ছেড়ে প্রাইভেট প্র্যাকটিস করতে গিয়েছিলেন। ওই চিকিৎসকের বিরুদ্ধে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ পুলিশের কাছে অভিযোগ দায়ের করেন। পরে ওই চিকিৎসক কাজে যোগ দেন বলে দাবি কর্তৃপক্ষের। হাসপাতাল সুপার গয়ারাম নস্কর বলেন, ‘‘কাজে যোগ না দেওয়া ৯ চিকিৎসকের বিরুদ্ধেও পুলিশের কাছে অভিযোগ জানাবে স্বাস্থ্য দফতর। প্রয়োজনে ওই চিকিৎসকদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থাও নেওয়া হবে। হাসপাতালের কর্তব্যে গাফিলতি কোনও ভাবেই বরদাস্ত করা হবে না।’’ তিনি বলেন, ‘‘কাজে যোগ না দেওয়া চিকিৎসকদের তালিকা স্বাস্থ্য ভবনে পাঠানো হয়েছে।’’
দফতর সূত্রের খবর, প্রয়োজনীয় স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক নেই জেলা সদর হাসপাতালে। তিনজন স্থায়ী চিকিৎসক ও একজন চুক্তিভিত্তিক চিকিৎসক দিয়েই কাজ চলছে। এই হাসপাতালে প্রতিদিন গড়ে প্রায় ২০ জন মহিলার সন্তান প্রসব করানো হয়। এছাড়া, স্ত্রীরোগে আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসার কাজও চলে। ময়নাগুড়ি, ধূপগুড়ি, মালবাজার, নাগরাকাটা, মেটেলি, রাজগঞ্জ ছাড়াও কোচবিহার জেলার মেখলিগঞ্জ, হলদিবাড়ি বিভিন্ন এলাকা থেকেও এই হাসপাতালে অন্তঃসত্ত্বাদের পাঠানো হয়। ফলে হাসপাতালে রোগী ভিড় লেগেই থাকে বলে জানান চিকিৎসকেরা। কর্তব্যরত চিকিৎসকদের মধ্যে কেউ অসুস্থ হয়ে পড়লে বা জরুরি প্রয়োজনে ছুটি নিলে হাসপাতালের পরিষেবার কাজ ব্যাহত হয় বলে জানান চিকিৎসকেরাই।
সূত্রের খবর, চুক্তিভিত্তিক ৩০ লক্ষ টাকা বন্ডে ৩ জন স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক এই হাসপাতালে সম্প্রতি নিয়োগ করা হয়। কিন্তু একজনও কাজে যোগ দেননি বলে দাবি স্বাস্থ্যকর্তাদের। দ্রুত নিয়োগ না হলে স্ত্রীরোগ বিভাগে পরিষেবা চালানো আগামী দিনে খুবই কঠিন হয়ে পড়বে বলে মনে করছেন স্বাস্থ্যকর্তারা। শুধু স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞ তিন চিকিৎসকই নয়, ২ জন জেনারেল ফিজিসিয়ান, ৩ জন রেডিয়োলজিস্ট এবং একজন চর্মরোগ বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক বন্ডে নিয়োগ করা হয়। কিন্তু তাঁরাও কাজে যোগ দেননি বলে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন।
সূত্রের খবর, জেলায় এখন মাত্র একজন রেডিয়োলজিস্ট রয়েছেন। জেলা সদর হাসপাতালের একজন রেডিয়োলজিস্টকে দিয়েই জেলা সদর এবং সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে কাজ করানো হচ্ছে। জেলা সদর হাসপাতালে চর্মরোগ বিশেষজ্ঞও রয়েছেন মাত্র একজন। এখানেও হিমশিম খেতে হচ্ছে কর্তৃপক্ষকে।